যন্ত্রণার কোচিং থেকে মুক্তি দিন

সালমা |

ফরিদপুর শহরের সারদা সুন্দরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে বছরের প্রথম থেকেই শিক্ষকদের কোচিং ব্যবসা বেপরোয়াভাবেই চলছে। নিয়মিত ক্লাস শুরুর আগে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষেই কোচিং ব্যবসা চালানো হচ্ছে। তারা এর নাম দিয়েছেন সহায়ক ক্লাস। রোজার মাসে বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও কোচিং পুরোদমেই চলছে। কোচিং বাবদ প্রত্যেক ছাত্রীর কাছ থেকে মাসিক ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। আর এভাবে প্রতি মাসেই ছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে দশ লক্ষাধিক টাকা। প্রধানশিক্ষক মহোদয় নিজেই ঘোষণা করেছেন, যারা এই কোচিংয়ে আসবে না তারা বিদ্যালয়ের পরীক্ষায় নম্বর কম পাবে অথবা ফেল করবে।

বছরে দুটি পরীক্ষা নেওয়ার সরকারি ঘোষণা থাকলেও আমাদের বিদ্যালয়ে চারটি পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। যারা এই কোচিংয়ে আসতে পারছে না তাদেরকে ইচ্ছা করেই নম্বর কম  অথবা ফেল করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর যারা শিক্ষকদের কোচিংয়ে আসছে তারা পরীক্ষার খাতায় যাই লিখুক না কেন নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর এভাবেই সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে ছাত্রীদের কোচিংয়ে আসতে বাধ্য করা হচ্ছে। অথচ স্বেচ্ছায় কোনো শিক্ষার্থী এই কোচিংয়ে আসতে চায় না, কারণ যাঁরা কোচিং ক্লাস নেন তাঁরা কোনো বিষয়ই ঠিকমতো বোঝাতে পারেন না। শিক্ষকদের মধ্যে নীতি-নৈতিকতার চরম অবক্ষয়ের কারণে শিক্ষার্থী-অভিভাবক কেউই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়াতে আগ্রহী নয়। এ কারণেই শিক্ষকগণ বিদ্যালয়েই কোচিংয়ের ফাঁদ তৈরি করেছেন।

কোচিং ক্লাসের দ্বারা শিক্ষকগণ আর্থিকভাবে দারুণ লাভবান হলেও আমাদের শিক্ষাজীবনকে হুমকির মধ্যে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। কারণ কোচিং বা নিয়মিত ক্লাস কোথাও ঠিকমতো পড়ানো হয় না। আমাদের শিক্ষকদের কাছে বর্তমানে অর্থ উপার্জনই একমাত্র লক্ষ্য। লেখাপড়ার ক্ষেত্রে বাড়তি সাহায্যের জন্য আমরা ইচ্ছে করলেও আমাদের বা অভিভাবকদের পছন্দমতো কোনো ভালো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়তে পারছি না। কোচিং ও নিয়মিত ক্লাস করতে হলে একজন ছাত্রীকে সকাল সাতটা থেকে প্রায় বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত বিদ্যালয়েই থাকতে হয়; অথচ তেমন কিছুই পড়ানো হচ্ছে না। এভাবে আমাদের জ্ঞানার্জনের পথ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকদের এই ব্যবসানির্ভর শিক্ষাব্যবস্থার ফলে  আমাদের শিক্ষাজীবনকেই ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

অতএব, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আমাদের আকুল আবেদন এই যে, আমাদেরকে এই অনৈতিক কোচিং থেকে মুক্তি দিন। আমাদের সঙ্গে শিক্ষকদের এই প্রতারণা আমরা আর সহ্য করতে পারছি না। আমরা আশা করি কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে এই অসহায় শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াবেন।

 

সারদা সুন্দরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, ফরিদপুর


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026328563690186