প্রাকৃতিক গ্যাস নয়, বাংলাদেশ থেকে এলপিজি যাবে ভারতে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

( বাংলাদেশ থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে রপ্তানি করা হবে বলে যে খবরটি আমরা প্রকাশ করেছিলাম সেখানে তথ্যগত ভুল ছিল। সরকারের জ্বালানি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, প্রাকৃতিক গ্যাস নয় তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা এলপিজি রপ্তানির প্রশ্নে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। সেই ভুল সংশোধন করে খবরটি পুন:প্রকাশ করা হলো)

বাংলাদেশ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে প্রাকৃতিক গ্যাস নয়, তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা এলপিজি রপ্তানি করবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের তৃতীয় দিনে শনিবার আরও জানানো হয়েছে, ফেনী নদীর পানি নিয়ে ত্রিপুরার সাব্রুম শহরে পানীয় জলও সরবরাহ করা হবে। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন শুভজ্যোতি ঘোষ।

তবে যে ইস্যুগুলোতে বাংলাদেশে অনেকেরই নজর ছিল - যেমন তিস্তা নদীর জল ভাগাভাগি কিংবা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রশ্নে ভারতের অধিকতর সমর্থন আদায়, সেগুলোতে বিশেষ অগ্রগতির লক্ষণ চোখে পড়েনি।

দু'দেশের যৌথ বিবৃতিতে ভারতের বিতর্কিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা এনআরসি-র প্রসঙ্গও উল্লেখ করা হয়নি।

বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই শীর্ষ পর্যায়ে যে কোনও ভারত-বাংলাদেশ বৈঠকে কৌতূহলের কেন্দ্রে থাকছে তিস্তা চুক্তি বা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের মতো বিষয়।

আরও পড়ুন: বিবিসির ভুল খবরই কাল হলো আবরারের

শনিবার দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও প্রধানমন্ত্রী হাসিনার বৈঠকে সে সব ইস্যুতে কোনও নাটকীয় মোড় আসেনি - তবে বাংলাদেশ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এলপিজি রপ্তানি করতে সম্মত হয়েছে।

এলপিজি রপ্তানির জন্য একটি প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেছেন দুই প্রধানমন্ত্রী।

এই প্রকল্পে বাংলাদেশ থেকে বুলেট ট্রাকে চাপিয়ে এলপিজি নিয়ে আসা হবে ত্রিপুরার বিশালগড় বটলিং প্ল্যান্টে, তারপর সেই তরল গ্যাস সরবরাহ করা হবে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন স্থানে।


তাতে এলপিজি সিলিন্ডার অনেক কম পরিবহন-খরচে আর কম সময়ে পৌঁছে দেয়া যাবে ঐ সব দুর্গম এলাকায়।

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশ কোন প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি করছে না।

বাংলাদেশের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভারতের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি করে বাংলাদেশ থেকে ভারতের ত্রিপুরায় এলপিজি রপ্তানি করবে বলে বিবৃতিতে জানানো হয় ।

এই খবরটিতে এর আগে ভুল করে বলা হয়েছিল যে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানির প্রশ্নে দুই দেশের সমঝোতা হয়েছে।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের চাহিদা মিটিয়েই এলপিজি ভারতে রপ্তানি করা হবে বলে দুই দেশ একমত হয়েছে।

জলের মতো স্পর্শকাতর ইস্যুতেও বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে - ত্রিপুরার সাব্রুম শহরে পানীয় জল জোগাতে ফেনী নদী থেকে ১.৮২ কিউসেক জল সরবরাহে তারা রাজি হয়েছে।

ফেনী-সহ সাতটি অভিন্ন নদীর পানি ভাগাভাগির জন্য একটি কাঠামো প্রস্তুত করতেও যৌথ নদী কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন দুই নেতা - যদিও এই সাতটির মধ্যে তিস্তা সেই।

তবে দু'দেশের কর্মকর্তারা বলছেন, এই কাঠামোই আগামী দিনে সম্ভাব্য তিস্তা চুক্তির ভিত গড়ে দিতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, "শেখ হাসিনার সঙ্গে আজকের এই এলপিজি-আমদানিসহ এই নিয়ে গত এক বছরে আমি অন্তত ডজনখানেক প্রকল্পের উদ্বোধন করলাম।"

"যার সবগুলোরই লক্ষ্য এক - আমাদের নাগরিকদের জীবনের মানে উন্নতি ঘটানো। আর এটাই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মূলমন্ত্র।"


যে সাতটি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি দিল্লিতে স্বাক্ষরিত হয়েছে তার মধ্যে প্রথমটিই ছিল বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করার ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর বা পদ্ধতি ঠিক কী হবে, তা নিয়ে।

চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ভারত কীভাবে ব্যবহার করবে, তা নির্ধারিত হলেও বাংলাদেশের জন্য ব্যবহারযোগ্য ভারতের কোনও বন্দর সেই তালিকায় ছিল না।

যৌথ বিবৃতিতে ছিল না ভারতের বিতর্কিত এনআরসি বা জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর প্রসঙ্গও।

এনআরসি-কে ভারত একদিকে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে বর্ণনা করে আসছে, অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ বিজেপি নেতারা অনেকেই হুমকি দিচ্ছেন এনআরসি-বাতিলদের বাংলাদেশে ডিপোর্ট করা হবে।

এই পটভূমিতে বাংলাদেশ চেয়েছিল এনআরসি নিয়ে তাদের উদ্বেগের কিছু নেই, এই আশ্বাসটা ভারতের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আসুক।

কিন্তু দু'দেশের যৌথ বিবৃতিতে অন্তত তার কোনও প্রতিফলন ঘটেনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037791728973389