কলেজ শিক্ষকদের বদলির আবেদন বছরে দুইবার, অধিদপ্তরের বদলির ক্ষমতা স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক |

এখন থেকে সরকারি কলেজে নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকেরা (প্রভাষক) চাকরি দুই বছর না হলে ঢাকা মহানগর এলাকায় বদলি হতে পারবেন না। আর সব বদলির আবেদন করতে হবে ই-মেইলে। নির্ধারিত সময়ে বছরে দুইবার আবেদন করা যাবে। এমন আরও কিছু বিষয় যুক্ত করে রোববার (১৫ জানুয়ারি) সরকারি কলেজের শিক্ষক বদলি ও পদায়নের একটি নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

১০ জানুয়ারি জারি করা অপর এক আদেশে প্রভাষক ও সহকারি অধ্যাপকদের বদলির ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের হাতে  ঢাকার বাইরের কলেজগুলোতে প্রভাষক ও সহকারি অধ্যাপক বদলির ক্ষমতা ছিলো।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বদলিতে অতিরিক্ত তদবির সামলাতে বদলি ও পদায়নর নীতিমালা জারি করা হয়েছে। সারাদেশে ৩২৭টি সরকারি কলেজ রয়েছে। এসব কলেজে ১৪ হাজারের মতো শিক্ষক আছেন।

বদলি নিয়ে সারাবছরই ব্যস্ত থাকতে হয় মন্ত্রণালয়ের সচিব-অতিরিক্ত সচিবসহ সরকারি কলেজ শাখার কর্মকর্তাদের। আবার লেনদেনসহ নানা অভিযোগও রয়েছে বদলিতে।

নতুন জারি করা নীতিমালা অনুযায়ী, প্রভাষকেরা প্রথম দফায় জানুয়ারি মাসে ও দ্বিতীয় দফায় জুলাই মাসে বদলির আবেদন করতে পারবেন। সহকারী অধ্যাপকেরা প্রথম দফায় মার্চে ও দ্বিতীয় দফায় সেপ্টেম্বরে, সহযোগী অধ্যাপকেরা প্রথম দফায় মে মাসে ও দ্বিতীয় দফায় অক্টোবরে এবং অধ্যাপকেরা প্রথম দফায় জুনে ও দ্বিতীয় দফায় ডিসেম্বরে বদলির আবেদন করতে পারবেন। নির্ধারিত মাসের ১ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে অনুমোদিত ফরমে ই-মেইলে আবেদন জমা দিতে হবে। আবেদনের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করা যাবে। ই-মেইল ছাড়া অন্য কোনোভাবে দেওয়া আবেদন বিবেচনা করা হবে না।

নীতিমালা অনুযায়ী, অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে যাওয়ার এক বছর আগে কোনো শিক্ষক ও শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা তাঁর সুবিধামতো স্থানে বদলির জন্য আবেদন করলে পদ শূন্য থাকা সাপেক্ষে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ওই আবেদন বিবেচনা করা হবে। স্বামী ও স্ত্রী দুজনই চাকরিজীবী হলে স্বামী বা স্ত্রীর নিকটতম কর্মস্থলে বদলি বা পদায়নের জন্য আবেদন করা যাবে। তবে যেহেতু এ ধরনের কর্মকর্তার সংখ্যা অনেক, তাই বিষয়টি অধিকার হিসেবে গণ্য করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের সুবিধা ও জনগণের সেবাপ্রাপ্তির বিষয় একসঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

যেভাবে নিষ্পত্তি হবে আবেদন

নীতিমালা অনুযায়ী যে মাসে আবেদন করা হবে, ওই মাসেই তা নিষ্পত্তি করা হবে। বদলির আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই এবং সুপারিশের জন্য ‘বাছাই কমিটি’ ও ‘সুপারিশ কমিটি’ নামে দুটি কমিটি থাকবে। বাছাই কমিটি আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে সুপারিশ কমিটির কাছে জমা দেবে। এরপর সুপারিশ কমিটির প্রস্তাব যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন হওয়ার পর বদলি বা পদায়নের আদেশ জারি করা হবে। উপজেলা পর্যায়ের কলেজগুলো্র শূন্য পদে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদায়ন করা হবে। তবে নীতিমালার সাধারণ নিয়মের বাইরে সরকার ‘জনস্বার্থে’ যেকোনো কর্মকর্তাকে যেকোনো স্থানে বদলি করতে পারবে।

বর্তমানেও সাধারণত চাকরি দুই বছর না হলে ঢাকায় বদলি করা হয় না কলেজশিক্ষকদের। এরপরও অনেক সময় এটি মানা হয় না। এখন কাগুজে নীতিমালা করে বদলিতে কড়াকড়ি করল সরকার।

এর আগে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত প্রভাষক ও সহকারি অধ্যাপকদের বদলি স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গত ১০ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে পাঠানো ওই নির্দেশনায় স্বাক্ষর করেছেন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সহকারি সচিব আবু কায়সার খান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, অধিদপ্তরের সহকারি কলেজ শাখার একজন সহকারি পরিচালক, এবং সংযুক্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে বদলিতে ঘুষ লেনদেন, অদক্ষতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন।

তিনি বলেন, অধিদপ্তরের বদলির ক্ষমতা স্থগিতের পেছনে কাজ করেছে এসব অভিযোগ।

তাছাড়া কলেজ শাখার সহকারি পরিচালকদের অদক্ষতায় পদোন্নতি ও পদায়নে বেশুমার ভুল হয়েছে। বিকেল পাঁচটার পর সরকারি কলেজ শাখায় কাউকে পাওয়া যায়না।

আত্তীকৃত কলেজ শিক্ষকদের ফাইল আটকে রাখারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024030208587646