শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো নিজেদের কর্মোপযোগী করে গড়ে তোলা

মো. আলমগীর |

আমরা ঔপনিবেশিক আমলে ছিলাম ১৯০ বছর। পরবর্তীতে ২৩ বছর পাকিস্তান আমাদের শাসন করেছে। এরপর আমরা স্বাধীন হয়েছি। আমাদের যারা শাসন করেছে, তারা কখনো চায়নি এই দেশটা উন্নত হোক কিংবা এদেশের মানুষ সুখী-সমৃদ্ধ হোক। সেজন্য এখন আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা যেমন থাকার কথা ছিল, তেমনটা ঘটেনি। প্রচুর ছেলেমেয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি নিলেও কর্মমুখী শিক্ষা নিচ্ছে না। অথচ শিক্ষার উদ্দেশ্যই হলো নিজেদেরকে কর্মোপযোগী করে গড়ে তোলা। উন্নত দেশের বেশিরভাগ মানুষ মাস্টার ডিগ্রি পাস করার প্রয়োজন মনে করেন না, প্রথমত সেটা ব্যয়বহুল, দ্বিতীয়ত প্রচুর পড়াশোনা করতে হয় এবং তৃতীয়ত সরকারের ভর্তুকি থাকে না বললেই চলে।

সেখানে যারা দেশ পরিচালনা করবে বা গবেষণা করবে, শিক্ষক হবে তারাই সাধারণত উচ্চশিক্ষা নিয়ে থাকেন। অন্যরা কারিগরি শিক্ষা নেয়, দ্রুত কর্মক্ষেত্রে ঢুকে পড়ে। সেসব দেশে মাস্টার ডিগ্রিধারী আর ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীর মধ্যেও খুব একটা তফাত্ নেই। কেউ কাউকে ছোট করে দেখে না। অস্ট্রেলিয়াতে টেকনিক্যাল পড়াশোনাতে নম্বর বেশি সাধারণের তুলনায়। ওখানে যারা কারিগরি কাজে দক্ষ, তাদেরকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ভিসি খুব অকপটে গর্ব করে বলেন উনার স্বামী একজন ইলেকট্রিশিয়ান। এ কথাও সত্যি যে সেখানে এসব পেশায় আয় বেশি। কিন্তু আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে আমরা এধরনের পেশাজীবীদেরকে অল্পশিক্ষিত বা নিম্নমানের মনে করি। এই মনমানসিকতা পরিবর্তনের জন্য সময় প্রয়োজন।

তবে বর্তমানে সরকার যেহেতু এই পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে, তাই কারিগরি শিক্ষার অনেক প্রকল্প অগ্রসর হয়েছে। সমাজের উচ্চপর্যায় থেকে নিম্নপর্যায়েও সবাই বুঝতে পেরেছে আমাদের কারিগরি শিক্ষায় দক্ষতা বাড়াতে হবে। আমরাও আশা করছি, সবাই দ্রুত কারিগরি শিক্ষার আওতায় চলে আসবে। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা যে ধনী দেশের স্বপ্ন দেখছি, তার জন্য কারিগরি শিক্ষা খুব জরুরি। কারণ এজন্য আমাদের আয় বাড়া প্রয়োজন, আর কারিগরি কর্মদক্ষতা না বাড়ালে আয় বাড়ানো যাবে না। সুতরাং উন্নত দেশে পরিণত হতে কারিগরি শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।

 

লেখক: সচিব, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026040077209473