এমপিও শিক্ষকরাও চান বিশেষ প্রণোদনা

রুম্মান তূর্য |

সরকারি চাকরিজীবীদের পাঁচ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে আরো ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা ঘোষিত হয়েছে। কিন্তু এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বিশেষ প্রণোদনা দেয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। এতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা আপাতত ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা পাচ্ছেন না। এমন পরিস্থিতিকে ত্রিশ হাজারের বেশি হাইস্কুল, কলেজ ও মাদরাসা এবং কারিগরি প্রতিষ্ঠানের সাড়ে পাঁচ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর সঙ্গে ‘বিমাতাসুলভ আচরণ’ বলছেন শিক্ষক নেতারা।

জানা গেছে, চলতি জুলাই মাসেই সরকারি চাকুরেরা ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা পাচ্ছেন। ৫ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে তাদের বেতনে ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা যোগ হচ্ছে। সরকারি কর্মচারীরা জুলাই মাসের বেতনের সঙ্গে মোট ১০ শতাংশ বাড়তি টাকা পাবেন। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের এ বিশেষ প্রণোদনা দেয়ার বিষয়ে তারা অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা পাননি।   

বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, গত সাড়ে ১৪ বছরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। সেজন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এবং একইসঙ্গে এবারের পাঁচ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা শুনতে চান। 

মোহাম্মদপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমিনুল হক দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমরা ইতোপূর্বে দেখেছি, সরকার সরকারি কর্মচারীদের যেসব সুবিধা দিয়েছেন তার বেশিরভাগই এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা পেয়েছেন। আমরা আশা করছি সরকার এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের এ বিশেষ প্রণোদনায় অন্তর্ভুক্ত করবে। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদেরও এ বিশেষ প্রণোদনা দেয়ার জোর দাবি জানাই। 

মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও রাজধানীর বিটিসিএল আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান বাবুল দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সরকার বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা করেছেন। সরকারি কর্মচারীরা তা পেলেও এমপিওভুক্ত শিক্ষকদেরও এটি প্রাপ্য। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ভোগান্তি সবারই হচ্ছে। তাই এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বিশেষ প্রণোদনা দেয়া জরুরি। যদি সরকার বা শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষক-কর্মচারীদের এ প্রণোদনা না দেয় তাহলে আমার সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে এ বিষয়ে স্মারকলিপি দেবো।  

বাংলাদেশ মাদরাসা জেনারেল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জহির উদ্দিন হাওলাদার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সরকারি কর্মচারীদের ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা দিয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের তা দেয়া না হলে এটি বিমাতা সুলভ আচরণ হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রভাব সবার জীবনে পড়েছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বেতন স্কেল অনুযায়ী এমপিও পান। এ বিশেষ প্রণোদনা পেতে তাদের দাবি জানাতে হবে কোনো? সব কর্মচারীর সঙ্গে তাদেরও এটা পাওয়া উচিত। কিন্তু এটা না দেয়া হলে শিক্ষক সমাজে অসন্তোষ ছড়াবে।

সারাদেশের প্রায় ৫ লাখ শিক্ষক সরকারি কোষাগার থেকে এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) পেয়ে থাকেন। সরকার তাদের মূল বেতনের শতভাগ দেয়। আর দুই ঈদে শিক্ষকরা মূলবেতনের ২৫ শতাংশ ও কর্মচারীরা মূলবেতনের ৫০ শতাংশ উৎসব ভাতা পেয়ে থাকেন। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাস থেকে সরকারি কর্মচারীরা ৫ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট সুবিধা পেলেও ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে ৮ নভেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ও ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই থেকেই শিক্ষকরা পাঁচ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট পাচ্ছেন। 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
তাপপ্রবাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha তাপপ্রবাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জাল সনদেই সরকারকে হাইকোর্ট, নয় শিক্ষক অবশেষে ধরা - dainik shiksha জাল সনদেই সরকারকে হাইকোর্ট, নয় শিক্ষক অবশেষে ধরা মা*রা গেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি - dainik shiksha মা*রা গেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ইরানের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন মোখবার - dainik shiksha ইরানের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন মোখবার এমপিওভুক্ত হচ্ছেন ৩ হাজার শিক্ষক - dainik shiksha এমপিওভুক্ত হচ্ছেন ৩ হাজার শিক্ষক কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0066258907318115