পরিবর্তন আসছে মাদ্রাসার ৩২টি পাঠ্যবইয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সরকারের মাদ্রসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন বিভিন্ন শ্রেণির ৩২টি পাঠ্য বাইয়ে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রসা বিভাগ বলছে, পাঠ্য বইগুলোতে কোরআনের যেসব আয়াত প্রেক্ষাপট ছাড়াই ব্যবহার করা হয়েছে, সেই বইগুলোতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। একই সঙ্গে কোনো হাদিস বা কোরআনের কোনো আয়াত থেকে যাতে কেউ ভুল বার্তা না পায়, সে বিষয়েও লক্ষ রাখা হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার মাদ্রসা শিক্ষা বোর্ডের পাঠ্য বইসংক্রান্ত জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে জানা গেছে। গতকাল রবিবার বিবিসি বাংলা অনলাইন এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রসা বিভাগ বলছে, বর্তমানে মাদ্রসার পাঠ্য বইয়ে যেসব বিষয় আছে তার কিছু কিছু জিনিস পরিবর্তন করা দরকার। এ বিভাগের সচিব মো. আলমগীর হোসেন বলেন, তাঁদের পর্যবেক্ষণে তিন ধরনের পরিবর্তন দরকার বলে তাঁরা মনে করছেন। এসবের মধ্যে রয়েছে কোরআনের কিছু আয়াত এবং হাদিসের অনুবাদ সংশোধন করা। তিনি বলেন, কোনো ধরনের প্রেক্ষাপট বা পটভূমি ছাড়াই এসব আয়াত খাপছাড়াভাবে বইতে সন্নিবেশ করা হয়েছে, যাতে করে ইসলাম সম্পর্কে ভুল বার্তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সচিব বলেন, ‘এখানে বলা আছে যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুকে আক্রমণ কর। সেটা শত্রু যখন আক্রমণ করবে তখন আমিও তাকে আক্রমণ করব। কিন্তু সেই প্রেক্ষাপট না বলে যদি আমি বলি যে বিজাতীয়দের হত্যা কর, তাহলে অবশ্যই বুঝতে হবে সেটা অসৎ উদ্দেশ্য থেকে বলা হচ্ছে। কোরআনে কোথাও বিজাতীয়দের হত্যার কথা বলা হয়নি, বরং বলা আছে যে কোনো মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা মহাপাপ।’

এ ছাড়া কোরআনের যেসব আয়াত দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে সেসব এত ছোট ক্লাসের বইতে না থাকাটাও সমীচীন বলে মনে করছেন তাঁরা। একই সঙ্গে অন্য ধর্মের মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা এবং কোরআন পাঠে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুবাদ এবং সেটা চলিত ভাষায় রাখার কথা বলা হয়েছে।

সচিব বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কী ধরনের সম্পর্ক হবে বা হবে না সেটা কুরআনের আয়াতে যা আছে, সেটা তো ক্লাস সিক্স বা সেভেনের বাচ্চার পড়ার দরকার নেই। যখন তারা বড় হবে তখন এমনিতেই তারা পড়বে।’

মাদ্রসার এই পাঠ্য বই পরিবর্তনে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘আমরা মনে করছি একটা বই যারা লেখে সেখানে টুকটাক ভুল থাকতেই পারে। যাচাই-বাছাই করে যদি দেখা যায় কোথাও ভুল-ভ্রান্তি আছে এবং আমরা মনে করি এই ক্লাসের বাচ্চাদের জন্য এটা থাকা উচিত না—সেটা আমরা সংশোধন করে দিয়েছি এবং সেটা হওয়ার দাবি রাখে।’

কারিগরি ও মাদ্রসা বিভাগ জানায়, পরিবর্তিত পাঠ্য বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে আগামী বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালের শুরুতে। তবে ২০২০ সালে যুগের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে আরেক দফা পরিবর্তন করা হবে বলেও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এর আগে ২০১৩ ও ২০১৪ সালে মাদ্রসার পাঠ্য বইয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছিল।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030250549316406