সরকার চাইলে কোটা কমাতে-বাড়াতে পারবে : হাইকোর্ট

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধাসহ বিদ্যমান কোটা বাতিলসংক্রান্ত ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় প্রকাশিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে রায়ের মূল অংশ প্রকাশ করা হয়।

বিষয়টি জানিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ের মূল অংশটুকু প্রকাশিত হয়েছে, যা হাতে এসেছে। গতকাল আপিল বিভাগ কোটার বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন। আগামী ৭ আগস্ট শুনানির দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। ফলে আপাতত হাইকোর্টের রায় কার্যকর হবে না।’

এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মুখে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত কোটাপদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৪ অক্টোবর পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এই পরিপত্রের বৈধতা নিয়ে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে রিট করেন চাকরিপ্রত্যাশী ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সাতজন সন্তান। চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ৫ জুন নির্দেশনাসহ রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে রায় ঘোষণা করেন।

কোটা পূরণ না হলে মেধাতালিকা থেকে নেয়া যাবে

রায়ে আদালত বলেছে, ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেয়া রায় ও আদেশ, ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের লিভ টু আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের তা বহাল ও সংশোধিত আদেশ এবং ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ জানুয়ারির অফিস আদেশের (মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি–নাতনির কোটা) আলোকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/নাতি–নাতনিদের জন্য কোটা পুনর্বহাল করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেয়া হলো। একই সঙ্গে জেলা, নারী, প্রতিবন্দ্বী ব্যক্তি, উপজাতি–ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য কোটাসহ, যদি অন্যান্য থাকে, কোটা বজায় রাখতে নির্দেশ দেয়া হলো। এ বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব, আদেশ পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে পরিপত্র জারি করতে নির্দেশ দেয়া হলো।

রায়ে হাইকোর্ট বলেছে, প্রয়োজনে উল্লেখিত শ্রেণির ক্ষেত্রে কোটা পরিবর্তন ও হার কমানো বা বাড়ানোর বিষয়ে এই রায় বিবাদীদের জন্য কোনো বাধা তৈরি করবে না। যেকোনো পাবলিক পরীক্ষায় কোটা পূরণ না হলে সাধারণ মেধাতালিকা থেকে শূন্য পদ পূরণ করায় বিবাদীদের স্বাধীনতা রয়েছে।

হাইকোর্টে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। রায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রায়ে সব কোটা বজায় রাখতে বলা হয়েছে। তবে প্রয়োজনে সরকার তা কমাতে বা বাড়াতে পারবে। আপিল বিভাগ স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন। ফলে এ রায় এখনই বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না।

হাইকোর্টের এই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা ৪ জুলাই আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে ওঠে। সেদিন সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ শুনানি মুলতবি করেন। এর মধ্যে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে দুই শিক্ষার্থী গত মঙ্গলবার আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ ও দুই শিক্ষার্থীর আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে গতকাল আপিল বিভাগ কোটার বিষয়ে পক্ষগুলোকে চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন।

আপিল বিভাগের আদেশের পর গতকাল অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছিলেন, ‘আপিল বিভাগ বিষয়স্তুর (সাবজেক্ট ম্যাটার) ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। এ সময়ে হাইকোর্টের রায় কার্যকর থাকবে না। ফলে যেমন ছিল, তেমনই থাকবে।’ তিনি বলেন, এখানে বিষয়বস্তু হচ্ছে, কোটাপদ্ধতি (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত) বাতিলসংক্রান্ত পরিপত্র। বিষয়বস্তুর ওপর স্থিতাবস্থার ফলে কোটা আপাতত কার্যকর থাকছে না।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল - dainik shiksha জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় - dainik shiksha শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037791728973389