বিক্রির চেষ্টা : নসিমন বোঝাই বিনামূল্যের বই ফেলে পালালেন শিক্ষক

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি |

যশোরের অভয়নগরে বিভিন্ন শ্রেণির বিনামূল্যের নতুন পাঠ্যবই ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর প্রতিরোধে বইগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। উপজেলারধোপাদি গ্রামের ধোপাদি দপ্তরীপাড়া শহিদুল্লাহ দাখিল মাদরাসার সাড়ে ১২ মণ বই বিক্রির উদ্দেশ্যে নসিমন বোঝাই করা হলেও এলাকাবাসীর তোপের মুখে তা ফেলে পালিয়ে গেছেন ওই মাদরাসার সহকারী শিক্ষক ইউনুস আলী।

ওই মাদরাসায় ৩০ জন শিক্ষার্থী থাকলেও এ বিপুল পরিমাণ সরকারি নতুন বই বরাদ্দ নিয়ে এলাকাবাসী প্রশ্ন তুলেছেন। 

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে ধোপাদি গ্রামের ধোপাদি দপ্তরীপাড়া শহিদুল্লাহ দাখিল মাদরাসায় ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। উদ্ধারকৃত বইগুলো উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে নেওয়া হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে ওই মাদরাসায় গিয়ে দেখা যায়, মাদরাসার মূল ভবনের সামনে প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ বিজ্ঞান, ইসলাম ধর্ম, নৈতিক শিক্ষা, কৃষি শিক্ষাসহ আরও অন্যান্য বিষয়ের বই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। পাশে একটি ওজন পরিমাপের ডিজিটাল মেশিনও রয়েছে। পাশেই আছে বই বোঝাই করা নসিমনটি।

এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সরকারি পাঠ্যবই বিক্রি করা হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। উদ্ধার করা বইগুলোর মধ্যে ২০১৯ ও ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের বিভিন্ন শ্রেণির নতুন বই রয়েছে। আনুমানিক সাড়ে ১২ মণ ওজন হলেও বইগুলোর প্রকৃত সংখ্যা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। জব্দকৃত বই উপজেলা শিক্ষা অফিসে নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বৃহস্পতিবার বেলা আনুমানিক ২টার সময় নতুন বইগুলো ওজন করে একটি নসিমনে ভর্তি করা হচ্ছিল। এসময় স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল হামিদ দপ্তরীর নেতৃত্বে এলাকাবাসী প্রতিরোধ করলে মাদরাসার সহকারী শিক্ষক ইউনুস আলী ও নসিমন চালক বইগুলো ফেলে পালিয়ে যান। 

এ ব্যাপারে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল হামিদ দপ্তরী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এই মাদরাসায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা সর্বমোট ৩০ জন। এখানে সরকার এত বই কিভাবে দিয়েছে প্রশ্ন তুলে  এ চক্রের সাথে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

সরকারি বই বিক্রির বিষয়ে মাদরাসার সহকারী শিক্ষক ইউনুস আলীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল্লাহ, মাদরাসার সুপার, সহকারী সুপারসহ  শিক্ষকদের সম্মতিতে বইগুলো বিক্রি করা হচ্ছিল। 

যদিও মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি শহিদুল্লাহ দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে দাবি করেন, তিনি বই বিক্রির বিষয়ে কিছুই জানেন না। মেয়ের অসুস্থতার কারণে এলাকার বাইরে রয়েছেন। যদি শিক্ষকরা জড়িত থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0022449493408203