দেশের নয় সহস্রাধিক এমপিওভুক্ত আলিয়া মাদরাসায় প্রধান, সহকারী প্রধান ও কর্মচারী নিয়োগ চলছে অগোছালো প্রক্রিয়ায়। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি লেভেলের সহকারী শিক্ষক ও প্রভাষক নিয়োগের দায়িত্ব বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কাঁধে থাকলেও প্রধান, সহকারী প্রধান ও কর্মচারী নিয়োগের ক্ষমতা এখনো পরিচালনা পর্ষদের তত্ত্বাবধানে চলা নিয়োগ কমিটির। এমপিওভুক্ত মাদরাসার এসব পদে নিয়োগে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া বা বিধি নেই। এ সুযোগে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ নিজেদের ইচ্ছেমতো প্রক্রিয়ায় মাদরাসায় নিয়োগ কার্যক্রম চালাচ্ছেন। অনৈতিক সুযোগ নিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে সুবিধামতো প্রক্রিয়াও বেছে নেয়া হচ্ছে। ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা থাকছে না। এমপিওভুক্তিসহ মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের নানা কাজে সৃষ্টি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা।
এ পরিস্থিতিতে এমপিওভুক্ত মাদরাসাগুলোর অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, সুপার, সহকারী সুপার এবং কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া সুনির্দিষ্ট করে দিচ্ছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপ সুনির্দিষ্ট করে শিগগিরই নির্দেশিকা জারি হচ্ছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, প্রশাসনিক ও কর্মচারীর প্রতিটি ক্যাটাগরির পদে অভিন্ন নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়ে বিস্তারিতভাবে ওই নির্দেশিকায় উল্লেখ থাকবে। উল্লেখ থাকবে ডিজির প্রতিনিধির দায়িত্ব ও ক্ষমতা। এতে নিয়োগ কমিটিতে কে কে থাকবেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, ডিজির প্রতিনিধির আবেদন-মনোনয়ন, নিয়োগ পরীক্ষা, আলাদা আলাদা পদের জন্য পরীক্ষার প্রশ্নের ধরন-নম্বরসহ নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে মাদরাসাগুলোকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হবে।
কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত তিন মাস এ নির্দেশিকা তৈরির কাজ করছে অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়ে আলাদা আলাদা স্তরের মাদরাসার আলাদা আলাদা ক্যাটাগরির পদের নিয়োগ প্রক্রিয়ার খসড়া করা হয়েছে। গত বুধবার অধিদপ্তরে আয়োজিত কর্মশালায় এসব পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে কর্মকর্তাদের মতামত নেয়া হয়েছে। এরপর নিয়োগ প্রক্রিয়ার খসড়া প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছে অধিদপ্তর। যা শিগগিরই নির্দেশিকা আকারে জারি করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রশাসন শাখার উপপরিচালক মো. জাকির হোসাইন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, কেউ নিয়োগ পরীক্ষা নিচ্ছেন
১০ নম্বরে, কেউ নিচ্ছেন ১০০ নম্বরে। কেউ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর দ্রুত পরীক্ষা নিচ্ছেন, কেউ দীর্ঘদিন পরীক্ষা নিচ্ছেন না। একই ক্যাটাগরির পদে একেক মাদরাসার নিয়োগ কমিটি একেক প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেয়ায় এমপিওভুক্তিসহ অধিদপ্তরের নানা কাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। একেকজন ডিজির প্রতিনিধি একেক প্রক্রিয়ায় দায়িত্ব পালন করছেন। সুনির্দিষ্ট বিধান না থাকায় কিছু বলাও যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে মাদরাসার বিভিন্ন পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সুনির্দিষ্ট করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।তিনি আরো বলেন, গত তিন মাসে বিভিন্ন স্তরের মাদরাসার বিভিন্ন পদের নিয়োগের সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার খসড়া করা হয়েছে। অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মতামত নিয়ে তা মোটামুটিভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। যা শিগগিরই মাদরাসায় নিয়োগের নির্দেশিকা হিসেবে জারি করা হবে।
মাদরাসার প্রশাসনিক ও কর্মচারী পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া কেমন হবে জানতে চাইলে উপপরিচালক বলেন, আলাদা আলাদা স্তরের মাদরাসার আলাদা আলাদা ক্যাটাগরির পদে নিয়োগে অভিন্ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে ওই নির্দেশিকায় বলা হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়া ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা ও নির্দেশনা দেয়া হবে। নিয়োগ কমিটিতে কে কে থাকবেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, ডিজির প্রতিনিধির আবেদন-মনোনয়ন ও দায়িত্ব, পরীক্ষা, আলাদা আলাদা পদের জন্য নিয়োগ পরীক্ষায় কেমন প্রশ্ন হবে, কত নম্বরের পরীক্ষা হবে, নিয়োগের কতোদিনের মধ্যে কোন ধাপের কাজ শেষ করতে হবে সেসব বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানানো হবে। বিভিন্ন পদের নিয়োগ পরীক্ষার জন্য আলাদা আলাদা টেবুলেশন সিট তৈরি করে দেয়ার বিষয়েও ভাবা হচ্ছে। নিয়োগ পরিচালনার বিষয়ে মাদরাসাগুলোর জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকবে ওই নির্দেশিকায়।
এ নির্দেশিকা জারি করার আগে ওই নির্দেশিকার খসড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগে পাঠিয়ে অনুমোদন নিতে হবে না বলে জানা গেছে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।