কেমন আছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা?

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রায় ২৮ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে, তারাও দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্মক্ষেত্রে পদচারণা করছে। শুধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মেধাবী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছে তা নয়, গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে আসা কিছু গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীও আছে যারা অভাব-অনটনে কিংবা কিছু প্রতিকূলতা কাটিয়ে নামিদামি কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারেনি; কিন্তু তারা ঠিকই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করছে। শনিবার (৭ আগস্ট) ভোরের কাগজ পত্রিকার এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। নিবন্ধটি লিখেছেন  জেলি আক্তার।

নিবন্ধে আরও জানা যায়, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করলে আমরা বুঝতে পারব কতটা ভালো আছে এই জাতীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। যখন বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে তখন আমাদের দেশও তার ব্যতিক্রম নয়। আমাদের দেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হলে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে ১৭ মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। যা অত্যন্ত সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ছিল। সব শিক্ষার্থীর সুস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত কার্যকরী হয়েছে। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান সময় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের পড়াশোনার গতি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে তাদের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৭ কলেজের বিভিন্ন বর্ষের ফলাফল প্রকাশ হচ্ছে; কিন্তু গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে আসা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা পারছে না অনলাইন ক্লাস করতে, পারছে না পরীক্ষা সম্পন্ন করতে, পাচ্ছে না পরীক্ষার ফলাফল।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার পর আটকে গেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত শিক্ষার্থীদের চতুর্থ বর্ষের চারটি পরীক্ষা। দীর্ঘ সময় ধরে তাদের পরীক্ষা বন্ধ থাকায় তারা পারছে না গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করতে। এক বুক হতাশায় ডুবে আছে। যখন বিভিন্ন কর্মক্ষেত্র খুলে দেয়া হচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধির সব নিয়ম মেনে সব কাজকর্ম চলছে, তখন কি এই শিক্ষার্থীদের বিষয় বিবেচনা করা যায় না? এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার পর আটকে গেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়রে অধিভুক্ত শিক্ষার্থীদের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা। ফলে তারাও হীনম্মন্যতায় ভুগছে। আশঙ্কা করছে সেশনজটে আটকে পড়ার।

সব বিষয়ে পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ও রেজাল্ট পাচ্ছে না অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। মুখে মুখে প্রচলিত কথা ইংরেজি পাস তো অনার্স পাস। আসলে ব্যাখ্যাটা এমন যে ইংরেজি বিষয়টাতে অনেক শিক্ষার্থীর ভীতি ও দুর্বলতা কাজ করে ফলে ভাবনা থাকে। তবে এটাও ঠিক, অনেকেই সব বিষয় পাস করতে পারলেও আটকে যায় ইংরেজিতে। কথায় আছে- ‘হাতিরও পিছলে পাও, সুজনেরও ডুবে নাও।’ অনেক সময় মাথায় আসে হাতির পা কীভাবে পিছলে যায়, এটা অসম্ভব মনে হলেও ঘটনা ঘটে যায়। তেমনি করে কিন্তু কথাটা এভাবে ব্যাখ্যা করা যায় অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা পড়াশোনায় ভালো হয়েও মাঝে মধ্যে দুয়েকটা বিষয়ে আটকে যায়। হয়তো সেটা অনেকের কাছে হাতির পা পিছলে যাওয়ার মতো। দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষার পর পরীক্ষার ফলাফল না পেয়ে হতাশ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। তারা পারছে না তৃতীয় বর্ষের পড়াশোনা শুরু করতে, পারছে না পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে আবার ইংরেজি বিষয়ের ভীতি তো আছেই। ইংরেজি বিষয় ছাড়াও অন্য বিষয়ে যদি আশানুরূপ ফলাফল না হয় তাহলে স্বল্প সময়ে তারা কীভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে লাগাতার পরীক্ষা নেয়া হবে। এসব গোলক ধাঁধায় আটকে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সব শিক্ষার্থীর মনে আশঙ্কা সেশনজটে আটকে পড়ার। অনার্স পাস করে গ্র্যাজুয়েট হয়ে যখন পরিবারের দায়িত্ব নেয়ার কথা তখন একজন অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে হতাশায় ডুবে যাচ্ছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনেক মেধাবীর স্বপ্ন। এছাড়া যখন মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিষয় কমিয়ে আনার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে তখন আমরা চাই যেসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে অর্থাৎ অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার ফলাফল দ্রুততম সময়ে প্রকাশ করলে শিক্ষার্থীদের মাঝে কিছুটা হলেও স্বস্তি আসবে। তাই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আকুল আবেদন এই যে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলোর দিকে নজর দিন।

লেথক: জেলি আক্তার,শিক্ষার্থী, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026578903198242