পটুয়াখালীর বাউফলের বড়ডালিমা দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ইউনিক আইডির নামে নেওয়া টাকা ফেরত দিচ্ছেন শিক্ষকরা। দৈনিক আমাদের বার্তা ও দৈনিক শিক্ষাডটকমে ‘ইউনিক আইডির নামে টাকা নিচ্ছেন শিক্ষকরা’ শিরোনামে গত ১১ সেপ্টেম্বর রিপোর্ট প্রকাশের পর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের বিরুপ সমালোচনার মুখে পড়ে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। নড়েচড়ে বসে শিক্ষা প্রশাসন।
জানা গেছে, এস্টাবলিশমেন্ট অব ইন্টিগ্রেটেড ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইইআইএমএস) প্রকল্পের সিটিজেন কোর ডেটা স্ট্রাকচারে (সিসিডিএস) শিক্ষার্থীর তথ্য পূরণ ও অনলাইনে ডেটা এন্ট্রির নামে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর প্রত্যেকের কাছ থেকে ২২০ টাকা হারে টাকা আদায়ের অভিযোগ ওঠে ওই মাদরাসার শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থী প্রোফাইল ও ডেটাবেজ প্রণয়নে মাদরাসার কয়েকজন শিক্ষক মিলে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে তথ্য ফরমের ফটোকপি, রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, অনলাইনে এন্ট্রিসহ অন্যান্য খবরচ হিসেবে মোট ২২০ টাকা হারে আদায় করেন। তবে, দৈনিক শিক্ষাডটকম ও দৈনিক আমাদের বার্তায় রিপোর্ট প্রকাশের পর ওই টাকা ফেরত দিতে শুরু করেছেন শিক্ষকরা।
নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক রিকশাচালক আবুল বশার হাওলাদার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, দীর্ঘ বন্ধের পর মাদরাসা খোলার প্রথম দিন রোবাবার তার ছেলের কাছ থেকে ইউনিক আইডির নামে নেওয়া ২২০টাকাই ফেরত দিয়েছেন শিক্ষকরা। উপস্থিত আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীর টাকাও ফেরত দেওয়া হয়। পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশের কারণে টাকা ফেরত পেয়েছি। মাদরাসার অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিম্নবিত্ত পরিবারের সদস্য। সব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা পুরো টাকা ফেরত দিলে এই করোনাকোলে অভিভাবকদের উপকার হবে।
এ ব্যাপারে মাদরাসার সুপার আব্দুস সালামের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে, শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আদায়কৃত টাকা ফেরত দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মাদরাসার একজন শিক্ষক।
উল্লেখ, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস গত ৩১ আগস্ট থেকে ৬ দিন ব্যাপি স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের ইউনিক আইডি প্রশিক্ষক কোর্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থী প্রোফাইল ও ডেটাবেজ প্রণয়নে শিক্ষার্থী তথ্যফরম (হার্ডকপি) পূরণে মোট ১৪২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ কিছু সংখ্যক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়। এস্টাবলিশমেন্ট অব ইন্টিগ্রেটেড ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইইআইএমএস) প্রকল্পের আওতায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের আয়োজনে পৌর সদরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ডিজিটাল শিক্ষা ভবনে চলে এই প্রশিক্ষণ। এর কয়েকদিন যেতে না যেতেই সরকার কর্তৃক প্রণীত সিটিজেন কোর ডেটা স্ট্রাকচার (সিসিডিএস) অনুসরণে শিক্ষার্থীর মৌলিক ও অধ্যায়ন সম্পর্কিত তথ্য কাগজে কলমে পূরণ ও পরবর্তিতে অনলাইনে ডেটা এন্ট্রির নামে বড়ডালিমা দাখিল মাদরাসার বিরুদ্ধে টাকা আদায়ের অভিযোগে ওঠে।