সশস্ত্র বাহিনীর পদোন্নতিতে উপযুক্ত কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার দিন : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ব্যক্তিগত পছন্দের ঊর্ধ্বে থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সততা, দক্ষতা, পেশাদারিত্বকে অগ্রাধিকার দিয়ে ন্যায়নীতির ভিত্তিতে সশস্ত্র বাহিনীতে পদোন্নতি দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাচনী পর্ষদের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ওপর নিজের আস্থা রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন,এটুকু অনুরোধ করবো ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের ঊর্ধ্বে উঠে উপযুক্ত কর্মকর্তারা যাতে প্রমোশনটা পায়।

সোমবার (সেপ্টেম্বর ৭) সশস্ত্র বাহিনী পর্ষদ ২০২০ (১ম পর্ব) এ দেওয়া বক্তব্যে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাসদর, নৌবাহিনী সদর দপ্তর ও বিমান বাহিনী সদর দপ্তরের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে সশস্ত্র বাহিনী পর্ষদ ২০২০ (১ম পর্ব)- এ অংশ (ভার্চ্যুয়াল) নেন।

সশস্ত্র বাহিনী পর্ষদের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সশস্ত্র বাহিনী নির্বাচনী পর্ষদে আপনারা সব জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা একত্রিত হয়েছেন। আপনাদের প্রজ্ঞা, আপনাদের বিচার-বুদ্ধি, আপনাদের ন্যায়পরায়ণতার ওপর আমরা যথেষ্ট আস্থা আছে। আমি এটুকু অনুরোধ করবো এসব ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের ঊর্ধ্বে উঠে উপযুক্ত কর্মকর্তারা যাতে প্রমোশনটা পায়।

‘আপনারা ন্যায়নীতির ভিত্তিতে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে এই প্রমোশন দেবেন। যাতে সবার ভেতরে একটা আস্থা আসে। আমি জানি অনেকে উপযুক্ত, তবে সবাইকে দেওয়া যায় না। কারণ পদটা সীমিত। তারপরও আপনারা অবশ্যই দেখবেন যারা সত্যিকার উপযুক্ত তারা যেন প্রমোশন পায়। ’

সশস্ত্র বাহিনীর পদোন্নতিতে ব্যবহৃত আধুনিক পদ্ধতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,বর্তমানে যেমন সশস্ত্র বাহিনীর অফিসারদের পদোন্নতির জন্য আধুনিক পদ্ধতি অর্থাৎ ট্রেস ট্যাবুলেটেড রেকর্ড অ্যান্ড কমপারেটিভ ইভালুয়েশনের মাধ্যমে কারা প্রমোশন পাওয়ার উপযুক্ত,সেই দক্ষতা কার কতটুকু আছে তার তুলনামূলক মূল্যায়ন করে আপনারা সিদ্ধান্ত নেন।
‘একই সঙ্গে এটুকু দেখতে হবে শুধু খাতা-কলমে বেশি নম্বর পাওয়া না, যারা ফিল্ডে ভালো কাজ করতে পারে, কমান্ড করতে পারে বা নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা আছে কিনা বা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো ক্ষমতা আছে কিনা সেগুলো আপনাদের বিচারে আনতে হবে। ’

সশস্ত্র বাহিনীতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে দেশপ্রেমিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসের বিষয়টি বিবেচনায় রাখার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন,যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী,যারা বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বাসী নিশ্চয়ই তাদের আদর্শ নিয়েই চলতে হবে। দেশপ্রেমিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাসী হবে তারাই যেন দায়িত্ব পায়। যাতে সঠিক পথে বাংলাদেশকে ভবিষ্যতে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

‘সশস্ত্র বাহিনী যারা আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক তাদের সম্মানটা বজায় রেখেই আমাদের সেই চেতনা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে সেটা আপনারা দেখবেন। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে সব অফিসার সামরিক জীবনে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যোগ্য নেতৃত্ব  দিয়ে সফল হয়েছেন পদোন্নতির ক্ষেত্রে তাদের আপনারা অবশ্যই বিবেচনা করবেন। সেটা আমি চাই। আর যে কোনো একজন অফিসার বা কর্মকর্তা তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের পেশাগত মান, যোগ্যতা ও দক্ষতা- এটা বিবেচ্য বিষয় হবে সেটা অগ্রাধিকার আপনারা দেবেন।

দক্ষতার সঙ্গে শৃঙ্খলা-সততা-বিশ্বস্ততার বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু একটা সুশৃঙ্খল বাহিনী, এই সুশৃঙ্খল বাহিনীতে যারা পদোন্নতি পাবে তারা সব সময় একটা শৃঙ্খলা রক্ষা করে চলতে পারে। কারণ শৃঙ্খলাটাই হচ্ছে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য একটা মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করে।

‘কাজেই শৃঙ্খলা সম্পর্কে যারা যথেষ্ট সচেতন, অনুগত, তারা যেমন উপরে যারা থাকবে তাদের প্রতি অনুগত থাকবে আবার অধনস্তনদের ব্যাপারে দায়িত্ববান হবে। এই বিষয়টাও দেখতে হবে, তাদের প্রতিও সহানুভূতিশীল ও দায়িত্বসম্পন্ন হতে হবে। ’
শেখ হাসিনা বলেন, সততা, বিশ্বস্ততা ও আনুগত্য যদি না থাকে তাহলে কখনো ভালো লিডার হতে পারে না, ভালো দক্ষতার পরিচয় দিতে পারে না। কাজেই সেটা অত্যন্ত জরুরি। সেদিকে আপনারা বিশেষ দৃষ্টি দেবেন যারা সৎ, ভালো গুণাবলীসম্পন্ন তাদের।

‘আপনারা বোর্ডে বসে আপনাদের উপযুক্ত যারা তাদের নিয়ে আসবেন। যাতে আগামী দিনে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী আরও সুদক্ষ হয়। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয় এবং আমরা যেন সব সময় গর্ববোধ করতে পারি আমাদের সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে সেভাবে গড়ে তুলবেন সেটাই আমরা চাই। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব দিকে নজর রেখে আমরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে ঢেলে সাজিয়েছি এবং সেই ধরনের ব্যবস্থাও আমরা নিচ্ছি। বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছি যাতে সব ধরনের ট্রেনিংটা পায়।

‘আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন একটা সশস্ত্র বাহিনী আমরা গড়ে তুলতে চাই। আর সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আর জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা এই দেশটাকে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আর সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা আমাদের নীতিমালাও নিয়েছি। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032949447631836