দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ তহবিলে ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমা দিতে ফের কড়া তাগাদা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। এ নিয়ে অন্তত তিনবার তাগাদা দিলো অধিদপ্তরটি। সর্বশেষ গত বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর নির্দেশনা জারি করেছে।
এই চিঠিতে এবার চার কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে।
এর আগে, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষকদের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ তহবিলে ঘাটতি মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে এই কার্যক্রম শুরু হয়। সর্বশেষ চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার নির্দেশনা দেয়া হয়। তাতে বলা হয় অধিদপ্তর থেকে পাঠানো ব্যাংক হিসাব নম্বরে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই সংগৃহীত টাকা জামা দেবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর সুফল মেলেনি।
জানা গেছে, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ভর্তি নীতিমালা’র উপানুচ্ছেদ ১০ ও ৬-এ বলা হয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিলের জন্য ভর্তিকালীন শিক্ষার্থী প্রতি ১’শ টাকা গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট হিসাবখাতে জমা দিতে হবে। এখানে ৭০ টাকা অবসর এবং ৩০ টাকা কল্যাণ তহবিলের হিসাবখাতে জমা দিতে হবে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ ডিসেম্বর দু’টি আলাদা চিঠির মাধ্যমে নতুন ভর্তি করা শিক্ষার্থীদের দেয়া ১’শ টাকা পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ও নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আলাদা তহবিলে রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়।
পরবর্তীতে আবারো ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর ও চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি আরো দুই চিঠির মাধ্যমে মাউশি অধিদপ্তর থেকে পাঠানো নির্ধারিত ব্যাংক হিসাব নম্বরে টাকা জমা দিয়ে সেই তথ্য সংশ্লিষ্ট জেলা শিক্ষা অফিসারদের অধিদপ্তরে পাঠাতে বলা হয়। তবে কিছু জেলা ছাড়া অধিকাংশ জেলা থেকে তথ্য এখনো জমা হয়নি।
তাই মাউশি অধিদপ্তর বলছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভর্তি নীতিমালার আলোকে নতুন ভর্তি করা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সংগৃহীত টাকা উল্লেখিত হিসাব নম্বরে জমা দিয়ে সেই সম্পর্কিত তথ্য ৪ কর্মদিবসের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা পাঠাতে হবে। এ বিষয়টি অতিব জরুরি বলেও উল্লেখ করেছে অধিদপ্তর।
জানা গেছে, অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট বাবদ ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অনার্সে ভর্তি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বছরে ২২০ কোটি টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করা হয়েছিলো। কিন্তু শুধু ষষ্ঠ শ্রেণি ও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ১৩ কোটি। অন্যান্য শ্রেণি থেকে টাকা আদায় শুরুই করা যায়নি। সব শ্রেণি থেকে টাকা আদায় করা হলেও পৌনে দু’শ কোটি টাকার বেশি উঠবে না। ফলে কেবল অবসর সুবিধাখাতেই ঘাটতি থাকবে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা।
এদিকে এমপিও থেকে প্রতি মাসে কেটে নেয়া ১০ শতাংশ টাকা ও সে টাকার হিসাব না পেয়েও অসন্তুষ্ট শিক্ষকরা।
প্রসঙ্গত, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে একাদশে ভর্তির সময় থেকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিক্ষকদের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য ১০০ টাকা করে তোলা শুরু হয়। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে স্কুলে ভর্তির সময়ও তোলা হয়েছে ১০০ টাকা করে।