যৌ*ন হয়*রানির ঘটনায় ভিকারুননিসায় তোলপাড়

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিশুশিক্ষার্থীদের প্রাইভেট কোচিংয়ে নিয়ে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ঘটানায় একটি প্রাথমিক তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ। নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তার নিশ্চয়তা চান অভিভাবকরা।

অভিযোগ ওঠা শিক্ষকের নাম মুরাদ হোসেন সরকার। তিনি আজিমপুর শাখার গণিতের শিক্ষক।

জানা গেছে, যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের বিচার চেয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর শাখার প্রধান সাবনাজ সোনিয়া কামালের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন কয়েকজন অভিভাবক। সেখানে তারা সন্তানদের সঙ্গে ঘটা যৌন হয়রানির ঘটনার বিবরণ দিয়ে অভিযুক্ত মুরাদের যথোপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন। সেই অভিযোগপত্র যায় ভিকারুননিসার অধ্যক্ষের কাছে। পরদিন অধ্যক্ষ তিন সদস্যের প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির আহ্বায়ক আইসিটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মমতাজ বেগম। সদস্য পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ফারহানা খানম ও ইংরেজি প্রভাতী শাখার শাখাপ্রধান শামসুন আরা সুলতানা।

তবে কমিটি গঠনের পরপরই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা, ভুক্তভোগীদের ‘ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল’ করা ও ডেকে এনে হুমকি-ধমকি দিয়ে মুখ বন্ধের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্ত শিক্ষক, তদন্ত কমিটির সদস্য এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত শিক্ষক মুরাদ হোসেন সরকার বলেন, কারও বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হলে এসব অভিযোগই সামনে আনা হয়। বাচ্চারা আমার কাছে বেশি প্রাইভেট পড়ছে, এটি অনেকের পছন্দ হচ্ছে না। সে কারণে তাদের পরিচিতরাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সব জায়গায় লেখালেখি করছে। একটি পক্ষ এসব করছে, যেখানে ভিকারুননিসার শিক্ষকরাও জড়িত। কোনো পক্ষ জানতে চাইলে তিনি কোনো জবাব দেননি। হুমকি ও প্রভাব বিস্তারের বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেন।

অভিযোগ দেওয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ডেকে এনে হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগ আছে ফারহানা খানমের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি পক্ষ শক্ত কোনো প্রমাণ দাঁড় করাতে না পেরে এসব অভিযোগ দিচ্ছে। এমন হলে প্রয়োজনে আবার তদন্ত হবে।

ভিকারুননিসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে প্রাথমিক তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেয়েছি। এখন অনলাইনে গভর্নিংবডির জরুরি সভা ডাকা হবে। প্রতিবেদন থেকে কোনো তথ্য পেলে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নয়তো আরেকটু তদন্তের প্রয়োজন হতে পারে।

ভিকারুনিসার এ ঘটনার কয়েকদিন পর গত ১২ ফেব্রুয়ারি অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী একটি কমিটি গঠন করেন। সেখানে লেখা রয়েছে—প্রতিষ্ঠানে বাল্য বিবাহ, ইভটিজিং, যৌন হয়রানি, মাদক ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধে মাউশির নির্দেশনা পাওয়া গেছে। সে মোতাবেক ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে একটি কেন্দ্রীয়

উপ-কমিটি গঠন করা হলো। কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয় গভর্নিংবডির সদস্য মৌসুমী খানকে, সদস্য হিসেবে রয়েছেন—ড. ফারহানা খানম, চাঁদ সুলতানা ও রুবীনা তাসমীন। কমিটিতে শাখাপ্রধানদেরও সদস্য করা হয়েছে।

ওই কমিটি গঠনের বিষয়ে কিছুই জানেন না কমিটির আহ্বায়ক মৌসুমী খান। তিনি বলেন, এখনও জানি না যে, আমাকে কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে। গভর্নিংবডির কেউই আমাকে জানাননি। দুজন শিক্ষক প্রতিনিধির কাছ থেকে অনেক পরে বিষয়টি জেনেছি। এ কমিটি কবে মিটিং করবে তা-ও জানা নেই।

১২ ফেব্রুয়ারির কমিটির বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী বলেন, এটি সম্পর্কে সবাই হয়তো জানেন। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। এখন আর ওই কমিটিতে এই বিষয় (মুরাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ) যাবে না, কারণ অভিভাবকরা বিষয়টি নিয়ে ক্ষেপে গেছেন। এ কারণে কালক্ষেপণ করব না।

ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিংবডির সভাপতি সাবিরুল ইসলাম ব্যস্ত আছেন বলে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু ২৬ মে - dainik shiksha একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু ২৬ মে ভর্তি পরামর্শ: কলেজ পছন্দ জরুরি - dainik shiksha ভর্তি পরামর্শ: কলেজ পছন্দ জরুরি শিক্ষা ক্যাডারের নির্বাচনী হাটে এমপিও শিক্ষকের কপাল ফাটে - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারের নির্বাচনী হাটে এমপিও শিক্ষকের কপাল ফাটে অন্ত*র্বাসে লুকানো ডিভাইস, ১০ মিনিটেই শেষ পরীক্ষা - dainik shiksha অন্ত*র্বাসে লুকানো ডিভাইস, ১০ মিনিটেই শেষ পরীক্ষা ১৩ শিক্ষকের ১৪ শিক্ষার্থী, সবাই ফেল - dainik shiksha ১৩ শিক্ষকের ১৪ শিক্ষার্থী, সবাই ফেল সনদ জালিয়াতিতে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে - dainik shiksha সনদ জালিয়াতিতে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সুখবর - dainik shiksha এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সুখবর please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024349689483643