এমপিওভুক্ত হাইস্কুলে আর্থিক অনিয়ম

অগ্নি কুমার দাস |

শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির কারখানা। আর এজন্য শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ থাকা খুবই জরুরি। শিক্ষালয়ের শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক এবং সব কর্মচারী হওয়া চাই সৎ, যোগ্য ও আদর্শবান। তবেই একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হয়ে উঠবে আদর্শ প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কিছু লোভী, স্বার্থপর ও দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক আছেন, যারা নানা কৌশলে ও শক্তি প্রয়োগ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অর্থ অনৈতিক ও অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করেন।

তারা শিক্ষকদের সঙ্গে এমন আচরণ করে অধিকাংশ শিক্ষক চাকরি হারানোর ভয়ে তাদের অবিচারের প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। এক-দুইজন যারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করে তারা দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকদের রোষানলে পড়ে। শুরু হয় তাদের ওপর টর্চার, মানসিক যন্ত্রণা দান। তাতেও দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকরা ক্ষান্ত হন না। এক সময়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে নিরপরাধ, ভালো, প্রতিবাদী শিক্ষকদের ওপর নানারকম মিথ্যা অপবাদ উঠিয়ে তাদেরকে চাকরিচ্যুত করা হয়। প্রত্যন্ত এলাকায় স্কুল ম্যানেজিং কমিটিতে অনেক ক্ষেত্রে যোগ্য লোকের অভাব থাকে। সেখানে দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকদের রাস্তা হয় আরো মসৃণ। স্কুল ম্যানেজিং কমিটিতে এমন অনেক সদস্য আছে এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সভাপতিও জানেন না তার প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক বাজেট কতো? অথচ বিধি অনুসারে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি বাজেট অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ। 

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যেসব উপ-কমিটি প্রতিষ্ঠানে থাকার কথা অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে সেগুলো থাকে না। থাকলেও শুধু কাগজে-কলমে। বাস্তবে সেসব প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক একাই সব। তিনি একাই সব কেনাকাটা করে থাকেন। থাকে না কোনো ক্রয় উপ-কমিটি। থাকে না কোনো অডিট উপ-কমিটি, থাকে না উন্নয়ন উপ-কমিটি, মূল্যায়ন উপকমিটি (পরীক্ষা কমিটি), থাকে না কোনো বেতন ও ফি আদায় উপ-কমিটি। সৃষ্টি হয় শিক্ষকদের মধ্যে বিভাজন ও দ্বন্দ্ব। এতে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিক্ষার্থীরা, ক্ষতিগ্রস্ত হয় জাতি। তাই শিক্ষার সঠিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য প্রত্যন্ত এলাকার এমপিওভুক্ত হাইস্কুলে স্কুল ম্যানেজিং কমিটিতে সকল সদস্য এইচএসসি পাস থাকা প্রয়োজন বলে মনে করি। সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম স্নাতক হওয়া চাই। উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা তার মনোনীত কোনো প্রথম শ্রেণির বিসিএস কর্মকর্তার মাধ্যমে (যেমন-সহকারী কমিশনার (ভূমি), কৃষি কর্মকর্তা, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এবং সমাজসেবা কর্মকর্তা) মাসে অন্তত একবার স্কুল পরিদর্শন করা জরুরি।

লেখক: সহকারী প্রধান শিক্ষক, লাখাই, হবিগঞ্জ 

(মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন)

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল - dainik shiksha জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় - dainik shiksha শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025370121002197