স্কুলছাত্রকে খুনের পর মুক্তিপণ চায় ঘাতক বন্ধু

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি |

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে অপহরণের পর সজিব হোসেন (১৭) নামের এক স্কুলছাত্র খুন হয়েছে। গত ২৯শে সেপ্টেম্বর পার্শ্ববর্তী মানিকগঞ্জ জেলার লাউহাটি নদীতে ভেসে উঠে তার লাশ। আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের সহযোগিতায় সেই লাশ অজ্ঞাত হিসেবে দাফনও করে মানিকগঞ্জ থানা পুলিশ। যদিও তখনো সজিবের পরিবার জানত না নদীতে ভেসে ওঠা সেই লাশটি তাদের একমাত্র সন্তান সজিবের। তবে, অপহরণ নয় ২ বছর আগের মারের প্রতিশোধ নিতেই ঘাতক এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে আদালতে দেয়া ঘাতকের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে। নিহত স্কুলছাত্র সজিব উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের পানিশাইল গ্রামের জীবন মিয়ার একমাত্র ছেলে বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে ৫ জন। তারা হলো- উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের ভুষুন্ডি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে জুয়েল (২৪), মৃত হাজী মিয়ার ছেলে মমতাজ (৪০) সায়েদ আলীর ছেলে সাজ্জাদ (২২), সোবহান মিয়ার ছেলে শামীম (২২) ও উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের সোনা মিয়ার ছেলে আল-আমিন (২৫)। হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে আদালতে ইতিমধ্যে জবানবন্দিও দিয়েছে গ্রেফতার আল-আমিন।

মামলা ও নিহত স্কুলছাত্র সজিবের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২৫শে সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হয় সজিব। এরপর ২৭শে সেপ্টেম্বর একটি সাধারণ ডায়েরি করেন নিহত সজিবের বাবা। ঘটনাচক্রে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি অপহরণ বলে প্রতীয়মান হলে তার ৪ বন্ধুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অপরদিকে ২৭শে সেপ্টেম্বর থেকে কেউ একজন সজিবের মোবাইল নাম্বারটি ব্যবহার করে তার বাবার কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। একপর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেফতার হয় মুক্তিপণ দাবি কারি ঘাতক আল-আমিন। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে লাশ উদ্ধারে নামে পুলিশ। ঘটনাক্রমে জানা যায়, অজ্ঞাত হিসেবে মানিকগঞ্জ থানা পুলিশ যে লাশটি দাফন করেছে সেই লাশটিই সজিবের।

১১ই অক্টোবর রাতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মো. মোরাদুজ্জামান জানান, আদালতে আল-আমিন এই মর্মে স্বীকারোক্তি দেয় যে, প্রায় দুই বছর আগে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিহত সজিব ও আরও কয়েকজন তাকে মারপিট করে। সেই মারের প্রতিশোধ নিতে সে ধীরে ধীরে সজিবের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে আল-আমিন। তার প্রেক্ষিতে বেড়াতে গিয়ে প্রথমে জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। পরে সজিব মাথা ব্যথার কথা বললে ঝাড়া দেয়ার নাম করে সজিবের হাত-পা বেঁধে নদীতে চুবিয়ে চুবিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় সজিবকে খুন করে আল-আমিন। এরপর লাশ নদীর তীরে মাটি চাপা দেয়া হয়।

নিহত সজিবের বাবা জীবন মিয়া দাবি করেন, তার ছেলে হত্যায় শুধু আল-আমিন নয় গ্রেফতার বাকিরাও জড়িত। ঘটনার দিন সবাই একসঙ্গেই ছিল। একমাত্র ছেলে হত্যাকারীদের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন তিনি।

মির্জাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোশরাফ হোসেন জানান, স্কুলছাত্র সজিব হত্যার ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ও আল-আমিন নামের এক আসামি হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। খুব দ্রুতই এ মামলার চার্জশিট দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027139186859131