ডাকসু: বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপে রাখার কৌশল ছাত্রদলের

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপে রাখতে চাইছে ছাত্রদল। উপাচার্য বরাবর দেওয়া সাত দফা দাবির বিষয়ে তারা এখন সোচ্চার হতে আগ্রহী। একই সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতিও নিচ্ছে বিএনপির এ সহযোগী সংগঠন। চাপে রাখার কৌশল হিসেবে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাবেন ছাত্রদলের নেতারা। মধুর ক্যান্টিন অথবা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়েছে সংগঠনটি। বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দৈনিক কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে  এ তথ্য জানা যায়। 

ডাকসু প্যানেল তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি  বলেন, ‘ছাত্রদলের পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি দেওয়া হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। এর একটিও মানা হয়নি, বরং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যেই আমরা কাজ করছি।’

ছাত্রদলের একাধিক সূত্র বলছে, গেল সপ্তাহে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, রফিকুল ইসলাম বকুল, আজিজুল বারী হেলাল, শফিউল বারী বাবু, আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েলসহ দেড় শতাধিক ছাত্রনেতা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৮০ জন বক্তব্য দেন। তাঁদের বেশির ভাগই ডাকসু নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার পক্ষে মত দেন। তাঁদের যুক্তি, সহাবস্থান না হওয়ায় সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে বিভিন্ন আবাসিক হলে। একটি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদককে সুবিধা দেওয়ার জন্য প্রার্থীর বয়স ৩০ বছর করা হয়েছে। এ অবস্থায় নির্বাচনে যাওয়া মানে ছাত্রলীগকে নির্বাচনে জয়ী হতে সহায়তা করা। এমন পরিস্থিতিতে সাত দফা দাবি নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়।

প্যানেল তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত আরেক নেতা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল বলেন, ‘একটি ছাত্রসংগঠনকে জেতানোর জন্য ভিসি স্যার কাজ করছেন বলে আমাদের কাছে পরিষ্কার। আমরা ডাকসুর ঐতিহ্যের মতো একটি নির্বাচন দেখতে চাই। কিন্তু সেটি এখনো পরিলক্ষিত হয়নি। আমরা এখনো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক। সেই পর্যন্ত ছাত্রদল তাদের দাবিদাওয়া তুলে ধরে যাবে। পরিস্থিতি ভিন্ন হলে আমরা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করব।’

সংগঠনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এরই মধ্যে ডাকসু প্যানেল তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা এ্যানি দলের চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করেছেন। পুরান ঢাকার অস্থায়ী আদালতে খালেদা জিয়াকে আনা হলে সেখানে ডাকসুর বিষয়েও তাঁদের মধ্যে কথা হয়। চেয়ারপারসনের ইতিবাচক মনোভাবের কথা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও জানানো হয়। তবে সক্রিয় ও গ্রহণযোগ্য নেতা অপ্রতুল হওয়ায় এখনো প্যানেল তৈরি করা সম্ভব হয়নি। কারণ হিসেবে দেখা গেছে, ২০১৪ সালের অক্টোবরে ছাত্রদলের বর্তমান কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হল কমিটিগুলো ঘোষণা করা হয়। এরপর আর কমিটি না হওয়ায় নতুন নেতৃত্ব আসেনি।

এদিকে আজ ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করার কথা জানিয়েছেন ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আল মেহেদি তালুকদার। তিনি বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু ও সব শিক্ষার্থীর কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য ভিসি স্যারকে সাত দফা দিয়েছি। অন্য ছাত্রসংগঠনগুলোও পরিবেশ ও সহাবস্থান নিশ্চিত করার দাবি তুলেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনোটাই মানেননি। সার্বিক বিষয় নিয়ে কাল (আজ) আমরা কথা বলব।’

ছাত্রদলের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথম থেকেই যেসব উদ্যোগ নিয়েছে তার প্রতিটিই আমরা স্বাগত জানিয়েছি। কিন্তু তড়িঘড়ি করে সহাবস্থান নিশ্চিত না করা, ভোটকেন্দ্র না সরানোসহ আমাদের সাত দফা দাবির কোনোটাই মানেনি। তাই আমরা তাদের কর্মকাণ্ডের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখছি।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই - dainik shiksha একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই অবসর কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার ফের তাগিদ - dainik shiksha অবসর কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার ফের তাগিদ সুধা রানী হাদিসের শিক্ষক পদে : এনটিআরসিএর ব্যাখ্যা - dainik shiksha সুধা রানী হাদিসের শিক্ষক পদে : এনটিআরসিএর ব্যাখ্যা শরীফ-শরীফার গল্প বাদ যাচ্ছে পাঠ্যবই থেকে - dainik shiksha শরীফ-শরীফার গল্প বাদ যাচ্ছে পাঠ্যবই থেকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক এক রুমে ৩৫ ছাত্রী অসুস্থ, পাঠদান বন্ধ - dainik shiksha এক রুমে ৩৫ ছাত্রী অসুস্থ, পাঠদান বন্ধ যৌ*ন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কারাগারে - dainik shiksha যৌ*ন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কারাগারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044150352478027