সরকারিকৃত কলেজের জনবল আত্তীকরণ প্রসঙ্গ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং বৈষম্য দূর করতে ৩০২টি কলেজ সরকারি করার দূরদর্শী আদেশ জারির বয়স ৪ বছর ছুঁইছুঁই করছে। সরকারিকৃত কলেজ-শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা এবং প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের জিও জারির বয়সও আগস্টে ২ বছর পূর্ণ হবে। কিন্তু শিক্ষক-কর্মচারীদের ভাগ্যে সরকারি সুযোগ-সুবিধা এখনো জোটেনি। ইতিমধ্যে অনেকে অবসরে চলে গেছেন আর অনেকেই অবসরে যাওয়ার মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন। জাতীয় দৈনিকে এ নিয়ে বিস্তর লেখালিখি হয়েছে।  বুধবার (৫ আগস্ট) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।

চিঠিতে আরও জানা যায়, এ নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। গত ১৩.০১.২০২০ তারিখে প্রকাশিত ‘আত্তীকরণে বিলম্ব, ক্ষোভ শিক্ষক-কর্মচারীদের’ শীর্ষক প্রতিবেদনে জনবল আত্তীকরণে বিলম্বের কারণ ভেঙে বলা হয়েছে এভাবে—‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা ও আত্তীকরণের অপেক্ষায় থাকা শিক্ষকদের অভিযোগ যাঁরা আত্তীকরণ এবং এসব শিক্ষকের ক্যাডারভুক্ত হওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন তাঁরাই এখন আত্তীকরণের জন্য যাচাই-বাছাই করছেন। তাঁরা ইচ্ছে করেই যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ভুল করছেন। ধীরগতিতে কাজ করছেন। এ কারণেই আত্তীকরণে বিলম্ব হয়েছে এবং হচ্ছে।’ আবার বিদ্যমান যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় এমন সব কাগজপত্র চাওয়া হচ্ছে তার সবগুলি সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের কাছে বা প্রতিষ্ঠানে না থাকা স্বাভাবিক। প্রতিষ্ঠান কেবলমাত্র ঐসব কাগজ সংরক্ষণ করে যা কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর-সুবিধা পাওয়া এবং পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক নিরীক্ষার জন্য প্রয়োজন হয়।

বিশ-পঁচিশ বছর আগে নিয়োগ পাওয়া একজন শিক্ষকের কাছে ডিজি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি মনোনয়নের কপি, নিয়োগ পরীক্ষার নম্বরপত্র বা স্মারক বহি না থাকারই কথা। এখন এসব কাগজ যাচাই-বাছাই করে ত্রুটি-বিচ্যুতি খোঁজা কতটা যৌক্তিক তা বিবেচ্য। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিয়োগে ক্ষেত্রবিশেষে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি যে নেই তা জোর দিয়ে বলা যাবে না। তবে গুরুতর যদি কোনো সমস্যা থেকেই থাকে তাহলে তাঁরা কিভাবে এমপিওভুক্ত হলেন? এমপিওভুক্তির আগেই তো সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের নিয়োগসংক্রান্ত প্রামাণ্য কাগজপত্র মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক যাচাই হওয়ার কথা। তাই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আত্তীকরণ হতে কোনো বাধা থাকতে পারে না। সদ্য সরকারি হওয়া কলেজের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা মোটেই কষ্টসাধ্য ব্যাপার নয়।

যেভাবে নতুন জাতীয় বেতন স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, ঠিক সেভাবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা দিলে অসুবিধা কোথায়? এক্ষেত্রে সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেও যাচাই-বাছাই এবং আনুষঙ্গিক কাজ চলতে পারে। তবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আগে বড়োজোর শর্ত আরোপ করা যেতে পারে—১. সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের পদটি নিয়োগকালীন সময় শূন্য এবং জনবল কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত না থাকলে, ২. সংশ্লিষ্ট পদের নিয়োগপ্রক্রিয়া যথাযথ না হলে এবং ৩. এমপিওভুক্তিতে অসত্য তথ্য সরবরাহ করা হলে তাকে প্রদানকৃত বেতনভাতা ফেরত দিতে হবে। একটি প্রতিষ্ঠানের দুই-একজন শিক্ষকের উল্লিখিত দোষ থাকলেও থাকতে পারে, কিন্তু সেজন্য বাকি শিক্ষকেরা যাচাই-বাছাইয়ের যাঁতাকলে পড়ে পিষ্ট হবেন তা কোনো অর্থেই কাম্য হতে পারে না। পরিশেষে, সরকারি সুবিধা প্রদান কার্যক্রম দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে শিক্ষক-কর্মচারীদের মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেওয়া সমীচীন বলে মনে করি।


লেখক : মাহবুবুল হক ইকবাল, দক্ষিণ আলেকান্দা, বরিশাল


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025088787078857