মারামারি করায় ঢাবির সার্টিফিকেট বাতিল, দিশেহারা তালহা

ঢাবি প্রতিনিধি |

হলে মারামারির জের ধরে দুই বছর আগে সনদপত্র বাতিল করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের দর্শন বিভাগ ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আবু তালহার। পরবর্তীতে অন্যপক্ষের সঙ্গে আপোষ করা হলে হল প্রশাসন তার সনদপত্র ফিরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা ফেরত দেয়নি বলে অভিযোগ ওই শিক্ষার্থীর।

অন্যদিকে শেষ হয়ে যাচ্ছে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমাও। এ অবস্থায় সনদপত্র ফেরত না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ওই শিক্ষার্থী। 

জানা যায়, ২০১৭ সালের ১০ অক্টোবর আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টায় আবু তালহার ছোট ভাই আবু তাহের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসে। এসএম হলের ডায়নিং রুমে একই হলের আরেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির কারণে একপর্যায়ে তাদের মধ্যে বাক-বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি জানার পর তালহা সেখানে উপস্থিত হন এবং ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন।

একপর্যায়ে পেয়াজ কাটার ছুরি দিয়ে তিনি ওই শিক্ষার্থীকে আঘাত করেন। এরই জের ধরে উভয়পক্ষ শাহবাগ ও তেজগাঁও থানায় মামলা করেন। হলে মারামারির ঘটনায় ২০১৭ সালের ১৬ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিষদের মিটিংয়ে তালহার সনদপত্র বাতিলের সুপারিশ করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কমিটি তার সনদপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।

এ বিষয়ে আবু তালহা বলেন, ‘এর মাঝে আমি অনেক চাকরির পরীক্ষায় টিকেছি। কিন্তু সার্টিফিকেট না থাকায় আমি কোথাও ভাইভা দিতে পারিনি। আমার চাকরির বয়স রয়েছে আর মাত্র পাঁচ মাস। আগামী ১০ আগস্ট জনতা ব্যাংকের এইও পদে আমার ভাইভা রয়েছে। এছাড়া আর কোনো ভাইভা নেই। এ অবস্থায় সনদপত্র না পেলে আমার আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তালহার যার সঙ্গে মারামারি হয়েছিলো সেই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে যে সমস্যা হয়েছিলো, সেটি আমরা পরবর্তীতে মিটিয়ে ফেলি। মানবিক দিক বিবেচনা করে আমি তাকে ক্ষমা করে দেই এবং তার সনদপত্র ফেরত পাওয়ার জন্যে যতটুকু সম্ভব সাহায্য করেছি।’

এ বিষয়ে কথা বলতে হলের তৎকালীন প্রভোস্ট মাহবুবুল আলম জোয়ার্দ্দারকে ফোন দিলে তিনি এই ঘটনার বিস্তারিত মনে নেই বলে জানান। এসময় তিনি এ বিষয়ে খোঁজ নিতে হল অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন।

ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হলের হাউজ টিউটর অধ্যাপক ড. সাব্বীর আহমেদকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। তিনি বলেন, ‘দুই পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে আপোষ করা হয়। এরপর হল থেকে তালহার সনদপত্র ফেরত দেওয়ার সুপারিশ করা হয় ‘

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে তার সনদপত্র বাতিল করা হয়েছে। এরপর এই সিদ্ধান্ত বাতিলের নজির বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আপোষ হয়ে গেলে যদি ওই শিক্ষার্থীর সার্টিফিকেট ফেরত দেওয়ার কথা থাকে, তবে সে সার্টিফিকেট ফিরে পাবে। আমি কাগজপত্র দেখে এ বিষয়ে পরে জানাচ্ছি।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0056631565093994