সাগরদীঘি কলেজে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি |

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদীঘি কলেজে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০০৫-এর বিজ্ঞপ্তির নিয়োগ দেখিয়ে ২০২০ সালে শিক্ষক এমপিওভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

কর্মরত শিক্ষক আবুল কাশেমের পরিবর্তে অন্যজনের নাম এমপিওভুক্তির জন্য পাঠানোয় তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর চলতি বছরের ১৪ মে অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে গত সোমবার তদন্তে আসে শিক্ষা অধিদপ্তর। কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষক নিয়োগে যে অনিয়ম করেছে, প্রাথমিকভাবে তার সত্যতা পেয়েছেন বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা।

আবুল কাশেমের অভিযোগে জানা যায়, তিনি নিয়োগ পেয়ে ১৬ মার্চ ২০০৫ সালে কলেজে জীববিজ্ঞানের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৪ সালে স্থাপিত কলেজটি এমপিওভুক্ত হয় ২০১৯ সালে। কলেজ এমপিওভুক্ত হওয়ায় পর শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করেন অধ্যক্ষ। সভাপতি ও অধ্যক্ষ মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে জীববিজ্ঞান বিষয়ের নিয়মিত শিক্ষক আবুল কাশেমের পরিবর্তে ২০০৫ সালে নিয়োগ দেখিয়ে এমপিভুক্তি করান মাজহারুল ইসলাম নামের অন্য একজনকে। অথচ স্থানীয়সহ ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, মাজহারুল নামের ওই ব্যক্তিকে তারা কোনোদিন দেখেননি। শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী কেন আপনাকে চেনেন না জানতে চাইলে মাজহারুল ইসলাম বলেন, জীববিজ্ঞানে আমার নিয়োগ ২০০৫ সালে। আর সব জানেন অধ্যক্ষ।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে অন্যান্য বিষয়েও শিক্ষক নিয়োগে নানা অনিয়মের চিত্র। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অধ্যক্ষ ও সভাপতি কলেজে নিয়োগবাণিজ্য করেছেন। বাংলার বিষয়ে প্রভাষক হিসেবে ২০০৫ সালে নিয়েগে পান আরিফ আহম্মেদ। তিনি বলেন, ২০১২ সাল পর্যন্ত আমি ওই কলেজে নিয়মিত ছিলাম, এরপর সখীপুরের নান্দারপুর ফাজিল মাদ্রাসায় নিয়োগ নিয়ে চলে যাই। পদ শূন্য হয়। অথচ ওই পদে ২০০৫ সালে তোফাজ্জল হোসেন নামের একজনকে নিয়োগ দেখিয়ে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। জানা যায়, তোফাজ্জল ২০০৫ সালেই ফুলবাড়িয়া ইসলামিয়া কলেজে নিয়োগ নেন। অর্থাৎ একই ব্যক্তি একই সালে দুই প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ নেন।

এছাড়া ইসলাম শিক্ষা বিষয়ে প্রভাষক আব্দুল মালেক মারা যান ২০১৭ সালে। তার সেই পদে ২০০৫ সালে গোলাম সারোয়ার নামের একজনকে নিয়োগ দেখিয়ে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। অনিয়ম হয়েছে অফিস সহকারী নিয়োগেও।

সাগরদীঘি কলেজের অধ্যক্ষ নাছির উদ্দিন বলেন, শিক্ষক নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি। তাহলে একই বিষয়ে এমপিওভুক্তির জন্য দু'জনের কাগজে স্বাক্ষর করেছেন কেন- জানতে চাইলে তিনি উত্তর দেননি।

কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও সাগরদীঘি ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত সিকদার বলেন, আমার জানামতে শিক্ষক নিয়োগে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়নি।

তদন্ত কর্মকর্তা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ঢাকা অঞ্চলের উপপরিচালক কাজী নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, প্রাথমিকভাবে কাগজপত্র এবং এলাকাবাসীর সাক্ষ্য অনুযায়ী বলা যায়, শিক্ষক নিয়োগে অবশ্যই অনিয়ম হয়েছে। সব কাগজপত্র ভালো করে দেখে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ধর্ম নিয়ে কটূক্তি: জবি ছাত্রী তিথির পাঁচ বছরের কারাদণ্ড - dainik shiksha ধর্ম নিয়ে কটূক্তি: জবি ছাত্রী তিথির পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু ২৬ মে - dainik shiksha একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু ২৬ মে ভর্তি পরামর্শ: কলেজ পছন্দ জরুরি - dainik shiksha ভর্তি পরামর্শ: কলেজ পছন্দ জরুরি মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না: হাইকোর্ট - dainik shiksha মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না: হাইকোর্ট শিক্ষা ক্যাডারের নির্বাচনী হাটে এমপিও শিক্ষকের কপাল ফাটে - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারের নির্বাচনী হাটে এমপিও শিক্ষকের কপাল ফাটে অন্ত*র্বাসে লুকানো ডিভাইস, ১০ মিনিটেই শেষ পরীক্ষা - dainik shiksha অন্ত*র্বাসে লুকানো ডিভাইস, ১০ মিনিটেই শেষ পরীক্ষা ১৩ শিক্ষকের ১৪ শিক্ষার্থী, সবাই ফেল - dainik shiksha ১৩ শিক্ষকের ১৪ শিক্ষার্থী, সবাই ফেল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সুখবর - dainik shiksha এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সুখবর please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0050311088562012