শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, শিক্ষার্থীরা ঘরে নেই

অধ‍্যক্ষ আবুল বাশার হাওলাদার |

করোনাভাইরাস বিশ্বব‍্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ায় দীর্ঘ ৫ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে অন‍্য দেশের মতো বাংলাদেশেও।  কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে এমন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী অলস সময় কাটাচ্ছে যাদের পদচারণায় এক সময় মুখরিত হতো শিক্ষাঙ্গন। আজ শূন্য ভিটায় পরিণত হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। পড়ালেখায় স্থবিরতা, অনিশ্চয়তা নেমে এসেছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। যদিও অনলাইনে পাঠদান প্রক্রিয়া চলছে বেশ করেই। এখানে যুক্ত হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী। বাকিরা পড়ালেখার বাইরে আছে।

অনলাইনে যুক্ত হওয়া শিক্ষার্থীরাও অনেকটা পিছিয়ে। তাছাড়া চলমান টেলিভিশনের মাধ্যমে পাঠদান প্রক্রিয়া তেমন একটা সুফল পাচ্ছে না। তারপরও বিকল্প পদ্ধতি মোটামুটি এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এখন প্রশ্ন স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে কখন?

৩১ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। অনেকে মনে করছেন ১ সেপ্টেম্বর থেকে খুলতে পারে। ইতোমধ্যে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়ে গেছে। সেপ্টেম্বরে, অক্টোবরে, নভেম্বরে বা এ বছর আদৌ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে কি না এ নিয়ে নানা মন্তব্য, বিবৃতি, সংবাদ পরিবেশন আবার অস্বীকার এমন চলছে। হতাশায় আছেন সাধারণ মানুষ। তাছাড়া অভ‍্যন্তরীণ ও বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে কি না এ নিয়েও নানা কথা হচ্ছে। বিভিন্ন লাইভ টক শো, পত্রিকায় লেখালেখি চলছে পক্ষে বিপক্ষে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

যদি বর্তমান দুর্যোগ পরিস্থিতির উন্নতি না হয় তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা ও পরীক্ষা নিয়ে নেতিবাচক সিদ্ধান্ত আসতে পারে। আমার প্রশ্ন, কতদিন এ অচলাবস্থা বিরাজ করবে? সকলের সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে, তারা কিন্তু ঘরে বসে নেই। তাদের দেখা যায় মার্কেটে, হাট-বাজারে, বিনোদন কেন্দ্রে, রাস্তাঘাটে ঘোরাঘুরি করতে। তারা কোনো স্বাস্থ‍্যবিধি মানছে না। এমনকি বাবা-মারা ও তাদের ছোটো বাচ্চাদের নিয়ে ইচ্ছে মতো বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন। বরঞ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দিলে একদিকে পড়ালেখা নিয়মিত হতো, অন্যদিকে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য  ভালো থাকত। কতদিন ঘরে বসে থাকা যায়?

এইচএসসি পরীক্ষা সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি শুরু করা যায়। অন‍্যান‍্য পরীক্ষা যথাসময়ে নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়-সহ সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা উচিত সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ থেকে। তবে এজন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাস্থ্যকর নিরাপদ ক‍্যাম্পাস নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ নির্দেশনার প্রয়োজন হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে শধু পড়ালেখার জন‍্য নয়, শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন‍্য। অন‍্যত্র যেমন স্বাস্থ‍্যবিধি মেনে চলে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আরও কঠোর নিয়ম পালন করলে সমস‍্যা হওয়ার কথা নয়। শিক্ষার্থীরা তাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠানে আসার জন‍্য ব‍্যাকুল হয়ে আছে, প্রতীক্ষায় আছে কখন আসবে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। আবার ঘণ্টা বাজবে, জাতীয় সংগীত পরিবেশন হবে, কোলাহলে শূন্যতার হাহাকার ঘুচবে সেই অপেক্ষায় আমাদের শিক্ষার্থীরা সময় গুনছে। ধন‍্যবাদ সবাইকে। 

লেখক : অধ‍্যক্ষ আবুল বাশার হাওলাদার, সভাপতি, বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025620460510254