ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের এই ঐক্য শুভ নয়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

রাজনীতির মাঠে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আর বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের দা-কুমড়া সম্পর্ক। পারস্পরিক সংঘাতের বিভিন্ন ঘটনায় এ সম্পর্কের বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধে প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একই বিন্দুতে অবস্থান নিয়েছে তারা।

উভয়েরই আশঙ্কা, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হলে বুয়েটে অন্ধকারের শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। অন্যদিকে ছাত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব সাধারণ ছাত্র, শিক্ষক এবং অভিভাবকরা। তারা বলেছেন, বুয়েটের মতো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতির কোন প্রয়োজন নেই। বৃহস্পতিবার ১৭ অক্টোবর সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

আবরার হত্যাকাণ্ডের পর সর্বমহলের দাবির মুখে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েট কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন এবং ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু সেই ঘোষণাই মেনে নেয়ার ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করল ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল।

ছাত্রদের অধিকার আদায়ে কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অসঙ্গতি নিরসনে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগকে কখনই এক হয়ে লড়াই করতে দেখা যায়নি। গত কয়েক দশকে ছাত্র রাজনীতির কোন ধরনের আদর্শিক প্রেক্ষাপটে তাদের অবস্থান ঊর্ধ্বমুখী হয়নি। বরং চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলবাজি, লেজুড়বৃত্তি, খুনোখুনি, মারামারিতেই তাদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। অথচ সেই দুই ছাত্র সংগঠনই এখন ছাত্র রাজনীতির পক্ষে সাফাই গাইছে, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি টিকিয়ে রাখার সপক্ষে যুক্তি দেখাচ্ছে।

এটা যে মূলত তাদের অপকর্মের যজ্ঞ টিকিয়ে রাখার চেষ্টা সেটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ রাজনৈতিক আদর্শের গণ্ডিতে দুই ছাত্র সংগঠনের চরম বৈপরীত্য থাকলেও গোষ্ঠীস্বার্থের বিবেচনায় দু’দলই এক এবং অভিন্ন। ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ যে অন্ধকারের শক্তির ইঙ্গিত দিয়েছে, আমরা তার স্বরূপ অতীতে সনি এবং সাম্প্রতিক সময়ে আবরার হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়েই দেখতে পেয়েছি। আমরা মনে করি না, ছাত্রদের জন্য এর চেয়ে বড় অন্ধকারের শক্তি আর কেউ হতে পারে।

ছাত্র রাজনীতি বন্ধের ব্যাপারে বুয়েট যা করেছে সেটা তাদের ছাত্র, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের দাবির কারণেই করেছে। সর্বমহলের সম্মতিতেই কাজটি হয়েছে। এর বিরুদ্ধাচরণের এখতিয়ার কোন রাজনৈতিক বা ছাত্র সংগঠনের নেই। আমরা মনে করি, দলীয় বা সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করলেও বুয়েটে গঠনমূলক ছাত্র রাজনীতি থাকতে পারে তবে সেটা হতে হবে আদর্শিক এবং ছাত্রদের অধিকারকেন্দ্রিক। তা না হলে শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো উপেক্ষিত হতে পারে। এক্ষেত্রে বুয়েটের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ইউকসু)ও হল সংসদগুলো নির্বাচনের মাধ্যমে সচল করা যেতে পারে। দলীয় রাজনীতির ছত্রছায়া বন্ধ হলে গেস্টরুম কালচার, গণরুম ও র‌্যাগিংয়ের নামে ভয়ংকর নিপীড়ন বন্ধ করা সম্ভব হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0060780048370361