সরকারিকৃত স্কুল শিক্ষকের জাল সনদ নিয়ে তোলপাড়!

নিজস্ব প্রতিবেদক |

চাঁদপুরের সরকারিকৃত শাহরাস্তি বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জাকির হোসেনের জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সুক্ষ্ম কারচুপী করে তৈরি করা জাল সনদটি বিভ্রান্ত করেছে স্বয়ং এনটিআরসিএর কর্মকর্তাদের। তবে, অবশেষে কাগজপত্র ঘেঁটে শিক্ষকের সনদটি জাল বলে প্রমাণ পেয়েছে এনটিআরসিএ। সোমবার (৫ এপ্রিল) এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, চাঁদপুরের শাহরাস্তি সরকারি বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জাকির হোসেন জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদ নিয়ে চাকরি করছিলেন। পরে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৬ নভেম্বর তার সনদটি যাচাইয়ের জন্য এনটিআরসিএতে পাঠানো হয়। পরে গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর তার সনদটি জাল বলে যাচাই প্রতিবেদন দেয় এনটিআরসিএ। তিনি স্বাক্ষর জাল করে সনদ তৈরি করেছিলেন বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছিল এনটিআরসিএ। কিন্ত পরে ওই শিক্ষক তার সনদটি সঠিক বলে দাবি করেন। তিনি জানান, ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তিনি।

এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষক জাকির হোসেন তার সনদটি সঠিক বলে দাবি করার পর যাচাইয়ের সময় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষকের সনদ যাচাই করে দেখা গেছে, ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে উত্তীর্ণ জাকির হোসেন নামে অপর এক প্রার্থীর সনদ পাওয়া গিয়েছে। তবে সেটি শাহরাস্তি বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জাকির হোসেনের সনদ নয়। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে এনটিআরসিএর সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, কাগজপত্র যাচাই করে আমরা দেখতে পাই ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে ওই শিক্ষকের নাম ও পিতার নামে উত্তীর্ণ একজন প্রার্থী আছে, তবে ওই প্রার্থী জাকির হোসেন নন। জাকির হোসেন দাবি করেছেন তিনি, ঢাকা বোর্ড থেকে সনদটি নিয়েছেন। তবে, ঢাকা বোর্ডের রেজিস্ট্রারে দেখা গেছে, জাকির হোসেন সনদটি এখনো বিতরণ করা হয়নি। উত্তীর্ণ প্রার্থী সনদটি সংগ্রহ করেনি।

তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও বলেন, শিক্ষক জাকির হোসেন যে সনদটি দাখিল করেছেন তা জাল। কারণ শাহরাস্তি স্কুলের শিক্ষক জাকির হোসেনই যে ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে উত্তীর্ণ প্রার্থী তার কোন প্রমাণ দিতে পারেননি। তার কাছে অ্যাডমিট কার্ড বা পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কাগজ চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি কোন প্রমাণক কাগজ জমা দিতে পারেননি। 

তাজুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও বলেন, তথ্য বিশ্লেষণ করেও এনটিআরসিএ প্রমাণ পেয়েছে যে জাকির হোসেন নিবন্ধিত প্রার্থী নন। তিনি যদি প্রকৃত প্রার্থী হতেন তাহলে শিক্ষা বোর্ড থেকে তার প্রকৃত সনদটি সংগ্রহ করতেন। কিন্তু তিনি তা না করে একটি জাল সনদ তৈরি করেছেন। এনটিআরসিএর ডাটাবেসে সংরক্ষিত প্রার্থীর ফল ও শিক্ষকের জমা দেয়া সনদে ফলেও গরমিল আছে। যেহেতু শিক্ষক জাকির হোসেন নিজেকে প্রকৃত প্রার্থী বলে কোন প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি তাই তার সনদটি জাল বলে নিশ্চিত হয়েছে এনটিআরসিএ। তাই, জালসনদধারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিয়ে চিঠি আজ স্কুলের প্রধান শিক্ষককে পাঠানো হয়েছে। 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025720596313477