এইচএসসি পরীক্ষার বিষয় কমানোর চিন্তাভাবনা চলছে : শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার বিষয়সংখ্যা কমানো এবং কম সময়ে নেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। এ কথা  বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, কত কম সময়ে এবং কম সংখ্যক বিষয় নিয়ে পরীক্ষাটি নেয়া যায় কি না, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। এই বিষয়টি ছাড়াও করোনাকালের সঙ্কটময় এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের বেতনে যতটা সম্ভব ছাড় দিতে স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষকেও অনুরোধ করেছেন তিনি। আজ  শনিবার (২৭ জুন) এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। 

তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে চলতি শিক্ষাবর্ষ আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত বাড়তে পারে। পাশাপাশি শ্রেণিঘণ্টার সঙ্গে সমন্বয় করে কমানো হতে পারে মাধ্যমিক স্তরের বিভিন্ন শ্রেণির সিলেবাস। এমন পদক্ষেপের কারণে আগামী বছরে ঐচ্ছিক ছুটি কমিয়ে আনা হতে পারে।

তিনি জানান, যেসব পরীক্ষা এখনও অনুষ্ঠিত হয়নি সেগুলোর সংখ্যা কমিয়ে আনা যায় কি না তাও ভাবছি। তবে সিলেবাস কামানোর ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর বয়স ও শ্রেণি অনুযায়ী জ্ঞানার্জন ও দক্ষতা অর্জনের ব্যাপারে কোনো আপোষ করা হবে না।’

 

মন্ত্রী আরো বলেন, শিক্ষা পরিস্থিতি অনুকূলে আসার ১৫ দিন পর এই পরীক্ষা নেয়া হবে। এই ১৫ দিন শিক্ষার্থীদের নোটিশ দিতে হবে। তাদের প্রস্তুতি ঝালিয়ে নিতে সময় দিতে হবে।

এছাড়া,করোনার এই সংকটময় পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের বেতনে যতটা সম্ভব ছাড় দিতে স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষকেও অনুরোধ করেছেন তিনি।

দীপু মনি বলেন, “বড় একটা সমস্যা হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফি দেয়া নিয়ে। ফি না পেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের শিক্ষকদের কি করে বেতন দেবে? আর শিক্ষকরা তো অধিকাংশই বেতনের উপর নির্ভরশীল। কেউ কেউ টিউশনি করাতেন, এখন তো সব বন্ধ।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, “সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা এক রকম নয়। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিজেদের কিছুটা হলেও আগামী ক’মাস চলার মতো, কোনোভাবে চলার মতো সামর্থ্য আছে তাদেরকে অনুরোধ করব ফি কিস্তিতে হোক বা কিছুদিন বাদ দিয়ে পরে নেয়া হোক, সেটি করতে পারেন ভালো। না হলেও দেখেন কতটা ছাড় দেয়া যায়, সেটা চেষ্টা করবেন।”

দীপু মনি বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা খারাপ, তারা অন্যান্য ঋণের জন্য চেষ্টা করতে পারেন। সে ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা থাকতে পারে। 

শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো পৃথিবীর টালমাটাল আর্থিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ্ই বিরূপ পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অভিভাবক, দুই পক্ষকেই কিছুটা ছাড় দিতে হবে। বিষয়টি ব্যাখ্যায় অভিভাবকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, কিছু বেতনতো দিতেই হবে। কারণ বর্তমানে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীর বেতন তো পুরোপুরি বন্ধ রাখা যায় না।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “যেমন আপনি হয়ত কাজে যেতে পারছেন না, কাজ বন্ধ আছে, কিন্তু আপনি কি তার জন্যে বেতন চাইবেন না? সরকারি হলে তো পুরো বেতনই পাচ্ছেন, সরকারি না হলে হয়ত বেতন কম দিচ্ছে, এখানেও আপনার সন্তানের ফি যদি সামর্থ্য থাকে তাহলে দেয়া উচিত।”

পাশাপাশি যেসব অভিভাবক এই সঙ্কটে আর্থিক সমস্যায় পড়ে সন্তানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন দিতে পারছেন না, তাদেরকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। 

দীপু মনি আরও বলেন “আর যদি আপনার সামর্থ্য না থাকে সেক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারাও যদি কিছুটা ছাড় দিতে পারে, কিছুটা কিস্তিতে নিতে পারে, যতদূর সম্ভব উভয় পক্ষকেই আসলে মানবিক আচরণ করতে হবে।এটি এমন একটি সময় যখন আমরা আমাদের প্রয়োজনের কথা ভাবব, তেমনি আমাদের কিন্তু টিকে থাকবার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। আমার যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ হয়ে যায় তাহলে এরপর আপনার সন্তানটিকে আপনি কোথায় ভর্তি করাবেন? সেটি সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের দুশ্চিন্তা নিশ্চয়ই।”

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখতে হবে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, “নিজেদেরও চলতে হবে। এর মধ্যে যতটা সম্ভব আমাদের উভয় পক্ষকে ছাড় দিয়ে এবং মানবিক আচরণ করে এই দুর্যোগের সময়টা আমাদের পার করতে হবে।”

কবে নাগাদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া সম্ভব হবে সে বিষয়ে এখনই কোনো ধারণা দিতে পারেননি শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “এই কোটি কোটি শিক্ষার্থী, কোটি কোটি পরিবার, তাদেরকে নিশ্চয়ই আমরা এই স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারি না। সেজন্য আমাদের শিক্ষাটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে সেটি ভাবতে হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার মতো কোনো অবস্থাই নেই। আমাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে হবে, তারপরে বুঝব যে কবে খোলা যাবে।”


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028290748596191