ঢাবি শিক্ষার্থীরা ফেলে আসা কাগজপত্র নিয়ে অনিশ্চয়তায়

ঢাবি প্রতিনিধি |

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের প্রথম দিকে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ভ্যাকেন্ট করে দেওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলগুলো। তড়িঘড়ি করে বাড়িতে চলে যায় অনেক শিক্ষার্থী। এ ছুটি কয়েকদিনের হবে এমন মনে করে শিক্ষার্থীরা নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রেখে যান হলে। চলমান দীর্ঘদিনের লকডাউনে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা, বিশেষ চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা। ফেলে আসার এসব গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ইঁদুর, তেলাপোকা ও মাকড়সায় নষ্ট করে ফেলবে এমন ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন অনেকে। ফলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বিভিন্ন হলের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, মেয়েদের ৫টি হল ও জগন্নাথ হলে শিক্ষার্থীদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। হল প্রশাসন বাইরে থেকে কেউ প্রবেশ করলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা করছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে এ ছয়টি হলের কাউকে হল থেকে কাগজপত্র আনতে দিচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহার সাথে। তিনি জানান, করোনার জন্য আমরা আপাতত কাউকে ঢুকতে দিচ্ছি না। যে শিক্ষার্থীরা আসবে এবং এখানে যারা কাজ করবে তারা সবাই একটা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। এখন একেবারে পিক আওয়ার চলছে। পরিস্থিতি আরেকটু উন্নতি হলে আমরা শিক্ষার্থীদের এ্যালাউ করবো।

অন্যান্য হল সুযোগ দিচ্ছে, জগন্নাথ হল দেবে না কেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে যেসব স্টাফ রয়েছেন তাদের নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় থাকি। কোন স্টাফ যদি আক্রান্ত হয়ে যায় বড় সমস্যার মধ্যে পড়ে যাবো।’ তিনি জানান, আমরা দুই-তিন দিনের মধ্যে হাউজ টিউটরদের সাথে মিটিং করবো। মিটিং করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।

শিক্ষার্থীদের অনেকেই বলছিলেন, ‘আগামী মাসে পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) পদে যোগদানের কথা রয়েছে। এসময় কাগজপত্র ছাড়া যোগদান করতে পারবেন না চাকরিপ্রত্যাশীরা।’ তবে হলের প্রাধ্যক্ষ বলছে, কাগজপত্র না থাকলে কোন সমস্যা হবে না।’

তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান জানান, কেউ যদি বিশেষ কারণে কাগজপত্র জমা দিতে না পারে তবে আমরা সরকারের নিকট আবেদন জানাবো। যাতে আমাদের ছেলেদেরকে বিশেষ বিবেচনায় নেওয়া হয়। পরবর্তীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা তাদের প্রয়োজনীয় কাগজ জমা নেবে।

উর্মি আক্তার নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা হলে সার্টিফিকেটগুলো ফেলে এসেছি। দীর্ঘদিন আমরা না থাকায় পোকামাকড়ের উপদ্রব ঘটবে। টেনশনে, ভয়ে ঘুমাতে পারছি না। হলে অনেক বার যোগাযোগ করার পরও কিছু সময়ের জন্য ঢুকে এগুলো নিয়ে আসার অনুমতি দিচ্ছে না কেউ। ছেলেদের হলগুলোতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। তাহলে আমাদের কেন না? তাই ছেলেদের হলগুলোর মতো মেয়েদের হলেও ঢুকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নেওয়ার অনুমতি দেয়া উচিত।’

বাপ্পী পাল নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘তাড়াহুড়ো করে চলে আসার ফলে প্রয়োজনীয় অনেককিছুই নিয়ে আসা সম্ভব হয়ে উঠেনি, যে জিনিসগুলোর এখন খুব প্রয়োজন পড়ছে। আগামী দুই একমাস হল না খুললে কাগজপত্র ছাড়া চলা প্রায় অসম্ভব।’

এ বিষয়ে উপাচার্য জানান, কোন শিক্ষার্থী যদি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস রেখে যায় তবে তারা সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষের সাথে অনলাইনে (ই-মেইল, ম্যাসেজ ইত্যাদি) যোগাযোগ করবে। যদি চাকরি প্রত্যাশী কেউ এমনটা চায়, তবে হল প্রশাসন দায়িত্ব নিয়ে কাজটি করে দেবে। অথবা কেউ যদি মনে করে হলে তার কাগজপত্র নষ্ট হয়ে যাবে, তবে হল প্রশাসন নির্দিষ্ট রুমে গিয়ে সেগুলোর সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0047249794006348