অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্ট অভিভাবকশূন্য

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড এবং বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টে' এখন অভিভাবকশূন্য। এ দুই প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী প্রধান 'সদস্য সচিব'-এর মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ১৩ জানুয়ারি। বিধান অনুসারে এ দুটি পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়ার কোনো সুযোগ না থাকায় কার্যত প্রতিষ্ঠান দুটির কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। পদাধিকারবলে  এই দুই প্রতিষ্ঠানের প্রধান থাকেন শিক্ষাসচিব ও দ্বিতীয় প্রধান থাকেন বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্য থেকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। কমিটির অন্য সদস্যরাও বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও মাদাসার শিক্ষক। 

সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন অবসরের পর শেষ বয়সে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন থাকা শিক্ষক-কর্মচারীরা। 

সারাদেশের বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা থেকে অবসর গ্রহণকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের 'অবসর' এবং 'কল্যাণ ট্রাস্ট'-এর ভাতা প্রদানকারী হচ্ছে  এ দুই প্রতিষ্ঠান। দ্রুত সদস্য সচিব নিয়োগ করা না হলে অন্তত ২৫ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর ভাতা পেতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অভিযোগ, এমনিতেই প্রতিষ্ঠান দুটিতে অর্থ সংকটের কারণে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয় অবসর ও কল্যাণ ভাতা পেতে। এর পর দায়িত্বশীল প্রধান কর্মকর্তার পদ শূন্য থাকলে আরও বেশি ভোগান্তি হবে। 

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড-এর সদ্য বিদায়ী সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী বলেন, বিদ্যমান আইনে সদস্য-সচিবকে চলতি দায়িত্ব বা ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়া হয় না। সে জন্য নতুন সদস্য সচিব নিয়োগের পূর্ব পর্যন্ত কোনো আবেদন নিষ্পত্তি করার সুযোগ নেই। পুরনো যেগুলো নিষ্পত্তি হয়েছে, সেগুলোর চেক বিতরণসহ রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন অন্য কর্মকর্তারা। প্রায় ১৩ হাজার আবেদন নিষ্পত্তি বাকি।’ 

কল্যাণ ট্রাস্ট-এর সদ্য বিদায়ী সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু জানান, ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের জুন পর্যন্ত আবেদনকারীদের পাওনা অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে। এখনও প্রায় ১০ হাজার আবেদন জমা পড়ে আছে, যেগুলো ধারাবাহিকভাবে পরিশোধ করা হবে।

 

পুরনো বেতন স্কেল অনুসারে অবসরপ্রাপ্ত কেউ কেউ অর্ধেক টাকা পেয়েছেন। নতুন স্কেল অনুসারে বাকি টাকাটুকুও তারা পাবেন। সে হিসাবে মোট অনিষ্পন্ন আবেদন ১৫ হাজারের মতো হবে এখনও। এসব আবেদন নিষ্পত্তি করতে প্রয়োজন প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। 

জানা গেছে, এ দুই প্রতিষ্ঠানে অর্থের অভাব ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অবসরে যাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবনের শেষ প্রাপ্তির এই অর্থ ভোগ করার ভাগ্য হয় না। অবসর গ্রহণের পর কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর বোর্ডের টাকা পেতে সময় লেগে যায় ৩ থেকে ৪ বছর। এ সময়ে অনেক শিক্ষক চলে যান না ফেরার দেশে। সুচিকিৎসার অভাবে কারও আবার পঙ্গুত্বও বরণ করতে হয়। 

অবসর বোর্ডে প্রতি মাসে সারাদেশের বেসরকারি শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হয় ৪ শতাংশ অর্থ। তা থেকে প্রতি মাসে প্রায় ৩৫  কোটি টাকার জোগান হয়। অথচ প্রতি মাসে যত শিক্ষক অবসরে যান, তাদের প্রাপ্য চাহিদার  অর্থ মেটাতে গেলে প্রতি মাসে প্রয়োজন ৭০ কোটি টাকা। ফলে প্রতি মাসেই ঘাটতি থাকে ৩৫  কোটি টাকা। 

অপরদিকে কল্যাণ ট্রাস্টে প্রতি মাসে চাহিদা ৩০ কোটি টাকা। আর শিক্ষকদের বেতন থেকে কেটে নেওয়া অর্থ থেকে আসে মাত্র ১৭ কোটি টাকা। ফলে কল্যাণ ট্রাস্টেও প্রতি মাসে ঘাটতি হচ্ছে ১৩ কোটি টাকা। মূলত এই ঘাটতির কারণেই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের টাকা পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে থাকতে হয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031459331512451