অপুত্রক বাবার সম্পত্তি পাবে হিন্দু মেয়েরা : ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়

নিজস্ব প্রতিবেদক |

মৃত্যুর আগে কোনো উইল বা ইচ্ছাপত্র রেখে না গেলেও বাবার মৃত্যুর পর তার সম্পত্তির ওপর পূর্ণ অধিকার পাবে ভারতের হিন্দু মেয়েরা। এক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির ভাতিজাদের চেয়ে মেয়েদের অধিকার অগ্রগণ্য হবে। গত বৃহস্পতিবার ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এ সংক্রান্ত রায় ঘোষণা করেছে।

রায়ে বলা হয়েছে, হিন্দু মেয়েরা বাবার নিজের অর্জিত এবং অন্যান্য সম্পত্তির অধিকারী হবে। হিন্দু নারী ও বিধবাদের সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে মাদ্রাজ হাইকোর্টের এক রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের নিষ্পত্তি করে দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি এস আবদুল নাজির এবং বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারীর বেঞ্চ এ রায় দেয়। হিন্দু বিধবা ও মেয়েদের উত্তরাধিকার পুরনো হিন্দু রীতির পাশাপাশি বহু আইনেও সুরক্ষিত আছে বলেও ৫১ পৃষ্ঠার ওই রায়ে উল্লেখ করে আদালত।

আদালত জানায়, উইল করার আগে মৃত্যু হলে বাবার সম্পত্তির ওপর পরিবারের অন্য সদস্যদের তুলনায় মেয়েদের বেশি অধিকার হবে। উইল করার আগে কোনো হিন্দু পুরুষ যদি মারা যায়, তাহলে তার সম্পত্তি সব উত্তরাধিকারীর মধ্যে বণ্টন করা হবে। তবে মৃত হিন্দু ব্যক্তির মেয়ে তার অন্যান্য আত্মীয়র তুলনায় সম্পত্তির উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে বেশি প্রাধান্য পাবে। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট আরও জানায়, যৌথ পরিবারে বসবাস করলেও যদি কোনো হিন্দু ব্যক্তি কোনো ধরনের উইল বা ইচ্ছাপত্র না করেই মারা যান, তবে তার অর্জিত এবং অন্যান্য (উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি) সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে মেয়েরাই পাবে।

২০২০ সালের আগস্টে সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে বলেছিল যে; বাবা, দাদা ও পরদাদার সম্পত্তির ওপর তার ছেলে সন্তানদের মতোই মেয়েদেরও অধিকার আছে। হিন্দু উত্তরাধিকার সংশোধন আইন চালু  হয়েছিল ২০০৫ সালে। হিন্দু পারিবারিক সম্পত্তির ক্ষেত্রে মেয়েরাও যে ছেলেদের সঙ্গে সমানাধিকার পাবে তা নিশ্চিত করা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, বাবার মৃত্যুর পর ছেলেদের মতো মেয়েরাও পারিবারিক সম্পত্তির সমান অধিকার পাবে। প্রশ্নটা উঠেছিল ২০০৫ সালের আগে বাবার মৃত্যু হলে কী হবে? তখনও কি মেয়েরা এই অধিকার পাবে?

বিচারপতি অরুণ মিশ্র, এস নাজির এবং এম আর শাহকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চের রায় জানিয়েছিল, ১৯৫৬ সালে হিন্দু উত্তরাধিকার আইন চালু হয়েছে। তখন থেকেই মেয়েরা সম্পত্তির সমান অধিকার পাবে। ফলে ২০০৫ সালের সংশোধনে মেয়েরা এই অধিকার পেয়েছে ঠিকই, কিন্তু তা চালু হয়ে যাচ্ছে ১৯৫৬ সাল থেকেই। রায়ে বলা হয়েছে, মেয়েদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। হিন্দু মেয়েরা এই অধিকার পায় জন্মসূত্রে। তাই তার বাবার মৃত্যু ২০০৫ সালের আগে না পরে হয়েছে, এই প্রশ্ন অর্থহীন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002418041229248