ছাত্ররাজনীতিতে নীতি ও আদর্শ খোয়া গেছে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

কানাডার প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডোকে বলা হয় বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে মানবিক, স্মার্ট ও মেধাবী রাষ্ট্রনেতা। তিনি কোনো ইউনিভার্সিটিতে ছাত্ররাজনীতি করেননি বা শেখেননি। বারাক ওবামা, মার্কেলসহ দুনিয়ার বাঘা বাঘা নেতা যাঁরা পৃথিবী দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের রাজনীতি শিখতে ছাত্ররাজনীতি করতে হয়নি। শুধু রাজনীতি শেখার জন্য বাংলাদেশের নেতাদেরই ছাত্ররাজনীতি করতে হয়! রাজনীতিতে দরকার তিনটি জিনিস—সততা, দায়বদ্ধতা ও সত্য উচ্চারণের সাহস।  ছাত্ররা তাদের বয়সে পড়বে। জ্ঞানার্জন করবে। কারণ এটার একটা সময় থাকে। ছাত্রনং অধ্যয়নং তপঃ—এর বাইরে তো কোনো কথা নেই। সমাজের উন্নয়নে, মানুষের কল্যাণে, বিদ্যাপীঠের উত্তরোত্তর মান বৃদ্ধিতে সংগঠন করা, সহপাঠীদের সঙ্গে তর্কবিতর্ক—এগুলোর চর্চা করা অবশ্যই দরকার। এগুলোই হলো সত্যিকারের রাজনৈতিক চর্চা। শনিবার (১২ অক্টোবর) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও বলা হয়, নেতার মাথায় ছাতা ধরার জন্য ধাক্কাধাক্কির নাম রাজনীতি নয়। নেতার সঙ্গে ছবি তুলে পূজা করার নাম রাজনীতি নয়। এর নাম পুচ্ছলেহন। বাসে, ট্রেনে গায়ের জোরে সিট দখল করে রাখা, টাকা না দিয়ে খাওয়া, বড় ভাইয়ের চার্জে নিজের গায়ে গরম বোধ করার নাম রাজনীতি নয়। একটা পদের লোভে দিনরাত নেতার ছায়া হয়ে থাকার নাম রাজনীতি নয়। নেতা হওয়ার জন্য ছাত্ররাজনীতি করতে হয়। এর চেয়ে খোঁড়া যুক্তি সম্ভবত বাংলাদেশ ছাড়া কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমাদের ছাত্ররাজনীতিতে এই চর্চাগুলোই হয়! এই চর্চা করে ছাত্রত্ব পার করা ছাত্ররা শিক্ষক হচ্ছে। কর্মকর্তা হচ্ছে। সরকারি ক্যাডার হচ্ছে।

অযোগ্য উপাচার্যকে নামিয়ে সবচেয়ে মেধাবী, সৎ ও যোগ্য শিক্ষককে উপাচার্য করার জন্য যূথবদ্ধ হওয়ার নাম ছাত্ররাজনীতি। শিক্ষকদের সামনে নৈতিক ও অধিকার আদায়ের প্রশ্ন করার নাম ছাত্ররাজনীতি। শিক্ষক নিয়মিত ক্লাস নেন না কেন, পরীক্ষা দেরি করে হচ্ছে কেন, ফলাফল দেরি করে দেবে কেন—এগুলোর জন্য প্রতিবাদ করার নাম ছাত্ররাজনীতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞান-গবেষণার জন্য বাজেট বৃদ্ধির দাবিতে কণ্ঠ তোলার নাম ছাত্ররাজনীতি। শিক্ষার মান বৃদ্ধিতে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করার নাম ছাত্ররাজনীতি। দেশের সরকারের যেকোনো অপকর্মের বিরুদ্ধে সমালোচনার নাম ছাত্ররাজনীতি। আমাদের চলমান ছাত্ররাজনীতি থেকে সুফল আসবে, এমন বিশ্বাসে যারা এটিকে টিকিয়ে রাখার সমর্থন করে তারা হয় অজ্ঞ, নয় সুবিধাভোগী।

রউফুল আলম : নিউ জার্সি, যুক্তরাষ্ট্র।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002748966217041