নতুন গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর কাছে প্রত্যাশা

মো. সিদ্দিকুর রহমান |

নতুন মন্ত্রিসভার মাঝে লুকিয়ে আছে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন। পারিবারিক জীবনে আমরা অনেক স্বপ্ন নিয়ে উত্তরসূরীদের লেখাপড়া তথা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে শ্রম দিয়ে থাকি। বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রে সফলতার মুখ দেখলেও কিছু ক্ষেত্রে বির্তকিত অবস্থাও পরিলক্ষিত হয়। প্রধানমন্ত্রীও নানা স্বপ্ন নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে কতিপয় পরীক্ষিত প্রবীণসহ এক ঝাঁক নতুন মুখের সমন্বয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। আমাদের প্রত্যাশা, এ মন্ত্রিসভা দেশ ও জনগণের সেবা করবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অনেকটা উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়েছেন। তিনি পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী ট্যানেল, প্রাক প্রথমিক, ইবতেদায়ি হতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণসহ অসংখ্য উন্নয়ন কাজ করে দেশ-বিদেশে খ্যাতি অর্জন করেছেন। সারা দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করেছেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় দেশের সর্ববৃহৎ মন্ত্রণালয়। সারা দেশে ১৫ লক্ষ সরকারি কর্মচারী রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪ লক্ষ ৭৭ হাজার কর্মচারী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অধীনে কর্মরত। স্বাধীনতার পর সর্বপ্রথম অধ্যাপক ইউসুফ আলী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর আর্দশে অনুপ্রাণিত হয়ে স্বাধীনতার ঊষালগ্নে শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি করেছিলেন।

পরবর্তীকালে অধ্যাপক ইউনুস শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে বিএনপি সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি নামে সংগঠন গড়ে তোলেন। তার প্রধান কাজ ছিলো বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ঐক্য বিনষ্ট করা। প্রাথমিক শিক্ষা তথা শিক্ষকদের স্বার্থে তার কোনো দৃশ্যমান ভূমিকা ছিলো না। অবশেষে বর্তমান বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলেন একজন শিক্ষক। তিনি হলেন বেগম রুমানা আলী। রাজধানী ঢাকার নিউ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষক তিনি। পেশায় শিক্ষক হলেও তিনি একজন রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। সাবেক মন্ত্রী ও গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট রহমত আলীর কন্যা রুমানা আলী। অ্যাডভোকেট মো. রহমত আলী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যও ছিলেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বচনে প্রথমবার অংশগ্রহণ করেই বাজিমাত করেছেন, বেগম রুমানা আলী। গাজীপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। যদিও এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদে ১৪ নম্বর সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে ছিলেন। এবার সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়ে প্রথম সংসদে যাচ্ছেন। 

আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নাগরিক আজকের শিশু। তাদের মন কাদামাটির মতো নরম। সঠিকভাবে পরিচর্যা করার সুযোগ সৃষ্টি হলে, শিশু দক্ষ ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে। এমন মহান দায়িত্বই পেয়েছেন শিক্ষক, নবীন রাজনীতিবিদ রুমানা আলী। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারে নির্মম শাহাদাৎ বরণের পর এ দেশের শিশুশিক্ষা উল্টো পথে চলছিলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনর আমলে উন্নতি হলেও শিশুশিক্ষা আজও চরম বৈষম্যের শিকার। বঙ্গবন্ধু প্রাথামিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ প্রধানমন্ত্রী সমীপে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষানুরাগী মন্ত্রী নিয়োগের আবেদন নিবেদন জানিয়ে আসছিলো। প্রধানমন্ত্রী প্রাথমিক শিক্ষার স্বপ্ন পূরণে শিক্ষক রুমানা আলীকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন। আমাদের শিশুশিক্ষাসহ দেশ ও জাতির আলোকবর্তিতা আমাদের কাছাকাছি এসেছেন। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে রুমানা আলীর কাছে দেশ ও জাতি স্বপ্ন পূরণে আন্তরিকতা প্রত্যাশা করে।

স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জননেন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শিশুদের শিক্ষার প্রতি তাদের ভালোবাসার প্রকৃষ্ট উদাহরণ স্থাপন করেছেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঊষালগ্নে দেশ ও জনগণের নাজুক অবস্থানের মাঝে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুঃসাহসী প্রদক্ষেপে দেশের প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করেছেন। আজকের দিনের শিশু আগামীর স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে রুমানা আলীর দায়িত্ব গ্রহণের ঊষালগ্নে কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা ও সুপারিশ নিরসনকল্পে উপস্থাপন করছি। এগুলো হলো-

১. প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট দূর করা।

স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে শিক্ষায় ঘাটতি কোনো অবস্থাতেই কাম্য নয়। সে লক্ষ্যে শিক্ষক সংকট শূন্য সহিষ্ণুতায় নামিয়ে আনতে হবে। শিক্ষক সংকট শূন্য সহিষ্ণুতায় নামিয়ে আনার জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্যানেল ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। প্যানেলের নিয়োগ শেষ হবার পূর্বেই প্যানেল প্রস্তুত রাখা। নিয়োগপ্রাপ্তদের সিইনএড বা ডিপইএড প্রশিক্ষণ শেষ করে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করাতে হবে। যাতে প্রশিক্ষণ গ্রহণের সময় বিদ্যালয়ের শিশুশিক্ষা ব্যাহত না হয়। নিয়োগ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জন্য জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। যাতে শিক্ষক সংকটে বিদ্যালয়ে শিশু শিক্ষার বিঘ্ন ঘটে। 

