রাজধানীর হাজারীবাগে প্রেমিকাকে উত্ত্যক্তকারীদের হাত থেকে রক্ষা করতে গিয়ে কলেজছাত্র আরিফুল ইসলাম সজল হত্যাকাণ্ডে ১০ বখাটেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে উত্ত্যক্তকারী রয়েছে দু'জন। গত শুক্রবার তাদের গ্রেপ্তারের পর গতকাল শনিবার আদালতের মাধ্যমে দু'দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে প্রত্যেককে। সজল মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। গত বুধবার রাতে হাজারীবাগ ষড়কুঞ্জ নতুন ব্রিজ এলাকায় প্রেমিকার সামনেই তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছিল বখাটেরা।
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ১০ জন হলো মিরাজ, নয়ন, পারভেজ, সজীব শরীফ, বেল্লাল হোসেন শুভ, ইমন, রবিউল, সাগর, মহিউদ্দিন বাবু ও রবিউল আউয়াল। তাদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২২ বছরের মধ্যে। পুলিশ ও স্বজনরা জানিয়েছেন, বুধবার রাত ৮টার দিকে ষড়কুঞ্জ নতুন ব্রিজে কলেজপড়ূয়া প্রেমিকাকে নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন সজল। ওই সময় স্থানীয় বখাটে বেল্লাল হোসেন শুভ, ইমন ও কাইয়ুম নামে তিনজন তরুণীকে উত্ত্যক্ত করে অশ্নীল ভাষায়। এ নিয়ে তর্কাতর্কি হলে সজল চড় মারেন কাইয়ুমকে। তখন অপর দু'জন ফোনে তাদের বন্ধুদের ঘটনাস্থলে ডেকে হামলা চালায় সজলের ওপর। ঘটনাস্থলেই তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে ফেলে রাখে তারা। উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সজলকে রক্ষা করতে গিয়ে তার প্রেমিকাও আহত হন।
হাজারীবাগ থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া জানিয়েছেন, ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সজলের বাবা শহিদুল ইসলাম চুন্নু বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন। তাদের মধ্য থেকে মূল হোতা দু'জনসহ মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, মেয়েটিকে তারা উত্ত্যক্ত করেছিল। এতে সজল বাধা দেওয়ায় তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
ওসি জানান, হত্যাকাণ্ডে কার কী ভূমিকা তা জানতে ১০ জনকেই রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এখনও মামলার এজাহারভুক্ত আসামি কাইয়ুম, রাকিব, রাহিম, রিপন, জুয়েল, পলাশ, মুন্না, সবুজ ও সুজন নামের ৯ জন পলাতক। তাদের মধ্যে কাইয়ুম প্রধান আসামি। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পুলিশের রমনা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় আতঙ্কেও অনেকে দৌড়াদৌড়ি করেছে। কেউ ঘটনা শুনে সেখানে গেছে। ওই সময়ে স্থানীয়দের শনাক্তমতে নিহতের বাবা মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করেছেন। সবাইকে গ্রেপ্তার করা গেলে হত্যায় তাদের সবার ভূমিকা ছিল কি-না বা এর বাইরে কেউ রয়েছে কি-না, তা জানা যাবে।