পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণ, জেলা স্কুলের ভর্তি, এমপিওর আবেদন যাচাইসহ শিক্ষা প্রশাসনের নানাবিধ দায়িত্ব পালন করে আসছেন জেলা প্রশাসকরা। ‘শিক্ষার মানোন্নয়ন ও স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত’ করতে আরো কিছু ক্ষমতা চান তারা। আজ মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে তিনদিনের ডিসি সম্মেলন।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ‘নিয়োগ পুল’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন একজন ডিসি। বলা হয়েছে, বেসরকারি কলেজে অধ্যক্ষ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি রোধ করতে পুল গঠন সহায়ক হবে।
এছাড়া সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সিন্ডেকেট/পরিচালনা কমিটিতে ডিসিকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে উচ্চশিক্ষার সার্বিক সমন্বয়ের জন্য এটা প্রয়োজন বলে মনে করেন একজন ডিসি। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময় আন্দোলন বা ধর্মঘটে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ডিসি সহায়তা দিতে পারবে মর্মে যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে প্রস্তাবে।
এছাড়া নদীভাঙন এলাকায় ঝরে পড়া রোধে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বিশেষ স্কিম ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছেন শরীয়তপুরের ডিসি।
জেলা প্রশাসক সম্মেলনের জন্য বিভিন্ন জেলার ডিসির মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো প্রস্তাবপত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় এ সম্মেলন ভার্চুয়াল মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন। ডিসিরা রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে উপস্থিত থেকে সম্মেলনে অংশ নেবেন।
এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কমিটি গঠন করার কথা বলেছেন চট্টগ্রামের ডিসি। উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষা কমিটি নামে একটি কমিটি রয়েছে। তারা প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে কাজ করে। মাধ্যমিকে এ ধরনের কমিটি না থাকায় জবাবদিহি নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না বলে চট্টগ্রামের ডিসি মনে করেন।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে দু’বছর পর আজ মঙ্গলবার শুরু হতে যাচ্ছে ডিসি সম্মেলন। কর্মসূচি অনুযায়ী এবার সম্মেলনে ২১টি কার্য অধিবেশনসহ মোট ২৫টি অধিবেশন থাকবে। এর মধ্যে প্রথম দিন ৭, দ্বিতীয় দিন ৮ এবং তৃতীয় দিন ১০টি অধিবেশন থাকবে। তবে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর সঙ্গে অধিবেশনগুলো ভার্চুয়ালি হবে।
দ্বিতীয় দিন বিকেল সোয়া ৪টায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে স্পিকার শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন। সন্ধ্যা ৬টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন প্রধান বিচারপতি।
সরকারের নীতিনির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য সাধারণত প্রতি বছর জুলাই মাসে ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সাধারণত প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে ডিসি সম্মেলন উদ্বোধন করেন। কার্য অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব, সচিব, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকরা উপস্থিত থাকেন।