২. মেধাবী, অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল গড়ে তোলার লক্ষ্যে স্বতন্ত্র প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার সার্ভিস গঠন করা। স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রয়োজন সমৃদ্ধ শিশু শিক্ষা। এ জন্য প্রয়োজন মেধাবীদের এ পেশায় আকৃষ্ট করা। এ লক্ষ্যে সহকারী শিক্ষক থেকে শতভাগ পদোন্নতি মাধ্যমে নীতিনির্ধারণী পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে। যাতে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তাদের মেধা, অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

পেশায় দক্ষ জনবল সৃষ্টি করার জন্য পদোন্নতির মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার সার্ভিস প্রয়োজন। মোট সরকারি কর্মচারীদের প্রায় ৩ ভাগের ১ ভাগ জনবল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে কর্মরত। অথচ সকল মন্ত্রণালয় নিজস্ব ক্যাডার সার্ভিস থাকলেও বিশাল এ মন্ত্রণালয়ের স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস নেই। প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের পদকে এন্ট্রি ধরে শতভাগ পদোন্নতি দিয়ে স্বতন্ত্র প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার সার্ভিস গঠন করা প্রয়োজন।

দেশের সকল শিশু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুপুর দুইটার মধ্যে ছুটি দেয়া প্রয়োজন। যাতে শিক্ষার্থী বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া-দাওয়া শেষে খানিকটা বিশ্রাম বা ঘুমিয়ে বিকেলে ফুরফুরে মেজাজে সুস্থ দেহ-মন নিয়ে খেলাধুলার সুযোগ পান। বিদ্যালয়কে জ্ঞান অর্জনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াসে প্রতিটি শ্রেণির কার্যক্রম একঘণ্টা হওয়া বাঞ্ছনীয়। প্রতিটি ক্লাসের পর ৫ মিনিট বিরতি দেয়া উত্তম। দৈনিক চারটি পিরিয়ডের বেশি হওয়া মোটেই কাম্য নয়। 

৪. সরকারি-বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়সহ কলেজের প্রাথমিক শাখা বিলুপ্ত করে জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যলয়ের অস্তিত্ব সংকটের হাত হতে রক্ষা করা ড. কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশন ও তারই আলোকে প্রণয়ন করা ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের জাতীয় শিক্ষানীতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রাথমিক স্তর হবে ১ম-৮ম শ্রেণি পর্যন্ত। যার ফলে প্রতিটি উপজেলায় ২/১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করার পরে দীর্ঘ সময় থেকে এ কার্যক্রম স্থবির হয়ে রয়েছে। বরং প্রতিটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্লে নার্সারি থেকে প্রাথমিক শাখা সরকারি তত্ত্বাবধানে চলছে। অথচ উচ্চ বিদ্যালয় ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শিশুশিক্ষায় ট্রেনিংয়ের মোটেই ছোঁয়া নেই। অপরদিকে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে উচ্চ শিক্ষিত, মেধাবী; প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক। যার ফলে বঙ্গবন্ধু ও তারই সুযোগ্যকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতীয়করণকৃত প্রাধমিক বিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী সংকটে অস্তিত্ব বিলীন হচ্ছে। অপর দিকে শিক্ষার্থীরা শিশুশিক্ষায় প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকদের কাছ থেকে যথাযথ শিশু মনোবিজ্ঞান সম্মত শিক্ষা পাচ্ছে না। জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু হলে, তৃণমূলের অসচ্ছল, শ্রমিক, অসহায় মানুষসহ সর্বস্তরের জনগণের অবৈতনিক শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করা। একই সঙ্গে উচ্চ ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাথমিক শাখা বিলুপ্ত করা।

৫. জাতীয় ও বিশেষ দিবস স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালনে বিদ্যালয় বাৎসরিক ছুটি থেকে বাদ দেয়া। বাঙালি সংগ্রামী জাতি। আমাদের মতো সংগ্রামী ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি আর কোনো জাতির নেই। অথচ আজকের প্রজন্ম স্বাধীনতার ৫ দশকের পরে ও বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের সরকার দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার পরেও আজও তারা দেশ ও জাতির  সংগ্রামী ইতিহাস, ঐতিহ্য সংস্কৃতি সম্পর্কে ভালো ধারণা লাভ করতে সক্ষম হয়নি। এর অন্যতম কারণ-বাৎসরিক ছুটির তালিকায় বিদ্যালয় ছুটি দেখিয়ে স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে ডেকে এনে দায়সারাভাবে দিবসগুলো পালন করে থাকে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা অফিস কক্ষে পরিদর্শনের অপেক্ষায় সময় কাটায়। অভিভাবক বিদ্যালয় বন্ধ জেনে শিক্ষার্থীদের দিবস পালনে বিদ্যালয়ে পাঠান না। এতে শিক্ষার্থীরা দেশ ও জাতির সংগ্রামী ঐতিহ্য সংস্কৃতি জানার অধিকার থেকে বঞ্চিত হন।

