কোচিং বাণিজ্যের কাছে জিম্মি সিরাজদীখানের শিক্ষার্থীরা

সিরাজদীখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি |

সরকারের নীতিমালা উপেক্ষা করে সিরাজদীখানে বিভিন্ন স্কুলে প্রাইভেট বাণিজ্য চলছেই। কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না এ প্রাইভেট বাণিজ্য। বর্তমান সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রাইভেট ও কোচিং বাণিজ্য বন্ধের প্রয়াসে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে নীতিমালা প্রণয়ন করে। এই নীতিমালার তোয়াক্কা না করে চলছে প্রাইভেট পড়ানো। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা প্রাইভেটের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে নানাভাবে। এ কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থায় ধস নেমে এসেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এখন শিক্ষাব্যবস্থা প্রাইভেট কেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। এতে গরিব ও দরিদ্র পরিবারগুলোর ছেলেমেয়েরা সঠিকভাবে শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এদিকে যত্রতত্র প্রাইভেট সেন্টার গড়ে ওঠার কারণে শিক্ষার্থীরা এখন আর নিজ বাড়িতে পড়াশোনার ক্ষেত্রে অনেকটা অমনোযোগী হয়ে উঠছে বলেও জানিয়েছেন অনেকে। আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও শিক্ষার্থীদের প্রতি মনোযোগী নন সংশ্নিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা- এমন কথাও শোনা যায়।

শুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক অধীর রঞ্জন মণ্ডল স্কুলের পাশেই বাসা ভাড়া নিয়ে শতাধিক ছাত্রকে প্রাইভেট পড়ান। তবে তিনি প্রাইভেট পড়ানোর কথা স্বীকার করে বলেন, 'আমি ৩টি ব্যাচে ৫০ জন ছাত্রকে প্রাইভেট পড়াই। প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে নিই।'

সিরাজদীখান উপজেলায় ২৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দু-একটি ছাড়া সব বিদ্যালয়েই চলছে প্রাইভেট বাণিজ্য। এমনকি উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের পাশেই ২-৩টি ভাড়ার ঘরে বসছে প্রাইভেট। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে সুযোগ-সুবিধা প্রদানের জন্য দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন অবৈধ আশ্বাস।

উপজেলার রাজদিয়া অভয় পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, শুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়, সৈয়দপুর আব্দুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়, খাসমহল বালুচর উচ্চ বিদ্যালয়, কুচিয়ামোড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়সহ সরেজমিন দেখা গেছে, এসব প্রাইভেটে শিক্ষকরা প্রতিটি ব্যাচে ২০ থেকে ৩০ শিক্ষার্থীকে পড়িয়ে থাকেন। এতে শিক্ষার্থীরা ভালো না বুঝলেও পরীক্ষা কেন্দ্রে সুযোগের আশায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় মনোযোগ বাদ দিয়ে একরকম বাধ্য হয়ে প্রাইভেট পড়ার পথ বেছে নিয়েছে। ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে হাজার দেড়েক টাকায় একটি বিষয়ের ওপর পাঠদান চলে থাকে প্রাইভেট সেন্টারগুলোতে। সৈয়দপুর আব্দুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শাহাদাৎ হেসেন বলেন, স্কুলের পাশেই মাসে ১ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে আমি ৩টি ব্যাচ পড়াই। তবে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মাসে ৫০০ টাকার বেশি নিই না।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী আব্দুল ওয়াহিদ মো. সালেহ প্রাইভেট পড়ানোর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, 'বিষয়টি নিয়ে আমি আমাদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002985954284668