‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শতবর্ষে’ ২ খণ্ডে প্রকাশ হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

শতবর্ষ পূর্ণ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১ জুলাই উপমহাদেশের অন্যতম সেরা এই বিদ্যাপীঠ তার পথচলার গৌরবময় অধ্যায়ে পৌঁছেছে। করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবের কারণে এ উপলক্ষ্যে তেমন কোনো আয়োজন ছিল না। ১ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদ্যাপনের আয়োজনকে সামনে রেখে প্রকাশ হতে যাচ্ছে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শতবর্ষে’ শিরোনামে বিশেষ প্রকাশনা। বৃহৎ কলেবরের এই প্রকাশনাটির দুই খণ্ড সেদিন তুলে দেওয়া হবে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের হাতে। যদিও অনুষ্ঠানের অনেক কিছুই এখনো নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপর। তবুও প্রকাশনার কাজ এগিয়ে চলছে গুরুত্বসহকারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টির উদ্দেশ্য, প্রেক্ষাপট, হলগুলোর প্রজন্ম তৈরিতে পদক্ষেপ, ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সব গণ-আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগান্তকারী ভূমিকা থেকে শুরু করে সামগ্রিক বিষয় উঠে আসবে। আলোকচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ বছরের ইতিহাস। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঐতিহাসিক স্থাপনা এবং এগুলোর পটভূমির আলোকপাত থাকবে।

ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীকে সভাপতি করে এই প্রকাশনার জন্য ইতোমধ্যে একটি সম্পাদনা পরিষদ গঠন করা হয়েছে। এতে সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ড. শরীফ উদ্দিন আহমেদ। সম্পাদনা পরিষদে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান, জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান ও অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম।

ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এই প্রকাশনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একশ বছরের ইতিহাস উঠে আসবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পটভূমি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো, আবাসিক ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা কার্যক্রম ও গবেষণা, অবকাঠামো উন্নয়ন, অর্থায়ন ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা, শিক্ষার্থীদের সাংগঠনিক ও সাংস্কৃতিক কর্মধারা, সামাজিক ও ক্রীড়া কার‌্যাবলি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি : ১৯২১ থেকে ১৯৭১ সাল, মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, গণতন্ত্রের সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, স্মৃতিকথা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক স্থাপনাসহ সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে।

তিনি জানান, যারা এই প্রকাশনায় লিখছেন তাদের তালিকাটি দীর্ঘ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে নানাভাবে জড়িত অনেকেই লিখছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র দেশের নানা অঙ্গনের বিশিষ্টজনের পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগের প্রধান ও শিক্ষকরাও লিখছেন।

জানা যায়, দুইটি খণ্ডে প্রকাশিতব্য এই প্রকাশনাগুলোর প্রতিটি হবে চারশ পৃষ্ঠার। বিভিন্ন লেখা ও দলিলপত্রের পাশাপাশি এতে সন্নিবেশিত হবে অনেক পুরোনো ছবি। ১৯২১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত নানা সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ নানা সময়ের আলোকচিত্র থাকবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আইনগুলো আছে, সেগুলোও হুবহু তুলে দেওয়া হবে যাতে পাঠক বুঝতে পারেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে পরিচালিত হয়।

অধ্যাপক ড. শরীফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এই প্রকাশনার তিনটি মূল ভিত্তি রয়েছে। প্রথমত, ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে কীভাবে এগিয়েছে। ৩টি অনুষদ ও ১২টি বিভাগ থেকে কীভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মহিরুহ রূপ নিল। বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগ কেন সৃষ্টি হলো, কী আমরা চেয়েছিলাম। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প, ব্যাংক গড়ে উঠেছে, যার মূল মানবসম্পদ এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। দ্বিতীয়ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান লক্ষ্য ছিল এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করা, যেখানে ছাত্রছাত্রীরা তাদের হলে বসবাস করে একটা নতুন জীবনের সঙ্গে পরিচিত হবে। প্রথমদিকে হলও একটা বড় ধরনের শিক্ষা প্রদান করত। টিউটোরিয়াল ক্লাস হতো, নানা রকম পরীক্ষা হতো। হল এখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার একটি বড় অংশ। এখানে বিতর্ক হয়, খেলাধুলা হয়, নানা ধরনের আলোচনা হয়, অনেক জ্ঞানী-গুণী আসেন।

তৃতীয়ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের রাজনীতি ও সংস্কৃতিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে। বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ও স্বাধীনতার সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বেশি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। নারীর অগ্রগতি ও ক্ষমতায়নেও সব সময় এগিয়ে ছিল। এসব বিষয় প্রতিফলিত হবে এই প্রকাশনায়। প্রকাশনার শিরোনাম ‘শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ বা ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শতবর্ষে’ এর যে কোনো একটি হবে। জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদের বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে এই প্রকাশনার তহবিল গঠিত হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030779838562012