ঢাকা পাবলিক স্কুলে তালা, বই পায়নি শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

দেশের সব স্কুল শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই। উত্সব ও আনন্দ বইছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। কিন্তু শিক্ষাবর্ষের ৭ দিন পেরিয়ে গেলেও রাজধানীর ঢাকা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাড়ে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী এখনো বই পায়নি। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীরা স্কুলেই যেতে পারছে না। বাড়ির মালিক ও স্কুল কর্তৃপক্ষের দ্বন্দ্বে ধানমন্ডিতে অবস্থিত স্কুলটি বেশ কিছুদিন যাবত বন্ধ রয়েছে। প্রতিদিন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা স্কুলের সামনে এসে ভিড় জমায়। কিন্তু তালা দেওয়া থাকায় প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে কেউ প্রবেশ করতে পারছে না।

ধানমন্ডির রোড নং ৯/এ এর বাড়ি নং ৫২/এ অবস্থিত বাড়িটির নিচ তলা থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত ঢাকা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের কার্যক্রম পরিচালিত হতো। ২০১১ সাল থেকে ওই বাড়িটিতে প্রতিষ্ঠানটি অবস্থান করে আসছে। রাইফা নামের এক শিক্ষার্থী জানায়, জানুয়ারি মাসের এক তারিখে সব স্কুলে বই উত্সব হয়েছে এবং শুরু হয়েছে ক্লাস। কিন্তু আমরা এখনো বই পাইনি। সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী লিজা আক্তার জানায়, এক তারিখে আমাদের বই দেওয়ার কথা। কিন্তু স্কুলে এসে দেখি স্কুল বন্ধ। আমার অন্য স্কুলের বন্ধুরা বই পেয়ে গেছে। আমরা এখনো বই পাইনি। আমরা আমাদের ফলও এখনো পাইনি। এখন আমরা কোথায় ভর্তি হব কিছুই বুঝতে পারছি না।

আমিরুল নামে এক অভিভাবক জানান, বেশ কিছুদিন স্কুল বন্ধ রয়েছে। স্কুলের সামনে উপস্থিত অভিভাবকরা তাদের সন্তানকে নিয়ে উদ্বেগ-উত্কণ্ঠার কথা জানান। অভিভাবক মাসুমা আক্তার বলেন, বছরের প্রথমে স্কুল বন্ধ। আমরা এখন কোথায় আমাদের সন্তানকে ভর্তি করাবো, আমরা খুব চিন্তিত। প্রায় প্রতিটি স্কুলে বই দিয়েছে। ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। এখন তো আর কোনো স্কুলে ভর্তি করার সুযোগ নেই। অভিভাবকরা জানিয়েছেন, বাড়ির মালিকের সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের দ্বন্দ্ব দ্রুত নিরসন হওয়া জরুরি। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত্ চিন্তা করে তারা দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান আলমগীর কবির জানান, বাড়িওয়ালা অধিক ভাড়ার আশায় আমাদের স্কুল অ্যান্ড কলেজ খুলতে দিচ্ছে না। অথচ ওই বাড়ির মালিকের সঙ্গে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের চুক্তি রয়েছে। ২০১১ সালে ভাড়া বাবদ অগ্রিম দেওয়া হয় ৭০ লাখ টাকা। ২০১৪ সালে দেওয়া হয় ৫০ লাখ টাকা। কিন্তু কোনো নোটিস ছাড়াই গত ১২ ডিসেম্বর তৃতীয় তলার চেয়ারম্যান ও দ্বিতীয় তলার অধ্যক্ষের কক্ষের তালা ভেঙে ছাত্র/ছাত্রীদের মার্কশিট, সার্টিফিকেট ও অন্যান্য কাগজপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রতিষ্ঠানের চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চসহ সব আসবাবপত্র বাইরে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আদায়কৃত বেতন ও ফরম পূরণের টাকা, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্টিলের আলমারি, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, ল্যাপটপ, সিসি ক্যামেরা, সাউন্ডবক্স, এসি, কম্পিউটর, বিনামূল্যে বিতরণকৃত বই ও অন্যান্য জিনিসপত্রাদি বাইরে বের করে ফেলে রেখেছে বাসার মালিক। বর্তমানে ওই বাড়িটির সামনে থেকে প্রতিষ্ঠানটির সাইনবোর্ডও অপসারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করেছে উভয় পক্ষ।

এসব বিষয়ে বাড়িটির মালিক তানভির বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দুই বছর আগে আমাদের চুক্তি শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে ২৪ লাখ টাকা বকেয়া আছে। তারা একাধিকবার ওয়াদা করেও টাকা দেননি। বর্তমানে তাদের কোনো খোঁজ-খবরও পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানে তালা লাগানো ও ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029609203338623