করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান বিধিনিষেধ ঈদের ছুটির সময়েও থাকতে পারে। চলমান ১৪ দিনের বিধিনিষেধের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে চলাচলসহ কিছু ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ অবশ্যই থাকবে। আর কোরবানির হাট চলতে দেয়া হলেও লোকজনের আসা–যাওয়ার বিষয়টি হবে খুবই নিয়ন্ত্রিত।
সোমবার (৪ জুলাই) করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে আদেশ জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী ১৪ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে এ বিধিনিষেধ।
এখন মানুষের প্রশ্ন, আসন্ন ঈদের ছুটিতেও এ বিধিনিষেধ থাকবে কি না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ঈদের আগেও চলমান বিধিনিষেধ থাকবে কি না, সেটা পরিস্থিতি বলে দেবে। চলমান ১৪ দিনের বিধিনিষেধ পর্যবেক্ষণ করে দেখা হবে। তবে কিছু বিধিনিষেধ অবশ্যই থাকবে। কারণ, গত ঈদের সময় বাড়ি যাওয়ার কারণেই সংক্রমণ বেড়েছিল। এবার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হতে পারে যে যেখানে আছেন, সেখানে যেন ঈদ করেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এবার ডিজিটাল কোরবানির হাটের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে। মানুষ যাতে সেখানে নির্ঝঞ্ঝাটভাবে কেনাকাটা করতে পারে, সে ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। দাম ও ওজনের সমন্বয় থাকবে। আর যদি সশরীর হাট করতে হয়, তাহলে সেগুলো খুবই নিয়ন্ত্রিত হবে। প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ আলাদা থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে হবে। নির্দিষ্টসংখ্যক মানুষের বাইরে কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। সবাইকে সংযতভাবে ও সুপরিকল্পিতভাবে কোরবানির হাট করতে হবে।
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে সরকার এ বছর প্রথমে ৫ এপ্রিল থেকে ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ দিয়ে আসছে। দেশব্যাপী বিধিনিষেধের পাশাপাশি এবার স্থানীয় প্রশাসনও বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ বিধিনিষেধ জারি করে। কিন্তু তারপরও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সারা দেশে কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া হয়। প্রথমে সাত দিনের বিধিনিষেধ দেওয়া হলেও তা আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর পরামর্শ দেয় করোনা-সংক্রান্ত কারিগরি পরামর্শক কমিটি। সে অনুযায়ী তা বাড়ানো হয়।
চলমান বিধিনিষেধে সব সরকারি-বেসরকারি অফিস, শপিং মল, দোকানপাট এবং গণপরিবহন ছাড়াও যন্ত্রচালিত যানবাহন (জরুরি কাজে নিয়োজিত ছাড়া) চলাচল বন্ধ রয়েছে। আরও বিভিন্ন কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এবার বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য টহলে নেমেছে সেনাবাহিনী।
তবে শিল্পকারখানাগুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবা, স্বাস্থ্যসেবা, করোনার টিকাদান, রাজস্ব আদায় কার্যাবলি, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন, ইন্টারনেট, গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তাব্যবস্থা, ডাকসেবা, ব্যাংক, ফার্মেসি, ফার্মাসিউটিক্যালসহ অন্যান্য জরুরি বা অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র দেখিয়ে যাতায়াত করতে পারছে। বিধিনিষেধের সময় সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং সেবা চলছে।