ছাত্র ‘হত্যা’, মাদরাসায় তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ এলাকার একটি মাদরাসা থেকে হাবিবুর রহমান নামে ১১ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে ছিল বায়েজিদ থানার ওয়াজেদিয়া এলাকার আবু বকর সিদ্দিক আল ইসলামিয়া মাদরাসা ও হেফজখানার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী।

বুধবার গভীর রাতে মাদরাসা সংলগ্ন মসজিদের চারতলায় গ্রিলের সঙ্গে গলায় গামছা পেঁচানো ও ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। মাদরাসা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে পুলিশ তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। চমেক হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিত্সক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়না তদন্তের পর গতকাল বৃহস্পতিবার হাবিবুরের লাশ আত্মীয়দের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গতকাল সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি।

শিশুটির পিতা গতকাল চমেক হাসপাতাল মর্গের সামনে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন তার ছেলেকে মাদরাসার এক শিক্ষক হত্যা করেছে। এদিকে, বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গতকাল ওই মাদরাসার গেটে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ করেন। তারা মাদরাসা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় ওই মাদরাসা ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে বলে তারা দাবি করেন। সিএমপির বায়েজিদ জোনের সহকারী কমিশনার পরিত্রাণ তালুকদার সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক তদন্তে জেনেছি শিশুটি কয়েকদিন আগে মাদরাসা থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। দুইদিন আগে সে আবার ফেরত আসে। ফেরত আসার পর তার ওপর কোনো ধরনের নির্যাতন হয়েছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে।

হাবিবুর গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে নাকি কেউ তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না পুলিশ। বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, রাতে এক মাদরাসাছাত্রের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। মাদরাসার পাশেই একটি মসজিদ আছে।

মসজিদের চারতলায় গ্রিলের সঙ্গে গলায় কাপড় দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় শিশুটিকে পেয়েছি। ছেলেটির বয়স মাত্র ১১ বছর। সে আত্মহত্যা করেছে না কি তাকে হত্যা করা হয়েছে সে বিষয়ে আপাতত কোনো ধারণা করতে পারছি না। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। ওসি আরো জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা না হলেও পুলিশ নিজস্ব তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। মাদরাসার কয়েকজন শিক্ষক, ছাত্র ও প্রতিবেশীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে তাদের কাছ থেকে উল্লেখ করার মতো তথ্য পাওয়া যায়নি।

হাবিবুরের পিতা আনিসুর রহমান পেশায় অটোরিকশা চালক। তিনি পরিবার নিয়ে নগরের শেরশাহ বাংলাবাজার এলাকায় থাকেন। গতকাল চমেক হাসপাতাল মর্গের সামনে তিনি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, তাঁর ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আনিসুর রহমান বলেন, চার দিন আগে তাঁর ছেলেকে মাদরাসার শিক্ষক তারেক আহমেদ মারধর করেন। এ কারণে তাঁর ছেলে মাদরাসা থেকে বাসায় চলে আসে। পরদিন বুঝিয়ে-শুনিয়ে ফের তাকে মাদরাসায় পাঠানো হয়।

বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে মাদরাসা থেকে ফোন করে তাঁকে জানানো হয়, হাবিবুরকে মাদরাসায় পাওয়া যাচ্ছে না। আত্মীয়-স্বজন মিলে বিভিন্ন জায়গায় হাবিবুরের খোঁজ করা হয়। তবে কোথাও তাকে পাওয়া যায়নি। গভীর রাতে আবার মাদরাসা থেকে ফোন আসে। তাঁকে জানানো হয়, হাবিবুর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে সেখানে গিয়ে দেখেন, পুলিশ লাশ উদ্ধার করছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026490688323975