নির্মাণের ৯ বছর পার হলেও চালু হয়নি পানছড়ি বাজার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস। ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ছাত্রাবাসে ৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে আজো নিয়োগ হয়নি এবং কবে হবে তাও কেউ জানাতে পারছেন না।
ছাত্রাবাসে স্থাপন করা সোলার, জেনারেটর, ব্যাটারি, পানির ট্যাংক, সিলিং ফ্যান, বৈদ্যুতিক বাল্ব ও বাথরুমসহ নানা সরঞ্জাম ব্যবহারের আগেই সব নষ্ট হয়ে গেছে।
জানা যায়, প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দূর করতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ এই ছাত্রাবাস নির্মাণ করেছিল। ছাত্রাবাসটির নির্মাণ কাজ ২০১০ সালের জুন মাসে শুরু হয়ে শেষ হয় ২০১১ সালের মার্চে। প্রায় ৩ মাস হাতে রেখেই ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে ছাত্রাবাস নির্মাণকাজ বুঝিয়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। ছাত্রাবাসটি চালু করা হলে দুর্গম পাহাড়ি এলাকার শিক্ষা সুবিধাবঞ্চিত ৮০ জন দরিদ্র শিক্ষার্থী আবাসনের সুবিধা পাবে এমনটাই ধারণা ছিল উপজেলাবাসীর।
এলাকাবাসী জানান, প্রথম প্রথম ভবনটির বাইরের অংশ চাকচিক্য দেখালেও কাজের মান ছিল নিম্নমানের। বর্তমানে ভেতরের অংশে ফাটল ধরার পাশাপাশি বাইরের ধারক উঁচু দেয়ালে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল। যা যে কোনো মুহূর্তে লোকালয়ে ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা সময়ের ব্যাপার মাত্র। এ নিয়ে আশ-পাশ এলাকায় বসবাসকারী পরিবারগুলো দিন কাটাচ্ছে আতঙ্কে। পরিবারগুলোর দাবি, এ ব্যাপারে জরুরি ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের প্রাণহানি সন্নিকটে।
পানছড়ি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সুজিত মিত্র চাকমা বলেন, ‘আমি সরেজমিনে এই ঝুঁকিপূর্ণ দেয়াল দেখে নিজেও ভয়ে আঁতকে যাই। এই দেয়াল ধসলে অনেক প্রাণহানি ঘটবে তা নিশ্চিত। সহকারী পরিচালক (প্রাশিঅ)-কে এ ব্যাপারে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু আজো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
এই ভয়াবহ বিপর্যয় এড়াতে ডিপিওসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পানছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী অরুণ কুমার দাশ বলেন, ‘বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘খবর শুনে আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। ধারক দেয়ালের যে অবস্থা তা যে কোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে। এ ব্যাপারে শিক্ষা অফিসারকে উপ-পরিচালক বরাবরে লেখার জন্য বলেছি। তাছাড়া স্থানীয়ভাবেও কী করা যায় তা দেখছি।’