সরকারি কলেজের শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্ত্রীর নির্যাতন মামলা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি |

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া সরকারি কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আছমত আলীর বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, দীর্ঘদিন থেকে নানা অজুহাতে স্ত্রীকে নির্যাতন করে আসছিলেন তিনি। নির্যাতন সইতে না পেরে অবশেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল পঞ্চগড়ে মামলা করেছেন  তার স্ত্রী নুর বানু।   

মামলা ও অভিযোগে জানা যায়, ২০০৫ সালের ১০ অক্টোবর আছমত আলীর সাথে নুর বানুর বিয়ে হয় । বিয়ের পর নুরবানু বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকে চাকরি করার কারণে কুড়িগ্রামে বসবাস করতেন।  সেখানেই চলছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। কিছুদিন পরেই শুরু হয় ৫ লাখ টাকার যৌতুক চেয়ে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন। এর মধ্যে দাম্পত্য জীবনে জন্ম নেয় আফিয়া জাহিন স্মিতা ও আহনাফ রাশীদ নাইফ নামে দুই সন্তান। যৌতুকের জন্য নির্যাতনের জন্য ২০০৯ সালে কুড়িগ্রামে থাকাকালীন অবস্থায় স্বামীর বিরুদ্ধে চিলমারী থানায় একটি নারী ও শিশু মামলা করেন নুর বানু। সে মামলায় বেশ কিছু দিন জেল খাটেন আছমত আলী । পরে আপোষ-মীমাংসার মাধ্যমে মামলাটি নিস্পত্তি করা হয়। 

এরপর আবার যৌতুকের চাপ সৃষ্টি করেন ওই শিক্ষক। ২০১৩ সালের ৭ জুলাই তেঁতুলিয়া নির্বাহী অফিসার বরাবর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন স্ত্রী। আবারও মিমাংসা হয় । কিন্তু চলতি বছর আবার শুরু করেন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। গত ১৭ ফেব্রুয়ারী এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি মীমাংসা করেন। কিন্তু  ২৮ মার্চ যৌতুকের জন্য স্ত্রী নুর বানুকে আবার মারধর ও প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন আছমত আলী। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে। চিকিৎসার জন্য তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে আদালতে মামলা করেন। মামলার পর থেকে স্বামী আছমত আলী পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে।

নুর বানু জানান, কতোটা নির্যাতন হলে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করে স্ত্রী। বিয়ের ১৬ বছর ধরে যৌতুক লোভী স্বামীর নির্যাতন সয়ে আসছি। দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মুখ বুজে সয়ে এসেছি। কিন্তু এখন আর পারছি না। সর্বশেষ আমার ৫০ হাজার টাকা নিয়ে উল্টো আমার ভাইয়ের নামে চুরি অপবাদ দিয়ে নির্যাতন চালায়। তাই উপায়ন্তর না পেয়ে বাধ্য হয়েই আদালতে মামলা করেছি। এখন মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করছে সে। 

এ বিষয়ে আছমত আলী সাংবাদিকদের জানান, স্ত্রীর বিরুদ্ধে তারও অভিযোগ রয়েছে। নারী নির্যাতন দেখা গেলেও পুরুষ নির্যাতনতো দেখা যায় না। যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতনের যে অভিযোগ তুলে আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সে ঘটনা পুরোপুরি মিথ্যা-বানোয়াট। বরঞ্চ তাকে বিয়ে করার পর থেকে দিনের পর দিন পুরুষ নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছি আমি। গত ৯ মার্চ সোনালী ব্যাংক থেকে ৮ লাখ টাকা লোণ করি। সেই টাকা দিয়ে গ্রামের বাড়িতে বাড়ি করবো ও দুটো অটোরিকশা কিনে ভাড়া দেয়ার পরিকল্পনা করি। কিন্তু আমার স্ত্রী সেই টাকা দিয়ে তার নিজের জমিতে ঘর করে দেবার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এ নিয়ে আমার উপর সীমাহীন মানসিক নির্যাতন চালায়। সর্বশেষ আমার স্ত্রী আমার বাসা থেকে ৫০ হাজার টাকা চুরি করে তার ছোট ভাই রাকিবুল ইসলাম শোভনের দ্বারা বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এরপরও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা। 

মামলাটির তদন্ত দায়িত্বে রয়েছেন মডেল থানার পুলিশের এসআই দীনবন্ধু রায় । তিনি জানান, তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে তদন্ত কার্যকম চলছে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026638507843018