হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

সামনেই জাতীয় নির্বাচন। ইহার আগেই সকল পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করিবার জোরালো তাগিদ রহিয়াছে। সেই অনুযায়ী মেডিক্যাল, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি এবং কৃষিসহ সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করিবার ব্যাপক তোড়জোড় চলিলেও দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ২০১৯ সালের লেভেল-১, সেমিস্টার-১-এর ভর্তি পরীক্ষা এবং শিক্ষক ও কর্মকর্তা নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হইয়া গিয়াছে অনির্দিষ্টকালের জন্য। শুধু তাহাই নহে, বিশ্ববিদ্যালয়ও বন্ধ ঘোষণা করা হইয়াছে এক মাসের জন্য। অর্থাত্ প্রায় মাসব্যাপী চলা শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরস্পরবিরোধী অবস্থান ও পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলনকে কেন্দ্র করিয়া সৃষ্ট অস্থিরতার খেসারত দিতে হইল শেষপর্যন্ত নিরপরাধ শিক্ষার্থীদেরই। আকস্মিকভাবে পরীক্ষা স্থগিত এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হইয়া যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা কতখানি বিপাকে পড়িয়াছেন— তাহা ভুক্তভোগী না হইলে বোঝা কঠিন। সেই সঙ্গে যুক্ত হইয়াছে সেশনজটের আশঙ্কাও। সংগতকারণেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করিয়াছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনেকেই। প্রশ্ন উঠিয়াছে যে, ছাত্র-ছাত্রীদের কেন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘রাজনীতি’ বা দলাদলির বলি হইতে হইবে?

বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বৃহত্ একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নানা ধরনের সমস্যা হইতেই পারে। তদুপরি শিক্ষক হইতে শুরু করিয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে মতাদর্শগত বা স্বার্থগত দলাদলি, কোন্দল এবং পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলনও নূতন কোনো বিষয় নহে। বস্তুত এই ধরনের প্রত্যাশিত বা অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি সামাল দিয়া শিক্ষার কার্যক্রমকে নির্বিঘ্ন রাখিবার জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বায়ত্তশাসিত শক্তিশালী একটি প্রশাসন রহিয়াছে। অতএব, হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে কী হইতেছে, কেন হইতেছে— তাহা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের না জানিবার কথা নহে। আর অস্থিরতার কারণ হিসাবে সংবাদপত্রে যেই কয়টি ঘটনার উল্লেখ করা হইয়াছে— সেইগুলিকেও একেবারে আকস্মিক বলা যাইবে না। যেইভাবেই দেখা হউক না কেন ঘটনাগুলির দায় ও সমাধানের দায়িত্ব যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উপরই বর্তায়— তাহা অস্বীকার করা যাইবে না। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, সুনির্দিষ্ট কিছু দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করিয়া ২১তম দিনেও অবস্থান ধর্মঘট পালন করিতেছেন শিক্ষকদের একটি অংশ। ঘটনার কারণ যাহাই হউক না কেন, টানা তিন সপ্তাহ ধরিয়া শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হইতে পারে না। আমরা আশা করিব, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সহিত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে অতি দ্রুত এই অচলাবস্থার অবসানকল্পে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করিবেন। নিশ্চিত করিবেন শিক্ষার যথোপযুক্ত পরিবেশ।

দৈনিক  ইত্তেফাকের সম্পাদকীয়। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ - dainik shiksha আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.005018949508667