আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামীণ কৃষি যন্ত্রপাতি

রহিমা আক্তার |

বর্তমান ডিজিটাল সভ্যতার যুগে উন্নয়নের ছোঁয়া দিতে আবিষ্কৃত হয়েছে নামিদামি হাল চাষের যান্ত্রিক লোহার লাঙ্গল ও ট্রাক্টর। হালচাষ, বীজ বপন-রোপন, ঝারাই-মাড়াই করার যন্ত্র। ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে কাঠের লাঙ্গল, বাঁশের মই ও জোয়াল।

এক সময় কৃষিকাজে এক টুকরো লোহার ফাল আর কাঠমিস্ত্রির হাতে তৈরি কাঠের লাঙ্গল, বাঁশের জোয়াল, মই ও শক্ত দড়ি দিয়ে বেঁধে গরু, ঘোড়া, মহিষ দিয়ে জমি চাষ করতেন গ্রামের কৃষকরা। কৃষিকাজে ব্যবহৃত এসময় স্বল্পমূল্যের কৃষি উপকরণ ও গরু দিয়ে হাল চাষ করে যুগের পর যুগ মানুষ ফসল উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এতে করে একদিকে পরিবেশ রক্ষা অন্যদিকে কৃষকের অর্থ ব্যয় কম হতো। গরুর বর্জ্য পদার্থ জমিতে প্রাকৃতিক সার হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এতে করে জমির উর্বরা শক্তি ও ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পেত।

কয়েকবছর আগেও নোয়াখালির বিভিন্ন উপজেলায় গ্রামের জমিতে গরুর হালে লাঙ্গল জোয়াল আর মই ব্যবহার হতে দেখা যেত। চাষীরা অনেক সময় নিজের জমির হালচাষ শেষে অন্যের জমি চাষ করে কিছু অর্থ উপার্জন করতেন। কিন্তু এখন সমস্ত এলাকা ঘুরে এমন হাতে গোনা কয়েকজন কৃষক পাওয়া যেতে পারে যারা এখনো সেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে চাষাবাদ করেন।

সময়ের আবর্তে এসব গরুর হাল, কৃষি উপকরণ, কাঠের লাঙ্গল, বাঁশের মুই জোয়াল, গরু মহিষ হারিয়ে যেতে বসেছে। উপজেলার বেশ কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে বিলুপ্তির কারণ জানতে চাইলে তারা জানান বর্তমান যুগে হাল চাষের জন্য লোহার লাঙ্গল, ট্রাক্টর, বীজ বপন, ফসল কাটা, ধান মাড়াই, ঝারাই সব কিছুই আধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারা হচ্ছে। যার ফলে কাঠের লাঙ্গল, বাঁশের মই, জোয়াল, গরু মহিষ, ঘোড়া হারিয়ে যেতে বসেছে। আর এ সমস্ত যন্ত্র চালাতে ২/১ জন লোকের প্রয়োজন। ফলে বিত্তবান কৃষকরা ওই আধুনিক যন্ত্রপাতি কিনে দিন মজুরের ভূমিকায় কাজ করলেও গ্রামের অধিকাংশ মধ্যবিত্ত ও নিবিত্ত দিনমুজরের জীবন থেকে এ সমস্ত স্মরণীয় দিন চিরতরে হারিয়ে যাচ্ছে।

লেখক : রহিমা আক্তার, শিক্ষার্থী, পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ, নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন।]


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051250457763672