তীব্র গরম : বন্ধের মধ্যে স্কুল খুলে পরীক্ষা, ৬ শিক্ষার্থী হাসপাতালে

কুমিল্লা প্রতিনিধি |

কুমিল্লা দাউদকান্দিতে প্রচণ্ড গরমে বিদ্যালয় বন্ধ রাখার সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে স্কুল খোলা রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই বিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেয়ার সময় ছয় শিক্ষার্থী ও এক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় একজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার কানড়া মুকুল নিকেতন স্কুলে এ ঘটনা ঘটে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অসুস্থ শিক্ষার্থীদের মধ্যে দশম শ্রেণির মো. ইয়াকুব হোসেন, মো. ইউসুফ মিয়া, আলিজা আক্তার, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তারিন আক্তার, আঁখি আক্তার, ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত আক্তার এবং মুকুল নিকেতন স্কুলের সহকারী শিক্ষক মার্জিয়ারা বেগমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে শিক্ষার্থী আলিজা আক্তারকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী জানায়, ওই বিদ্যালয়ে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা চলছে।

বৃহস্পতিবার বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা চলাকালীন প্রচণ্ড গরমে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিপড়ুয়া ওই ছয় শিক্ষার্থী ও এক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে দ্রুত তাদেরকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। 

এদিকে একই দিনে উপজেলার জিংলাতলী ইসলামী কমপ্লেক্স মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী জান্নাত আক্তার অসুস্থ হয়। তাকেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনার খবর পেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) কুমিল্লার আঞ্চলিক পরিচালক অধ্যাপক সোমেশ কর চৌধুরী, কুমিল্লা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম, দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিনুল হাসান, দাউদকান্দি মডেল থানার ওসি মুহম্মদ আলমগীর ভূঞা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম ফজলুল হকসহ অন্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে যান। তাঁরা শিক্ষার্থীদের যথাযথ চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করেন এবং খোঁজখবর নেন।

মুকুল নিকেতন স্কুলের দশম শ্রেণির এক ছাত্র বলেন, সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হয়। ২০ মিনিটের মধ্যে প্রচণ্ড গরমে কয়েক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাদেরকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বখতিয়ারা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, কী কারণে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়েছে, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া বলা যাচ্ছে না। তবে এক শিক্ষার্থীর অসুস্থতা দেখে অন্য শিক্ষার্থীরা ভয়ে অসুস্থ হতে পারে।

বন্ধের মধ্যে পরীক্ষা নেয়া ভুল হয়েছে বলে দাবি করেছেন মুকুল নিকেতন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন। তবে বিষয়টি নিয়ে অন্য কোনো কথা বলতে রাজি হননি তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিনুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীদের অসুস্থতার খবর শুনে তিনি দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে এসেছেন। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। এ ঘটনায় পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুরে উপজেলার গৌরিপুর সুবল আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা (১২) শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চলাকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিক্যালে নেয়ার পথে ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। হাবিবা পার্শ্ববর্তী তিতাস উপজেলার নাগেশ্বর উরাকান্দি গ্রামের জিয়াউল হকের মেয়ে। ঘটনার সময় তার চোখ মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়। যে কারণে অনেকেই ধারণা করেছেন হিটস্ট্রোকে হাবিবার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পরদিন বুধবার অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার প্রথম দিনে প্রচণ্ড গরমে ওই প্রতিষ্ঠানসহ উপজেলার পাঁচটি উচ্চবিদ্যালয়ের ২২ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ - dainik shiksha শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027890205383301