এমপিওভুক্তিতে কর্তৃত্ব চায় সংসদ সদস্যরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার বিষয়ে কর্তৃত্ব চায় সংসদ সদস্যরা। তারা অনলাইনে মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা তালিকার পাশাপাশি এমপিওভুক্তির জন্য সংসদ সদস্যদের কাছ থেকে তালিকা নেওয়ার দাবি জানান। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১১ জুন) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষামন্ত্রীকে এমপিওভুক্তি নিয়ে প্রশ্নবানে জর্জরিত করেন সংসদ সদস্যরা। এক পর্যায়ে সম্পূরক প্রশ্নের সুযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগের গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স বলেন, শুধু অনলাইনে তালিকা তৈরি করে এমপিওভুক্ত করলে চলবে না। কারণ আমরা অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। যে সকল প্রতিষ্ঠান শিক্ষা বিস্তারে ভূমিকা রাখছে। অনেক দুর্গম এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শর্ত পূরণ করতে পারেনি। তাই এমপিদের কাছ থেকে নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে হবে।

তার ওই বক্তব্যকে টেবিল চাপড়ে সমর্থন জানান সরকার ও বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা। জবাবে এ বিষয়ে সরকারের অবস্থানের কথা তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশ অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক এগিয়েছে। আর্থিক সামর্থ্য আগের তুলনায় অনেক বেশি। এ কারণে এবার অনেক বেশি সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আমরা এমপিওভুক্ত করতে পারবো। প্রত্যেক সংসদ সদস্যের এলাকার মধ্যে যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভালো পারফর্ম করছে সেগুলো অবশ্যই এমপিওভুক্তি হবে। 

ডা. দীপু মনি বলেন, আমরা অতীতে দেখেছি কোনো মানকে, যোগ্যতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। দলীয় বিবেচনাকে কীভাবে অপব্যবহার করে যোগ্যতাকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ন্যাক্কারজনক ভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে। সকল ক্ষেত্রে দলীয়করণকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার জনগণের অধিকারের বিষয়ে সচেতন। আমরা যোগ্যাতাকেই গুরুত্ব দিচ্ছি, যোগ্যতাকেই মাপকাঠি হিসেবে ধরছি। এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে যে নীতিমালা আছে, তার বাইরে গিয়ে কিছু করার সুযোগ নেই। নীতিমালার মধ্য থেকে আমরা সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করতে পারবো বলে আশা করছি। তবে দুর্গম অঞ্চল, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা ও নারী শিক্ষাসহ কিছু বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া অন্য কোনো ক্ষেত্রে শৈথিল্য দেখানোর সুযোগ এমপিও নীতিমালায় নেই। 

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সার্টিফিকেট বাণিজ্য : সরকারি দলের সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার নামে সার্টিফিকেট বাণিজ্য বন্ধ হয়েছে। যে সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রমাণিত হয়েছে সেগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়কে আদালতের আদেশ মোতাবেক বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ নিয়মিত তদারকি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

শিক্ষামন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করে শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়নসহ দেশকে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যেকটি প্রোগ্রামের জন্য মোট ক্রেডিট আওয়ারস ও সেমিস্টার পূর্ব থেকে নির্ধারণ করায় শিক্ষার নামে সার্টিফিকেট বাণিজ্য বন্ধ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কতিপয় অসাধু চক্রের যোগসাজসে পরিচালিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের আউটার ক্যাম্পাস বন্ধ করা হয়েছে এবং অননুমোদিত ক্যাম্পাসসমূহ বন্ধের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অননুমোদিত ক্যাম্পাসসমূহের বিষয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীসহ সর্বসাধারণের জ্ঞাতার্থে সময়ে সময়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়ে থাকে। স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়া পর্যন্ত ইউজিসি থেকে নতুন বিভাগ, প্রোগ্রাম ও অনুষদ অনুমোদন না দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0058369636535645