প্রশ্নপত্র ফাঁসের ১২টি কারণ চিহ্নিত করে এগুলোকে প্রশ্নফাঁসের ‘ঝুঁকি’ হিসেবে অভিহিত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এসব ঝুঁকি এড়িয়ে প্রশ্নফাঁস রোধ করতে ১৫টি উদ্যোগও গ্রহণ করেছে বলে দাবি করেছে তারা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ এমন তথ্য প্রকাশ করেছেন। রাজশাহী বিভাগের সব জেলার প্রশাসক (ডিসি), উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এবং কেন্দ্রসচিবদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি সম্ভাব্য এসব কারণ ও গৃহীত উদ্যোগগুলো তুলে ধরেন।
চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এ মতবিনিময় করেন তিনি। সোমবার সকালে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সম্মেলন কক্ষে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সহায়তায় বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় এর আয়োজন করে।
অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ প্রশ্নফাঁসের যে ঝুঁকিগুলো তুলে ধরেন তার মধ্যে রয়েছে- বিজি প্রেসে বিভিন্ন ধাপে ২৫০ ব্যক্তির প্রশ্ন দেখার সুযোগ, নিরাপত্তা হেফাজত থেকে অগ্রিম প্রশ্ন নেয়া, প্রশ্ন নেয়ার সময় ট্যাগ অফিসারের অনুপস্থিতি, নির্দিষ্ট সময়ের আগে প্যাকেট খোলা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার ও বিশ্বাসভঙ্গ। এ ছাড়া প্যাকেট খোলার সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন কর্মকর্তার স্বাক্ষর গ্রহণ না করা, মুঠোফোন ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যবহার, দায়িত্বশীলদের দায়িত্বহীনতা, ফাঁসকারীদের শাস্তি না হওয়া এবং পরীক্ষা ও আইসিটি সংশ্লিষ্টদের আইনের কঠোর প্রয়োগ না করা প্রশ্নফাঁসের জন্য ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে মন্ত্রণালয়।
জাবেদ আহমেদ জানান, ঝুঁকিগুলো এড়িয়ে প্রশ্নফাঁস রোধ করতে তারা ১৫টি উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তার মধ্যে রয়েছে- প্রশ্ন সেটিং, মডারেটর ও লটারিতে সতর্কতা; বিজি প্রেসের সংশ্লিষ্টদের গোয়েন্দা নজরদারিতে আনা, বিজি প্রেস থেকে প্রশ্ন জেলা ট্রেজারিতে পাঠানো, সেটভিত্তিক একই বিষয়ের প্রশ্ন একটি খামে রাখা, ট্রেজারি থেকে প্রশ্ন ডিসির তত্ত্বাবধানে ইউএনও এবং ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে গ্রহণ।
সভায় রাজশাহী বিভাগের আট জেলার ডিসি, ইউএনও এবং কেন্দ্র সচিবরা প্রশ্নফাঁস রোধে নিজেদের নানা পরামর্শ তুলে ধরেন।
বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর-রহমান সভায় সভাপতিত্ব করেন। এতে অন্যদের মধ্যে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল কালাম আজাদ, সচিব প্রফেসর তরুণ কুমার সরকার, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক নিশারুল আরিফ, রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার তানভীর হায়দার চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।