ভিকারুননিসায় নববর্ষ উৎসব ফি’র নামে ৭৫ লাখ টাকা লুট

নিজস্ব প্রতিবেদক |

‘বাংলা নববর্ষ উৎসব ফি’ চালু করে ছাত্রীপ্রতি ৩০০ টাকা আদায় করেছে ভিকারুননিসা কর্তৃপক্ষ। এ হিসাবে স্কুলটির চারটি শাখার প্রায় ২৫ হাজার ছাত্রীর কাছ থেকে এ বাবদ ৭৫ লাখ টাকা আদায় করা হয়। তবে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, তাতে সবমিলিয়ে ৫ লাখ টাকাও খরচ হয়নি। বাকি ৭০ লাখ টাকাই ভাগবাটোয়ারা করে নেওয়া হয় বলে অবিযোগ পাওয়া গেছে।

নববর্ষ উৎসব ফি নামে কোনো খাতে অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা যায় কি-না- জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়াউল হক সাংবাদিকদের বলেন, এ ধরনের কোনো নির্দেশনা সরকারিভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া হয়নি। তবে বাঙালির সার্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখ উদযাপনের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল থেকেই তো এ ব্যয় নির্বাহ করার কথা।

অরিত্রি অধিকারীর আত্মহনন ও ছাত্রীদের আন্দোলনের পর ফের আলোচনায় এসেছে রাজধানীর স্বনামধন্য এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এ প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন যাবত চলতে থাকা অনিয়ম ও জঞ্জালের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন অভিভাবক ও ছাত্রীরা। তারা চান প্রতিষ্ঠানটি যেন নিয়মের মধ্যে চলে।

জানা যায়, আগে ভিকারুননিসায় নববর্ষ উৎসব ফি ছিল না। বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদে চলতি বছর এ ফি ধার্য করা হয় এবং অভিভাবকদের কাছ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে তা আদায়ও করা হয়। সম্প্রতি এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভিকারুননিসার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, তিনি এ বিষয়ে নিশ্চিত না হয়ে কথা বলতে পারছেন না।

অভিভাবকরা জানিয়েছেন নির্বিচারে তাদের পকেট টাকার কথা। তারা জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সেশন ফি ৯ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেওয়ায় ভিকারুননিসা কর্তৃপক্ষ কৌশলে বছরে দুই দফায় মোট ১৮ হাজার টাকা আদায় করে। এক অভিভাবক জানান, ২০০৮ সালে যখন তার এক মেয়েকে ভর্তি করেছিলেন তখন স্কুলের বেতন ছিল (ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি) ৩০০ টাকা। এক দশকে এখন তা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৩০০ টাকা। আগে কোনো পরীক্ষার ফি নেওয়া হতো না। এখন ৮০০ টাকা করে বছরে দু'বার পরীক্ষার ফি দিতে হয় ছাত্রীদের। এভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে অভিভাবকদের কাছ থেকে।

হাবিবুর রহমান নামের এক অভিভাবক জানান, জানুয়ারি মাসে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির সময় সরকার নির্ধারিত ৮ হাজার টাকা এবং মাসের বেতন ১ হাজার ১০০ টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু ফেব্রুয়ারি-মার্চের বেতন ২ হাজার ২০০ টাকার সঙ্গে উন্নয়ন ফিসহ বিভিন্ন নামে অন্তত ২ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

কোচিং ও সেশন ফির নামে অভিভাবকদের কাছ থেকে গলাকাটা ফি আদায়, নিয়োগে অনিয়ম, প্রতিষ্ঠানের তহবিল তছরুপ, ভর্তি দুর্নীতি, কেনাকাটায় লুপপাট, নিম্নমানের সহায়ক বই শিক্ষার্থীদের গছিয়ে দিয়ে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থেকে কমিশন গ্রহণসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

তবে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি গোলাম আশরাফ দাবি করেছেন, তারা সব কাজ বিধানের ভেতরে থেকেই করেছেন।

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029258728027344