বার্ষিক ছুটির তালিকা থেকে জাতীয় ও বিশেষ দিবসে ছুটি বাদ দিয়ে শিক্ষকদের শ্রান্তি বিনোদন ভাতা বিধিসম্মতভাবে ৩ বছর পর পর পাওয়ার লক্ষ্যে গ্রীষ্মের ছুটি বা যেকোনো ছুটি একনাগাড়ে ১৫ দিন করা হোক। জাতীয় ও বিশেষ দিবস সম্পর্কে সকল শিক্ষার্থীদের জানানো বিষয়ে শিক্ষকদের জবাদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন। 

৬. বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছেন। অথচ ২য় ধাপের ৪৪টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যাচাই-বাছাই করে জাতীয়করণের যোগ্য বিবেচিত হওয়া সত্বেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আজও বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ হয়নি। ২য় ধাপের ৪৪টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ জাতীয়করণকৃত ২৬ হাজার ১৯৩টি বিদ্যালয়। অথচ ৪৪টি বিদ্যালয় জাতীয়করণ না করেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টরা জাতীয়করণ করা হয়েছে বলে তথ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এতে একদিকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি। অপরদিকে, বেতন ভাতার অভাবে শিক্ষকেরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন উপবৃত্তি, খাবারসহ সরকারের নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে। অবিলম্বে দ্বিতীয় ধাপের জাতীয়করণযোগ্য ৪৪টি বেসরকারি প্রাথমিক জাতীয়করণ করে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। 

৭. প্রাথমিকের দপ্তরিদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা। প্রাথমিকের দপ্তরিরা বিদ্যালয়ে অতি জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকেন। বিদ্যালয় ও শিক্ষকদের পদমর্যাদা সরকারি। অথচ বিদ্যালয়ের সার্বিক দেখভালের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মচারী দপ্তরিরা আউটসোর্সিংয়ের এর আওতায়। তাদের অনেকটা সার্বক্ষণিক ডিউটি করতে হয়। এ প্রেক্ষাপটে কাজের গুরুত্ব বিবেচনা করে, সুস্থ ও সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকার প্রয়াসে তাদের চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তর করা প্রয়োজন। তা ছাড়া সরকারি বিধি মোতাবেক কর্মঘণ্টা নির্ধারণ করা জরুরি। তাদের পদ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরসহ অমানবিক ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। 

৮. বর্তমানে দেশে পঞ্চাশ হাজারের অধিক কিন্ডারগার্টেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। শিশু শিক্ষায় বিশাল কর্মকাণ্ডের জন্য তাদের সরকারিভাবে স্বীকৃতি আবশ্যক। এ লক্ষ্যে বিদ্যালয়গুলোকে সহজ শর্তে রেজিস্ট্রেশন প্রয়োজন। মনোবিজ্ঞানের জ্ঞান ছাড়া শিশুর শারীরিক, মানসিক বিকাশসহ পরিপূর্ণ দক্ষতা অর্জন সম্ভব নয়। কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক তারাও এ দেশের নাগরিক। এদের প্রশিক্ষণবিহীন অবহেলায় রেখে আগামী প্রজন্মের স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন ব্যাহত হবে। এ বিশাল জনবলকে রেজিস্ট্রেশন ও প্রশিক্ষণের আওতায় আনা আবশ্যক। অবিলম্বে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকদের সহজ শর্তে রেজিস্ট্রেশন ও প্রশিক্ষণে আওতায় আনা প্রয়োজন।

লেখক: সভাপতি, বঙ্গবন্ধু প্রথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ধর্ম নিয়ে কটূক্তি: জবি ছাত্রী তিথির পাঁচ বছরের কারাদণ্ড - dainik shiksha ধর্ম নিয়ে কটূক্তি: জবি ছাত্রী তিথির পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু ২৬ মে - dainik shiksha একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু ২৬ মে ভর্তি পরামর্শ: কলেজ পছন্দ জরুরি - dainik shiksha ভর্তি পরামর্শ: কলেজ পছন্দ জরুরি মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না: হাইকোর্ট - dainik shiksha মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না: হাইকোর্ট শিক্ষা ক্যাডারের নির্বাচনী হাটে এমপিও শিক্ষকের কপাল ফাটে - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারের নির্বাচনী হাটে এমপিও শিক্ষকের কপাল ফাটে অন্ত*র্বাসে লুকানো ডিভাইস, ১০ মিনিটেই শেষ পরীক্ষা - dainik shiksha অন্ত*র্বাসে লুকানো ডিভাইস, ১০ মিনিটেই শেষ পরীক্ষা ১৩ শিক্ষকের ১৪ শিক্ষার্থী, সবাই ফেল - dainik shiksha ১৩ শিক্ষকের ১৪ শিক্ষার্থী, সবাই ফেল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সুখবর - dainik shiksha এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সুখবর please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031759738922119