ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। সোমবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ ছাত্রীর মা বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় আশুগঞ্জের তারুয়া জামিয়া ছোবহানীয়া মহিলা মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. অলিউল্লা ছোবহানী (৩৫) এবং তার পিতাসহ ৫ জনকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. অলিউল্লা ছোবহানী দু-মাস পূর্বে তারুয়া গ্রামে জামিয়া ছোবহানীয়া মহিলা মাদরাসাটি চালু করেন। মহিলা মাদরাসা হওয়া সত্ত্বেও এরসঙ্গে নিজে থাকার জন্যে একটি ঘর নির্মাণ করেন। ওই ছাত্রীকে মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পরই ওই মাদরাসায় ভর্তি করা হয়। এর কয়েকদিন পরই ওই ছাত্রীর ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে বিবাহিত এবং কয়েক সন্তানের জনক অলিউল্লাহ ছোবহানীর। নানা প্রলোভন দেখিয়ে কু-প্রস্তাব দিতে থাকে সে ছাত্রীকে।
ভুল বুঝিয়ে মাদরাসা লাগোয়া থাকার ঘরে ডেকে নিয়ে হাত-পা টিপানো এবং শরীর ম্যাসাজ করতে বাধ্য করে ছাত্রীটিকে। তাকে এ ব্যাপারে মুখ বন্ধ রাখতে ভয়ভীতি দেখায়। গত ৯ আগস্ট অধ্যক্ষ মাদরাসা লাগোয়া থাকার ঘরে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ছাত্রীটিকে। এ ঘটনার পর ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করবে বলে জানালে অলিউল্লা ছোবহানী তাকে বিয়ের আশ্বাস দেয়। কয়েকটি ডায়েরির পাতায় বিয়ের কথাবার্তা লিখে তাতে ছাত্রীর স্বাক্ষর নেয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাজীপাড়ার মো. আশরাফুর রহমান, সদর উপজেলার হাবলাউচ্চ গ্রামের মো. কেফায়েত উল্লাহ ও আশুগঞ্জ যাত্রাপুর গ্রামের মো. আবুল বাশার আইয়ুবীকে ওই বিয়ের উকিল ও সাক্ষী বানিয়ে ডায়েরির পাতায় তাদের স্বাক্ষর নিয়ে ছাত্রীকে বিয়ে হয়েছে বলে আশ্বস্থ করা হয়। মামলায় এই ৩ উকিল-সাক্ষী এবং ঘটনা ধামা চাপা দিতে তৎপর অলিউল্লা ছোবহানীর পিতা আবদুল ছোবহানকে আসামি করা হয়। অলিউল্লা ছোবহানীর বিরুদ্ধে বালাৎকারের অনেক অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় তার কাছ থেকে সালিস করে জরিমানাও আদায় করা হয়। মাদরাসার নামে টাকা উত্তোলন করে নিজের সহায়-সম্পদ গড়ার কাজে ব্যবহার করা ছাড়াও নানা অপকর্ম করে বেড়ানোর অভিযোগ করেন এলাকার মানুষ তার বিরুদ্ধে।