বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমর্থনে ভিপি নুর

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

অতিরিক্ত জরিমানাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাড়তি ফি আদায়ের প্রতিবাদে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরকৃবি) শিক্ষার্থীরা। গত ২২ মে থেকে তারা আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। রোববারও তারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলন করেছেন। শিক্ষার্থীদের এই যোক্তিক আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ভিপি নুরুল হক নুর।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের এক স্ট্যাটাসে নুরুল হক নুর বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গাজীপুর) শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত দাবি-দাওয়ার আন্দোলনকে আমলে নিয়ে শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক আমরা খুব গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ, গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি, অতিরিক্ত ফি নেয়া বন্ধ, নানা অজুহাতে হয়রানিসহ শিক্ষার্থীদের মৌলিক দাবি-দাওয়ার মতো বিষয়গুলোর প্রতি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে শিক্ষার্থীরা আন্দেলনে নামতে বাধ্য হচ্ছে।’

নুর বলেন, ‘সমস্যা চিহ্নিত করে কর্তৃপক্ষের সামনে উপস্থাপন করা হলেও তা সমাধানে সেভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া কিংবা আন্তরিকতা চোখে পড়ে না। বরং নানা অপকৌশলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটা অপতৎপরতা থাকে যা খুবই দুঃখজনক।’

তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অতিদ্রুত শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত দাবি-দাওয়া মেনে নেয়ার আহ্বান জানান। গত ২০ মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘোষণা দেয়, কোনো শিক্ষার্থী ৮০ শতাংশের নিচে ক্লাসে উপস্থিত থাকলে তাকে জরিমানা দিয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসতে হবে।

ক্লাসে ৭০-৭৯ শতাংশ উপস্থিতি হলে দুই হাজার টাকা এবং ৬০-৬৯ শতাংশ উপস্থিতি হলে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। এরপরই আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। তবে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ জুন এক নোটিশের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জরিমানা বিষয়টি অধিকতর পর্যালোচনার জন্য স্থগিত করেছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, দেশের ১৩তম এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত কোর্স ক্রেডিট সিস্টেমে বছরে তিনটি টার্ম শেষ করে। প্রতিটি টার্ম শুরুর ১৭ দিনের মাথায় প্রথম মিড, প্রথম মিড শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মাথায় দ্বিতীয় মিড, আবার দ্বিতীয় মিড শেষ হওয়ার ২৭ দিনের মাথায় ফাইনাল পরীক্ষায় বসতে হয় শিক্ষার্থীদের। এই মিডের মধ্যেও শিক্ষার্থীদের ক্লাস, ল্যাব ক্লাস, কুইজ পরীক্ষা যথারীতি চলতে থাকে। পাশাপাশি ৮০ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত না থাকলে চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসতে দেয়া হয় না।

তারা আরও জানান, যেখানে চার বছরে ২৪০ ক্রেডিট পড়ার কথা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চিন্তাই করতে পারেন না, সেখানে স্নাতক পর্যায়ে চারটি অনুষদের মধ্যে কৃষি ও কৃষি অর্থনীতি অনুষদে চার বছরে ২৪০, ফিশারিজ অনুষদ ২৩০ এবং ভেটেরিনারি অনুষদ পাঁচ বছরে ২৮৩ ক্রেডিট পড়ানো হয়।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হয়েও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বছরে তিনটি টার্মের শুরুতে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছে প্রশাসন ফি বাবদ প্রায় ১২ হাজার টাকা নেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তিনটি দাবি উপস্থাপন করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

দাবিগুলো হচ্ছে-

১. ৮০ শতাংশ ক্লাসের উপস্থিতি ধরে যে জরিমানা ধরা হয়েছে, সেটি বাতিল করতে হবে এবং পরীক্ষা দেয়ার সর্বনিম্ন উপস্থিতির হার ৬০ শতাংশ করতে হবে।
২. অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মিল রেখে এনরোলমেন্ট ফি ১০০০-১২০০ টাকার মধ্যে রাখতে হবে।
৩. ২টি মিড পরীক্ষার একটি বাদ দিতে হবে এবং পরীক্ষার পর কোনো ক্লাস ল্যাব দেয়া যাবে না।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.004655122756958