নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনার মামলায় জাতীয় পার্টির সাংসদ সেলিম ওসমানকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। এ মামলার অপর আসামি অপুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম এ কে এম ইমদাদুল হক এ আদেশ দেন।
এর আগে আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেন, শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে জনরোষ থেকে বাঁচানোর জন্য ওই কাজ করতে বাধ্য হয়েছিলেন সেলিম ওসমান। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার কোনো উপাদান নেই বলে অব্যাহতি আবেদন জানানো হয়।
রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, এই ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী বিচারবিভাগীয় তদন্তে উঠে আসে সেলিম ওসমানের নাম। অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় সেলিম ওসমান এবং অপুর বিরুদ্ধে জুডিশিয়াল প্রতিবেদন দেওয়া হয়। অভিযোগ গঠনের মতো উপাদান রয়েছে বলে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন জানায়। দুই পক্ষের শুনানি শেষে সেলিম ওসমানকে অব্যাহতি দিয়ে অপর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ১৩ মে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কান ধরে ওঠবস করানো হয়। এ সময় স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমান উপস্থিত ছিলেন। পরে শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। এ ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সাংসদ সেলিম ওসমানের কঠোর সমালোচনা করেন।
শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় সেলিম ওসমান জড়িত কি না, সে বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে হাইকোর্ট প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠান। ১৪ মে সেলিম ওসমান এই আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।
এর পর ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ১০ আগস্ট শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে কান ধরে উঠবস করানোর ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান জড়িত কি না-সে বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।