প্রথাগত বৃত্ত থেকে বেরিয়ে প্রগতির পথে এগিয়ে যেতে সবসময় অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এবার সেই পথকে আরও সুগম করতে এক অসাধারণ উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা বিশ^বদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। ডাকসুর উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্রীদের জন্য চালু হতে যাচ্ছে অত্যাধুনিক ভেন্ডিং মেশিনের মাধ্যমে স্যানিটারি ন্যাপকিন সেবা।
ভেন্ডিং মেশিন চালুর অন্যতম সমন্বয়ক ডাকসুর সদস্য ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদার। তিনি বলছিলেন, ডাকসুর নির্বাচনের সময় ছাত্রলীগের ইশতেহারে ছাত্রীদের জন্য ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন এখন দৃশ্যমান।
ক্যাম্পাসের ১০ স্থানে ইতোমধ্যেই এই মেশিন স্থাপনের প্রক্রিয়া শেষের পথে রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পাঁচটি হলের প্রতিটিতে একটি করে এবং টিএসসি, কলাভবনের কমনরুম, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের কমনরুম, বিজ্ঞান লাইব্রেরি ও চারুকলায় একটি করে মেশিন স্থাপন করা হবে। মেশিনগুলো স্থাপনে সহযোগিতা করছে এসিআই কোম্পানি। আগামী ৪ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে তা উদ্বোধন করা হবে।
এই মেশিনের মাধ্যমে সংগ্রহকৃত ন্যাপকিনের দাম ১০ টাকা। ২০০১ সালের পর থেকে প্রচলিত যেকোন দশ টাকার নোট মেশিনে দিলেই একটি ন্যাপকিন বেড়িয়ে আসবে। মেশিনের পাশেই দুটো ডিসপোজাল বিন এবং দুটো তোয়ালে দেয়া থাকবে। প্রতিটি ভেন্ডিং মেশিনের কাছে চালু হওয়ার পর একমাস একজন কর্মচারী থাকবেন, যিনি ছাত্রীদের মেশিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবেন।
ভেন্ডিং মেশিন বসানোর উদ্যোগটি সাড়া ফেলেছে ছাত্রীদের মাঝেও। মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া রহমান জানান, ছাত্রীদের জন্য ডাকসু ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন দিয়ে ডাকসু একটি সুন্দর ও বাস্তবমুখী চিন্তা এবং তার বাস্তবায়ন চিন্তার বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। আমরা এখন প্রয়োজনে খুব কাছ থেকে ন্যাপকিন সংগ্রহ করতে পারব। দোকানে ন্যাপকিন ক্রয় বিক্রয়ে গোপনীয়তার যে ট্যাবু সমাজে বিদ্যমান আছে, তা ভাঙ্গতে ডাকসুর এই উদ্যোগ উদাহরণ হয়ে থাকবে।
তিলোত্তমা শিকদার আরও বলেছেন, গোপনীয়তার বাধা আমরা অনেকটা দূর করতে পারতেছি। আজকে মধুর ক্যান্টিনের টেবিলে সকলের আলোচনার বিষয় ছিল ভেন্ডিং মেশিন নিয়ে। এই মেশিনটি এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে মেয়েরা দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়া সংগ্রহ করতে পারছে।
সমাজের প্রচলিত ধারণা যে ন্যাপকিন কেনার ক্ষেত্রে গোপনীয়তা এটাকে আমরা ভাঙ্গতে চাই। শুধু এই ট্যাবুর জন্য অনেক মেয়ে কিনে না। ফলে রোগের সম্মুখীন হয়। মেয়েরা এই ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে কোন রকম দ্বিধা ছাড়াই নিজের প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে ন্যাপকিন ক্রয় ও ব্যবহারে আগ্রহী হয়।