শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ, নেপথ্যে কোচিং বাণিজ্য!

সিংড়া ( নাটোর) প্রতিনিধি |

সিংড়ায় বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের গণিত বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে অভিযোগের সত্যটা খুঁজতে বেড়িয়ে এসেছে অন্তরালের খবর। একজন ভালো শিক্ষকের নামে এমন অভিযোগ করায় করায় ক্ষোভ বিরাজ করছে অভিভাবক মহলে। 

জানা যায়, গত ১১ এপ্রিল বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের গণিত বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে নবম শ্রেণির ১৩ জন শিক্ষার্থী ও ১১জন অভিভাবক স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে দেয়া হয়। এ নিয়ে দু একটি পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার ভূমিকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ছাত্র-ছাত্রী প্রায়  ৮০০ জন। অভিযুক্ত ফজলুর রহমান ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে এ প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। 

সম্প্রতি সিংড়া পৌরসভার মাদরাসা মোড় এলাকায় গড়ে উঠেছে দ্বিমিক কোচিং সেন্টার। সরকারিভাবে কোচিং বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও সেখানে চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। পৌরসভার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এই কোচিং সেন্টারে পড়াশোনা করে। অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ এই কোচিং সেন্টারে পড়ে। 

জানা যায়, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ড্রাফট ওই কোচিং সেন্টারের এক পরিচালকের পরামর্শে করা হয় এবং তিনিই নিজের কোচিং সেন্টারের স্বার্থে একজন ভালো শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ লিখে দেন। এখানেই অভিভাবকদের উদ্বুদ্ধ করেন তিনি। এদিকে বিয়ামের পাশেই অবস্থিত একটি অক্সফোর্ড কিন্ডার গার্টেন স্কুলের অধ্যক্ষ এক সাংবাদিকের সাথে গোপন বৈঠক করেন। 

কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক ও অভিভাবকের সাথে আলাপকালে তারা জানান, ফজলুর রহমান একজন ভালো মানের শিক্ষক, তার বিরুদ্ধে কখনো কোনো অভিযোগ তাদের কেউ দেয়নি। তবে হঠাৎ করে শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ এমন অভিযোগগুলো তাদের কাছে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। 

অভিযুক্ত শিক্ষক ফজলুর রহমান জানান, নবম শ্রেণির ক্লাস পরীক্ষা শুরুর সময় কিছু শিক্ষার্থীদের আচরণ দৃষ্টিগোচর হয়। পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য পিছনের দু বেঞ্চের শিক্ষার্থীদের অপর সাইডে আসতে বলি। কিন্তু তারা না এসে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরে পাশের রুমের দায়িত্বরত ম্যাডামকে ডেকে নিয়ে আসি। কিন্তু ১০ মিনিট পর সাদা খাতা জমা দিয়ে তারা চলে যেতে চায়। পরে শুনলাম ওই শিক্ষার্থীরাই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। তিনি বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।

দ্বিমিক কোচিং সেন্টারের পরিচালক মারুফ ওলি তিলক বলেন, কোনো একটা ভুল হচ্ছে। আমি শারীরিক ভাবে একটু অসুস্থ। পরে কথা বলব। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আজিজুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দেয়া হয়। এর বেশি কিছু জানাতে তিনি অপারগ প্রকাশ করেন। 

দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার সিংড়া প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দেয়া অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদ ছাপানো হয়েছে। তবে যৌন হয়রানির কোনো প্রমাণ তার কাছে নেই। 

সহকারী কমিশনার ভূমি বিপুল কুমার জানান, তদন্ত করা হচ্ছে। আশাকরি সত্যটা বেড়িয়ে আসবে।

উপজেলা নিবার্হী অফিসার সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, সহকারী কমিশনার ভূমিকে কঠোর ভাবে বলা আছে। তদন্ত শেষে দোষীর/দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই - dainik shiksha একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই অবসর কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার ফের তাগিদ - dainik shiksha অবসর কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার ফের তাগিদ সুধা রানী হাদিসের শিক্ষক পদে : এনটিআরসিএর ব্যাখ্যা - dainik shiksha সুধা রানী হাদিসের শিক্ষক পদে : এনটিআরসিএর ব্যাখ্যা শরীফ-শরীফার গল্প বাদ যাচ্ছে পাঠ্যবই থেকে - dainik shiksha শরীফ-শরীফার গল্প বাদ যাচ্ছে পাঠ্যবই থেকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক এক রুমে ৩৫ ছাত্রী অসুস্থ, পাঠদান বন্ধ - dainik shiksha এক রুমে ৩৫ ছাত্রী অসুস্থ, পাঠদান বন্ধ যৌ*ন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কারাগারে - dainik shiksha যৌ*ন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কারাগারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0058999061584473