ফি বাকি থাকায় পরীক্ষা দেওয়া হলো না

নিজস্ব প্রতিবেদক |

নাটোরের সিংড়া উপজেলায় পরীক্ষার ফি বাকি থাকায় একজন পরীক্ষা দিতে পারেনি। বুধবার (২৪ এপ্রিল) আবদুস সাত্তারের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভূগোল পরীক্ষা ছিলো। কিন্তু পনেরো শ টাকা ফি বাকি থাকার কারণে উপজেলার বিল হালতি ত্রিমোহনী ডিগ্রি কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই দিন তাকে প্রবেশপত্র দেয়নি। ঘটনাটি তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

জানা যায়, গত বুধবার থেকে  স্নাতক প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হয়েছে।  তাকে পরীক্ষা না দিতে দেয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে কলেজের দুই শতাধিক পরীক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিচারের দাবিতে সকালে কলেজের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। তাঁরা পরীক্ষা বর্জন করে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন।

বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্নাতক প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থী আবদুস সাত্তার পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য ১ হাজার ৮০০ টাকা জমা দেন। সম্প্রতি তিনি পরীক্ষার প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে গেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক মঞ্জুরুল আলম আরও পনেরো শ টাকা জমা দিতে বলেন। তবে আবদুস সাত্তার টাকা দিতে না পারায় তিনি ওই ছাত্রকে প্রবেশপত্র দেননি। সাত্তার কান্নাকাটি করলে ওই শিক্ষক অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা উপাধ্যক্ষ গোলাম সারোয়ারের নিষেধ আছে জানিয়ে প্রবেশপত্র দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, হতদরিদ্র ওই ছাত্র লেখাপড়ার পাশাপাশি চায়ের দোকানে কাজ করে সংসার চালান। প্রথম পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারায় তাঁর শিক্ষা জীবনের একটি বছর নষ্ট হয়ে গেল।

ঘটনাটি ইউএনও জানার পর গতকাল দুপুরে তিনি ওই কলেজে যান এবং পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে আবদুস সাত্তারকে গতকালের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেন।

কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, দরিদ্র ছাত্র আবদুস সাত্তারকে পরীক্ষা দিতে না দিয়ে কর্তৃপক্ষ অন্যায় ও অমানবিক কাজ করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

আবদুস সাত্তার বলেন, পনেরো শ টাকার জন্য শিক্ষাজীবন থেকে আমার এক বছর নষ্ট হয়ে গেল। পাঁচ মাস আগে মা মারা গেছেন। বাড়িতে অসুস্থ বাবা ও ছোট বোন রয়েছে। তার পড়ালেখার খরচও আমাকে জোগাতে হয়। এ অবস্থায় আমার পক্ষে এক বছর পর আর পরীক্ষা দেওয়া হয়তো সম্ভব না ও হতে পারে।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গোলাম সারোয়ার বলেন, আবদুস সাত্তার অনিয়মিত ছাত্র ছিল। তাকে পরীক্ষা দিতে না দেওয়ার বিষয়টি জানতাম না।

ইউএনও সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, ঘটনাটি শোনার পরপরই আমি কলেজে গিয়ে ওই ছাত্রের পরবর্তী পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। একই সঙ্গে পুরো ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছি। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030090808868408